রাজধানীর মগবাজার নয়াটোলা একটি ভবনের পঞ্চমতলার ফ্ল্যাট থেকে বাবা-ছেলের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার সন্ধ্যায় মগবাজার নয়াটোলা র্যাব অফিসের পাশের ওই বাড়ি থেকে লাশ দু’টি উদ্ধার করে হাতিরঝিল থানা পুলিশ।
নিহত দু’জন হলেন- খাইরুল ইসলাম সোহাগ (৫৫) ও তার ছেলে শাহারাত ইসলাম আরিন (১৪)। তাদের বাড়ি লক্ষ্মীপুর রামগঞ্জ উপজেলায় এলাকায়। মগবাজার নয়াটোলা ল্যাব অফিসের পাশের ওই ভবনে পরিবারসহ ভাড়া থাকতেন তারা।
হাতিরঝিল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) আলী আজম বলেন, খবর পাওয়ার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। লাশ উদ্ধারের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় আলামতও সংগ্রহ করা হয়েছে। বাবা-ছেলের মৃত্যুর কারণ তদন্তে বেরিয়ে আসবে।
পুলিশ ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, নয়াটোলার ১৮১/ডি নম্বর ভবনের পঞ্চম তলায় থাকতেন স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে থাকতেন খাইরুল ইসলাম সোহাগ। দুপুর আড়াইটার দিকে সোহাগের স্ত্রী নাজমুন নাহার নুপুর বাজার করে ফেরেন। তবে বাসায় ঢুকতে গিয়ে তিনি দরজা ভেতর থেকে বন্ধ পান। তখন স্বামী ও ছেলেকে অনেক ডেকেও সাড়া পাননি। পরে তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা সেখানে জড়ো হন। একপর্যায়ে ভবনের নিরাপত্তাকর্মী মোহাম্মদ হোসেন গিয়ে পুরনো চাবি দিয়ে দরজার তালা খুলে দেন। এরপর ড্রয়িং রুমে সোহাগকে ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় ঝুলতে দেখা যায়। আর পাশের ঘরে একইভাবে ঝুলছিল ছেলে আরিনের নিথর দেহ।
মোহাম্মদ হোসেন জানান, সোহাগ একসময় ঠিকাদারি করতেন। কোটি টাকা লোকসান করে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। কয়েক মাস ধরে তিনি শারীরিকভাবেও অসুস্থ ছিলেন। বাসা থেকে সাধারণত বের হতেন না। মানসিক সমস্যার কারণে তার চিকিৎসা চলছিল। আর্থিক সংকট তীব্র হয়ে ওঠায় কয়েক মাসের বাসাভাড়াও বকেয়া পড়েছিল। তার ছেলে আরিন ছিল অটিজম আক্রান্ত। সেও সারাক্ষণ বাসাতেই থাকত। তবে ঠিক কী ঘটেছিল সেটা জানা যায়নি। কারণ ঘটনার সময় বাবা-ছেলে ছাড়া কেউ বাসায় ছিলেন না।
ঘটনাস্থলে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) এক পরিদর্শক জানান, থানা পুলিশের পাশাপাশি পিবিআই এ ঘটনার রহস্য উদঘাটনে কাজ করছে।