সাফের যেকোনো আসর, হোক তা ছেলেদের, কিংবা মেয়েদের অথবা বয়স ভিত্তিক, বাংলাদেশের সাফল্যের পথে অন্তরায় হয়ে উঠে ভারত কিংবা নেপাল। এবার মেয়েদের ষষ্ঠ আসরে বাংলাদেশ একটি পথের কাঁটা দূর করেছে গ্রুপ পর্বে ভারতকে ৩-০ গোলে হারিয়ে। এই একটি জয়ে সেমিতে নেপালকেও এড়াতে পেরেছে। এই সমীকরণে বাংলাদেশের সামনে ফাইনালের আগে আর কোনো কাঁটা নেই। আজ প্রথম সেমিতে তাদের সামনে ভুটান। যাদের এই আসরে অতীত পরিসংখ্যান তেমন কোনো কথা বলে না। খেলতে পারেনি একবারও সেমি ফাইনাল। দুই দলের শক্তির বিবেচনায় বাংলাদেশের ফাইনাল খেলাটা অনেকটা নিশ্চিত। এখানে কোনো অঘটন ঘটার আশঙ্কা খুবই কম। সেই বিবেচনায় ফাইনালে গেল বাংলাদেশের সামনে পড়বে ভারত ও নেপালের দ্বিতীয় সেমিতে বিজয়ী দল। খেলা শুরু হবে বাংলাদেশ সময় সোয়া ১টায়।
বাংলাদেশের চোখ শিরোপায় হলেও আপাতত তাদের ভাবনার রাজ্যে শুধুই ভুটান আর আজকের প্রথম সেমি ফাইনাল। যেখানে ভুটানকে নিয়ে কোনো রকম হালকা ভাব নেই। অধিনায়ক সাবিন খাতুনের কণ্ঠে ছিল সে রকমই আভাস, ‘ভুটানের গত দুই ম্যাচ যদি দেখেন, ওরা নেপালের বিপক্ষে খেলার চেষ্টা করেছে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ভালো ব্যবধানে জিতেছে। শেষ সাফেও কিন্তু ওদের গোল দিতে আমাদের বেশ কষ্ট করতে হয়েছে। আমার মনে হয়, ভুটান আগের তুলনায় এখন অনেক ভালো দল। আমরা চেষ্টা করব আমাদের সেরাটা দেওয়ার।’
সাবিনার কথা অনেকটাই সত্যি। এবার তারা প্রথমবারের মতো সেমি ফাইনাল খেলার পথে নেপালের কাছে ৪-০ গোলে হারলেও শ্রীলঙ্কাকে হারিয়েছিল ৫-০ গোলে। আবার বাংলাদেশের বিপক্ষে আগের মোকাবিলাগুলোতে তারা ক্রমেই হারের ব্যবধান কমিয়ে এনেছে। ২০১০ সালে শিলিগুঁড়িতে ৯-০ গোলে হারালেও পরের দুই মোকাবিলাতে তা নেমে আসে ২০১২ সালে ১-০ ও ২০১৯ সালে ২-০ ব্যবধানে। হয়তো সে কারণেই ভুটানও বাংলাদেশকে হুংকার দিচ্ছে। এক তরফা খেলে জেতার দিন শেষ বলেও ছিল অধিনায়ক পেমা চোডেন তিসেরাংয়ের কথায়। তিনি বলেন, ‘ম্যাচটা কঠিন হবে। আমরা র্সবোচ্চ চেষ্টা করব তাদের সঙ্গে কঠিন লড়াই করার। আশা করি ম্যাচটা একপেশে হবে না।’
ভুটানকে এমন আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে তাদের কোচ ২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা কোরিয়ার কিউং হক সুং। সাফের আগের ৫ আসরে ভুটানের কোনো জয় ছিল না। সব মিলিয়ে গোল ছিল ৩টি। এবার এক ম্যাচেই পেয়েছে ৫ গোল। শ্রীলঙ্কার জালে এই ৫ গোল দিয়ে তারা প্রথমবারের মতো উঠে এসেছে সেমিতে।
সেমিতে আসার পথে বাংলাদেশ ৩-০ গোলে মালদ্বীপকে, ৬-০ গোলে পাকিস্তানকে ও ৩-০ গোলে ভারতকে হারিয়ে ‘এ গ্রুপ সেরা হয়েছিল।
সাফের আগের পাঁচ আসরে বাংলাদেশ একবার মাত্র ফাইনাল খেলেছিল। ২০১৬ সালে ভারতের শিলিগুঁড়িতে অনুষ্ঠিত সেই আসরে সেমি ফাইনালে মালদ্বীপকে ৬-০ গোলে উড়িয়ে ফাইনালে গিয়ে ভারতের কাছে হেরেছিল ৩-১ গোলে। বাংলাদেশের নারী ফুটবল দলকে এক সুতোয় গেঁথেছেন কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন। ফাইনালে চোখ রেখে তিনিও ভুটানকে হালকা করে দেখছেন না। তিনি বলেন, ‘তারা শ্রীলঙ্কাকে ৫-০ গোলে হারিয়ে সেমিফাইনলে এসেছে। তাদের ছোট করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। আমরা কখনোই কোনো দলকে ছোট করে দেখি না।‘