করোনোভাইরাস মহামারিতে ২৬ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে বাংলাদেশ-ভারতের ট্রেন যোগাযোগ। অবশেষে আবার চালু হতে যাচ্ছে।
রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার সাহাদাত আলী জানিয়েছেন, আগামী সপ্তাহে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় চূড়ান্ত হবে কবে থেকে এই রুটে আবার ট্রেন চলবে।
তিনি আরও জানিয়েছেন, ঢাকা-কলকতা রুটের মৈত্রী এবং খুলনা-কলকাতা রুটের বন্ধন এক্সপ্রেস ২৯ মে চালু হতে পারে। ঢাকা-নিউ জলপাইগুড়ি রুটের মিতালী এক্সপ্রেস ১ জুন থেকে চলতে পারে। মূলত এই তারিখগুলো ধরে প্রস্তুতি দেওয়া নেওয়া হচ্ছে। আগামী রোববার আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা হতে পারে।
ঢাকা-কলকাতা রুটে ২০০৮ সালে চালু হয় মৈত্রী এক্সপ্রেস। খুলনা-কলকাতা রুটে চলে বন্ধন এক্সপ্রেস। এছাড়া ঢাকা-জলপাইগুড়ি রুটে মিতালি এক্সপ্রেস ২০২১ সালের ২৬ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপস্থিতিতে উদ্বোধন করা হলেও করোনার কারণে এখনও যাত্রী পরিবহন সম্ভব হয়নি।
গত মার্চে ট্রেন তিনটি চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ভারত পর্যটন ভিসা বন্ধ রাখায় তা সম্ভব হয়নি। গত এপ্রিলে দুই দেশেই পর্যটন ভিসা দেওয়া শুরু হয়েছে। এছাড়া সম্প্রতি ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন রেলওয়েকে চিঠিতে জানিয়েছে, ট্রেন চালু করতে তার দেশ প্রস্তুত।
রেলওয়ের পরিচালক (ট্রাফিক) নাহিদ হাসান খাঁন বলেছেন, আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার পরই আনুষ্ঠানিকভাবে বলা যাবে কবে থেকে ট্রেন চালু হচ্ছে। ট্রেন ব্যবস্থাপনা, টিকিট ইস্যু করাসহ আরও কিছু প্রস্তুতিমূলক কাজ রয়েছে।
গত ২৮ এপ্রিল বাংলাদেশ সফরে এসে ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর জানান, শিগগিরই চালু হবে দুই দেশের ট্রেন। গত মার্চে ভারত জানিয়েছিল, দেশটিতে ট্রেন ভ্রমণে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে করোনা পরীক্ষা, করোনার দুই ডোজ টিকা নেওয়া থাকতে হবে ১২ বছরের বেশি বয়সীদের। তবে করোনার প্রকোপ কমে আসায় ট্রেন চালুর এই সময়ে একই ধরনের কড়াকড়ি থাকবে কি-না, তা নিশ্চিত নয়।
ঢাকা-জলপাইগুড়ি ট্রেন চলাচল শুরু করতে গত বছর বাংলাদেশের চিলাহাটি থেকে ভারতের হলদিবাড়ি পর্যন্ত রেলপথ পুনঃনির্মাণ করা হয়। এই পথে ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ট্রেন চলাচল ছিল। সেই বছর ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ হয়। ২০২০ সালের ১৭ ডিসেম্বর পণ্যবাহী ওয়াগন চলাচলের মাধ্যমে ৫৫ বছর পর রেল যোগাযোগ চালু হয়।
ঢাকা থেকে জলপাইগুড়ির দূরত্ব রেলপথে ৫৯৫ কিলোমিটার। বাংলাদেশ অংশে পড়েছে ৫২৬ কিলোমিটার। বাকি ৬৯ কিলোমিটার ভারত অংশে। দূরত্ব অনুপাতে আয়ের ৮০ ভাগ বাংলাদেশ এবং বাকি ২০ ভাগ ভারত পাবে। ভারতের দেওয়া ১০টি ব্রডগেজ বগিতে চলবে মিতালী। আপাতত ভারতীয় রেক (ট্রেন) এই পথে চলবে। ঢাকা-কলকতা এবং খুলনা-কলকাতা রুটে দুই দেশের ট্রেনই চলাচল করে। মিতালীর সব কামরা হবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। সব ধরনের করসহ এসি বার্থে যাত্রী প্রতি ভাড়া পড়বে চার হাজার ৯০৫ টাকা, এসি সিটে তিন হাজার ৮০৫ এবং এসি চেয়ারে দুই হাজার ৭০৫ টাকা।
খুলনা গেজেট/ টি আই