করোনাকালীন প্রণোদনার টাকা না দিয়ে সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়ায় বিক্ষোভ করেছেন ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নার্স, ওয়ার্ডবয় ও কর্মচারীরা। এক পর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা হাসপাতালের পরিচালক মো. সাইফুর রহমনাকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। বুধবার (২৩ মার্চ) সকালে এ ঘটনা ঘটে।
পরে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি আব্দুল জলিলের হস্তক্ষেপে এবং আগামী ১০ দিনের মধ্যে টাকা ব্যাংক হিসাবে ফেরতের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেন বিক্ষোভকারীরা।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নার্স ও ওয়ার্ড বয় অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম মহাসচিব আফসানা আক্তার জানান, যারা করোনার সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রোগীদের সেবা দিয়েছে, তাদের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয় গত বছরের জুলাইয়ে। এর মধ্যে চিকিৎকদের প্রতি দিন বাবদ এক হাজার ৮০০, নার্সদের এক হাজার ২০০ এবং ওয়ার্ড বয়দের ৮০০ করে টাকা দেওয়ার কথা। যে নার্স এক মাস কাজ করেছেন তাদের ১৫ দিনের জন্য এ প্রণোদনার টাকা পাওয়ার কথা। কিন্তু আমাদের পরিচালকের খাম-খেয়ালির কারণে সেই টাকা দীর্ঘদিন ধরে আমাদের না দিয়ে ব্যাংকে ফেলে রাখা হয়। গত ৯ মার্চ প্রণোদনার এক কোটি টাকা ফেরত চলে যায়। ফলে আমরা নির্ধারিত প্রণোদনার টাকা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।
হাসপাতালের পরিচালক মো. সাইফুর রহমান জানান, টাকা বরাদ্দ পাওয়ার পর আমরা একটি কমিটি গঠন করি। সেই কমিটির তথ্যের ভিত্তিতে তালিকা তৈরি করে এজি অফিসে পাঠানো হয়। সেখান থেকে জানানো হয় প্রয়োজনীয় অর্থ নেই। এ খবরে কিছু স্টাফ বিক্ষোভ করেছেন।
তিনি বলেন, প্রণোদনার যে টাকা ফেরত গেছে তা আনার জন্য চিঠি লেখা হবে। আর যে টাকা রয়েছে তা দ্রুতই প্রদান করা হবে।
সময় মতো টাকা প্রদান না করে কেন ফেলে রাখা হয়েছিল জানতে চাইলে পরিচালক বলেন, তালিকা প্রণয়ন করতে করতে দেরি হয়ে গেছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, যে টাকা ফেরত গেছে দ্রুত তা ফেরত আসবে।
স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের ফরিদপুরের সভাপতি আব্দুল জলিল জানান, বিক্ষোভের খবর পেয়ে আমি দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই। পরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলে ১০ দিনের সময় নেওয়া হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা এখন কাজে ফিরে গিয়েছেন।
ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকার বলেন, হাসপাতালে পরিচালক অবরুদ্ধের খবর শুনে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। তবে পুলিশ যাওয়ার আগেই মুক্তি পান পরিচালক। তবে নিরাপত্তার কথা ভেবে পরিচালকের কক্ষের সামনে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
খুলনা গেজেট/ এএ