সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেছেন, ‘শোভাযাত্রা ঐতিহাসিকভাবে ও রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা হয়েছিল। একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক গ্রুপ এটিকে তাদের প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার কাজে ব্যবহার করেছে। এবার আমরা শুধু ফ্যাসিস্টের মুখাবয়ব ব্যবহার করেছি। কারণ ফ্যাসিস্ট কোনো রাজনীতির অংশ নয়, ফ্যাসিস্ট সবচেয়ে বড় অশুভশক্তি।’
সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলার আয়োজনে বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা ফারুকী বলেন, ‘দেশের সকল জনগোষ্ঠী, সকল ঐতিহ্য-সেই আকবর আমলের ঐতিহ্য, সুলতানি আমলের ঐতিহ্য, এর পরের ঐহিত্য সবকিছুর মিশ্রণ এখানে দেখবেন। ফলে টিপিক্যাল ন্যারো রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি এখানে নেই।’
এর আগে ‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’ প্রতিপাদ্য নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’ শুরু হয়। এদিন সকাল ৯ টার দিকে এ শোভাযাত্রা শুরু হয়।
এটি চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে শুরু হয়ে শাহবাগ মোড়, টিএসসি মোড়, শহীদ মিনার, শারীরিক শিক্ষাকেন্দ্র ও দোয়েল চত্বর হয়ে বাংলা একাডেমির সামনের রাস্তা দিয়ে পুনরায় চারুকলা অনুষদে গিয়ে শেষ হয়। এই শোভাযাত্রায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ যোগ দেন।
এবার এই ঐতিহ্যবাহী শোভাযাত্রাটি নতুন নামে আয়োজিত হয়েছে। আগে ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ নামে এই শোভাযাত্রা হলেও এবার নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’।
শোভাযাত্রায় বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী—চাকমা, মারমা, সাঁওতাল ও গারো অংশ নিয়েছে। একই সঙ্গে অংশ নিয়েছে বাংলাদেশের জাতীয় নারী ফুটবল দলও।
গত শনিবার ভোরে চারুকলা অনুষদের ভেতরে শোভাযাত্রার জন্য তৈরি করা ‘স্বৈরাচারের মুখাকৃতি’ ও ‘শান্তির পায়রা’ মোটিফে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটে।
স্বৈরাচারের ওই মুখাকৃতি মোটিফটি বাঁশ ও বেত দিয়ে দাঁতাল মুখের এক নারীর মুখাবয়ব বানানো হয়। মাথায় খাড়া চারটি শিং, হাঁ করা মুখ, বিশালাকৃতির নাক ও ভয়ার্ত দুটি চোখ।
এদিকে ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’ পুড়ে যাওয়ার পর সেটি নতুন করে তৈরির কাজ শুরু হয়। গত শনিবার রাতেই থার্মোকল বা সোলা দিয়ে নতুন করে ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি বানানো হয়।
খুলনা গেজেট/এনএম