দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছেন।
তিনি বলেন, সবকিছুর দামই বাড়তি। আমি সবার কাছে চাইছি এ অবস্থান কর্মসূচির মাধ্যমে সবাইকে জানাতে। যেন এ সমস্যার সমাধান হয়। তাই আমি ভাইরাল হতে এসেছি। আলোচনা-সমালোচনা মাধ্যমে আমাকে ভাইরাল করে হলেও সমস্যাগুলোর বিষয় সবাইকে জানাতে চাচ্ছি। রবিবার দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণের দাবি জানিয়ে তিনি এসব বলেন।
ঢাবির রাজু ভাস্কর্যে চার দিন ধরে একক অবস্থান কর্মসূচি করা রনির হাতে দেখা যায় ‘বাংলাদেশের দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি’ লেখা প্ল্যাকার্ড।
এর আগে বাংলাদেশ রেলওয়ের অনিয়ম, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে এবং গত এপ্রিলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. মোর্তজা মেডিকেল সেন্টার আধুনিকায়নসহ ৬ দফা দাবিতে অনশন কর্মসূচি পালন করে আলোচনায় আসেন এ শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঘুরে ঘুরে চা বিক্রি করেও বেশ আলোচনায় আসেন তিনি।
সরেজমিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামেন গেলে দেখা যায়, মহিউদ্দিন রনি দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে একক অবস্থান করছেন। তাকে দেখতে আশপাশের লোকজন ভিড় করছেন। অনেকই চলার পথে রিকশা থামিয়ে তাকে দেখে যাচ্ছেন।
অফিসের কাজে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এলাকায় এসেছেন মো. আলী নামের এক যুবক। তিনি বলেন, দেশের জিনিসপত্রে দাম যে হারে বাড়ছে বাজারে গেলে বোঝা যায়। তার মধ্যে রমজানে বরাবরে মতো দাম বাড়তি। আর এই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে জন্য রনির একক লড়াই দেখে খুব ভালো লাগল। আমার অফিসের কাজ আছে। দ্রুত যেতে হবে এক জায়গায়। তা না হলে তার (মহিউদ্দিন রনি) সঙ্গে আমিও অবস্থান করতাম।
ঢাকায় রাইড শেয়ারিং করা আনোয়ার হোসেন বলেন, আমাদের মতো মধ্যবিত্তদের জন্য রনির একক লড়াই এটা অনেক বড় কিছু। যেখানে কেউ ভয়ে কিছু বলতে পারছে না সেখানে রনির এ প্রতিবাদ একদিন না একদিন সরকারের কাছে পৌঁছাবে। কারণ বাজারে গেলে মানুষের যে কষ্ট সেটা আমার মতো মধ্যবিত্ত পরিবারের যারা আছেন তারা ভালোভাবে বুঝতে পারে। যেভাবে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে, এভাবে চলতে থাকলে একদিন শুধু রনি না আরো অনেকে রাস্তায় নেমে যাবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি বলেন, আমি চার দিন ধরে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণের দাবি জানিয়ে অবস্থান করে আসছি। কারণ দেশের দ্রব্যমূল্যের যে অবস্থা এগুলো নিয়ে আমাদের কথা বলতে হবে। শুধু আমার না সবারই উচিত এ বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলা। তা না হলে জিনিসপত্রের দাম কমবে না। এর আগেও আমি রেলের ইস্যু নিয়ে প্রতিবাদ করেছি। মানুষকে জানাতে চেয়েছিলাম রেলের অনিয়মগুলো। আর এখন কয়েক মাস ধরে দেখা যাচ্ছে দ্রব্যমূল্যের বাজার এমন ভাবে বাড়ছে, কোনোভাবে এটা নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। দিনের পর দিন মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করছে। মূল্য সংযোজনের নামে সিন্ডিকেটের ফাঁদে পড়ে উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত সব স্তরের শ্রেণি-পেশার মানুষজন অসহায় হয়ে আছে। তাই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ না হওয়া পর্যন্ত আমি অবস্থান চালিয়ে যাব বলে জানান তিনি।’
খুলনা গেজেট/কেডি