বেশ কয়েক দিন হলো কিছু খেলেই ভারী হয়ে যাচ্ছে ফয়সাল সাহেবের পেট। হজমেও অসুবিধা হচ্ছে। সেই সঙ্গে ইদানীং খুব ক্লান্তি লাগে সব সময়। চিকিৎসকের কাছে গেলে আলট্রাসাউন্ডসহ বেশ কিছু টেস্ট দেন। টেস্ট করানোর পর চিকিৎসক জানালেন, তার গ্রেড-টু ফ্যাটি লিভার। এ জন্যই এসব উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। বয়স ৪০ না পেরোতেই ফ্যাটি লিভার কেন!
তার আগে জানা দরকার ফ্যাটি লিভার কী? যকৃৎ বা লিভারের চারপাশে অতিরিক্ত চর্বি জমে যাওয়াকেই বলে ফ্যাটি লিভার। যার ফলে যকৃৎ তার কাজ ঠিকভাবে করতে পারে না। অতিরিক্ত অ্যালকোহল বা অস্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ এবং অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনে হতে পারে ফ্যাটি লিভার। আমাদের খাদ্যাভ্যাস, অনিয়মিত ঘুম এবং অনিয়ন্ত্রিত জীবনাচরণের কারণেই মূলত ফ্যাটি লিভার হয়ে থাকে।
প্রথম প্রথম ফ্যাটি লিভারের উপসর্গ বোঝা না গেলেও ধীরে ধীরে তা যকৃতের ওপর প্রভাব ফেলতে থাকে। ওজন বেড়ে যাওয়া, ক্লান্তি, হজমে সমস্যা থেকে শুরু করে ডায়বেটিস, হৃদ্রোগ, স্ট্রোক পর্যন্ত হতে পারে। সঠিক চিকিৎসা ও নিরাময় না হলে লিভার সিরোসিস, এমনকি লিভার ফেইলিউর হতে পারে।
ইউনিভার্সিটি অব ইলিনয় শিকাগোর এক গবেষণায় বলা হয়, এক দিন অন্তর উপবাস, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও নিয়মিত শরীরচর্চায় ফ্যাটি লিভার ভালো হয়। খাবার থেকে চিনি, অতিরিক্ত তেল বাদ দিতে হবে, প্রক্রিয়াজাত খাবার কম খেতে হবে।
ফ্যাটি লিভার নিরাময়ে আয়ুর্বেদিক কিছু উপায়ও রয়েছে, যা প্রাকৃতিকভাবে যকৃতের চর্বি কমাবে। খুব সহজেই তৈরি করা যায় এই আয়ুর্বেদিক চা। তৈরি করতে লাগবে আধা চা-চামচ হলুদগুঁড়া, আধা চা-চামচ আদাগুঁড়া, আধা চা-চামচ মেথি এবং চারটি পুদিনাপাতা।
চুলায় একটি হাঁড়িতে ২৫০ মিলিলিটার বা এক গ্লাস পানিতে সব উপকরণ জ্বাল দিয়ে অর্ধেকে নিয়ে আসতে হবে। এরপর ছেঁকে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে সকালে অথবা সন্ধ্যায় নিয়মিত পান করতে হবে।
অল্প উপকরণের সমন্বয়ে তৈরি এই আয়ুর্বেদিক চা ফ্যাটি লিভার নিরাময়ে দারুণভাবে কাজ করে। আদায় থাকা জিনজারল লিভারের প্রদাহ কমায়, রোধ করে কোষের ক্ষয়। মেথিতে থাকা পলিফেনল এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট লিভারকে সতেজ করে তুলতে সহায়তা করে। এ ছাড়া হলুদে থাকা এনজাইম লিভারের চর্বি কমানোর পাশাপাশি প্রদাহ কমায়।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া।
খুলনা গেজেট/এনএম