খুলনা, বাংলাদেশ | ১৯শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২রা জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  আজ বিকেল ৩টায় অর্থ উপদেষ্টা ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করবেন

ফারুককে সরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে যে ব্যাখ্যা দিলেন ক্রীড়া উপদেষ্টা

ক্রীড়া প্রতিবেদক

দুর্নীতির কারণে নয়, বরং বিপিএলে অনিয়ম ও দায়িত্বে অবহেলার কারণেই ফারুক আহমদকে সরানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়া। গঠনতন্ত্র মেনে তাকে অপসারণ করায় আইসিসির নিষেধাজ্ঞার শঙ্কা নেই বলেও জানান তিনি। আগামী নির্বাচনে স্বচ্ছপ্রক্রিয়ার মাধ্যমে পরিচালক নির্বাচিত হবেন বলেও জানান ক্রীড়া উপদেষ্টা।

শনিবার (৩১ মে) পল্টন হ্যান্ডবল স্টেডিয়ামে ৩৫তম জাতীয় হ্যান্ডবলের ফাইনাল দেখতে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া বলেন, বিসিবির গঠনতন্ত্র ও আইসিসির নিয়ম নেমেই ফারুককে সরানো হয়েছে। সভাপতি বদলে কোনো রকম নিয়মের ব্যত্যয় হয়নি। জোর করে কাউকে সরিয়ে দেওয়া হয়নি। সভাপতি হিসেবে ফারুক আহমেদকে অপসারণ করেনি সরকার। তাঁর জায়গায় নতুন সভাপতি হওয়া আমিনুল ইসলামও বিসিবির সভাপতি হয়েছেন নিয়ম মেনেই।

ফারুক আহমেদকে বিসিবির সভাপতির পদ থেকে কেন সরিয়ে দেওয়া হলো, এ নিয়ে আলোচনার মধ্যেই ক্রীড়া উপদেষ্টা সরকারের দিক থেকে বিষয়টি ব্যাখ্যা করেন সাংবাদিকদের কাছে। ফারুককে সরিয়ে দেওয়ার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘এই সরকার আসার পর বাংলাদেশ পাকিস্তানের সঙ্গে টেস্ট সিরিজ জিতে আসল। এর পর থেকে ক্রিকেটে আমরা ক্রমশ অবনমন দেখছি। আমাদের তো বিচার করতে হবে পারফরম্যান্স দিয়ে, সেই পারফরম্যান্স আশানুরূপ নয়।’

ফারুককে সরিয়ে দেওয়ার পেছনে বিপিএলে অব্যবস্থাপনা বড় কারণ হিসেবে উল্লেখ করে ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেন, ‘বিপিএলে দুর্বার রাজশাহী যাদের টিম দেওয়া হয়েছে, আমরা আমাদের শঙ্কার কথা জানিয়েছিলাম…একধরনের ব্যক্তি সিদ্ধান্তে সেই টিমটা দেওয়া হয়েছে। আপনারা জানেন, সরকারকে পর্যন্ত খেলোয়াড়দের বেতন দেওয়া, হোটেলের টাকা দেওয়ার জন্য জড়াতে হয়েছে। একটা বিব্রতকর পরিস্থিতি তখন তৈরি হয়েছিল। বিপিএল–কেন্দ্রিক এই পরিস্থিতি জন্য ফাইনালে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টাকেও আমরা আনতে পারিনি। এটা আমাদের জন্য, বোর্ডের জন্য একটা লজ্জাজনক। অনেকগুলো অনিয়ম ও দায়িত্বে অবহেলার কারণে যে ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, সেগুলোতে ফারুক ভাইয়ের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে।’

বিসিবির বাকি বোর্ড পরিচালকদের সঙ্গে ফারুকের টিমওয়ার্ক হচ্ছিল না জানিয়ে আসিফ মাহমুদ বলেছেন, ‘ক্রিকেট একটা টিম, বিসিবিতে টিম হয়নি। বাকি যাঁরা আছেন, তাঁরা কেউই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছিলেন না, ক্রমাবনতির এটাও বড় কারণ। সব মিলিয়ে একটা সিদ্ধান্তে আমাদের আসতে হয়েছে।’

কী কারণে এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে, সেটা বোঝাতে গিয়ে আসিফ মাহমুদ উদাহরণ হিসেবে বলেছেন, ‘সিলেকশন কমিটি যদি দেখে কোনো একজন খেলোয়াড় রেগুলার খারাপ পারফরম্যান্স করছে, সিলেকশন কমিটি তাকে টিমে রাখবে না। আমাদের দিক থেকেও ব্যাপারটা এমনই ছিল।’

ফারুক আহমেদ বলেছেন তাঁকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হয়নি। এ নিয়ে উপদেষ্টার ভাষ্য, ‘ব্যক্তিগত পর্যায়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছি।’

তাহলে কি ফারুককে মনোনয়ন দিয়ে ভুল করেছিলেন? উপদেষ্টা বলেন, ‘দুজনকে মনোনয়ন দেওয়ার এখতিয়ার এনএসসির (জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ) আছে, চাইলে মনোনয়ন দিতে পারে আবার সরিয়েও নিতে পারে। সেই জায়গা থেকে আমরা মনোনয়ন দিয়েছি। আর সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আমাদের মনে হয়েছে,…আমরা কিন্তু প্রেসিডেন্টকে অপসারণ করিনি। পরিচালক হিসেবে তাঁর মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছি। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই ওনার প্রেসিডেন্ট পদ চলে গেছে। বোর্ডের নিয়ম অনুসারে এবং আইসিসির গাইডলাইন অনুযায়ী আরেকজন সভাপতি হয়েছেন।’

আইসিসির নিষেধাজ্ঞার কথা অনেকে বলছেন। তেমন শঙ্কা উড়িয়ে আসিফ মাহমুদের কথা, ‘যে কথাগুলো বলা হচ্ছে সরকারের অতিরিক্ত হস্তক্ষেপ…এখানে সরকারের হস্তক্ষেপের কিছু নেই। সরকারের যতটুকু এখতিয়ার আছে, সেই বিবেচনায় হস্তক্ষেপ করেছে। দুজন ডিরেক্টর দেওয়ার ক্ষমতা সরকারের আছে, সরকার সেখানে পরিবর্তন করেছে। সরকার প্রেসিডেন্ট পরিবর্তন করেনি। বিসিবির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নতুন প্রেসিডেন্ট এসেছেন। আমাদের আইসিসির সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে। যিনি এখন প্রেসিডেন্ট (সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম) হয়েছেন, তিনি দীর্ঘদিন আইসিসিতে কাজ করেছেন। কোনো কমিউনিকেশন গ্যাপ আমাদের দিক থেকে নেই। আইসিসিও এটাকে সাধুবাদ জানিয়েছে।’

ফারুক আহমেদকে সরিয়ে দেওয়া সবার জন্যই একটা বার্তাও। এ নিয়ে ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি যদি পারফর্ম করতে না পারি, ব্যর্থ হই, তাহলে আমিও পরিবর্তন হতে পারি।’ সবশেষে বলেছেন, ‘আমি দায়িত্বে থাকা অবস্থায় বাংলাদেশের ক্রিকেটকে ডুবে যেতে দিতে পারি না।’

খুলনা গেজেট/এমএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!