সাতক্ষীরা তালা উপজেলার ফতেপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আলোচিত ইষ্টম দাসকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) রাত ১২টার দিকে তালা থানার পুলিশ উপজেলার ফতেপুর গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারকৃত প্রধান শিক্ষক ইষ্টম দাস সাতক্ষীরার তালা উপজেলার খলিলনগর ইউনিয়নের ফতেপুর গ্রামের নগেন্দ্রনাথ দাসের ছেলে। তিনি তালা উপজেলার ১৬৭ নং ফতেপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক।
পাটকেলঘাটা থানাধীন দাতপুর গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে আজাহারুল ইসলামকে স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরী কাম নৈশ প্রহরী পদে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে একটি চেকের বিনিময় ১০ লাখ টাকা গ্রহণ করেন ইষ্টম দাস। চাকরি না হওয়ায় এবং টাকা ফেরত না দেওয়ায় আদালতে চেক ডিজঅনারের মামলা করেন ভুক্তোভোগি আজাহারুল ইসলাম। পরে ওই মামলায় তাকে সাজা প্রদান করেন আদালত। ১০ লাখ টাকা চেক ডিজঅনারের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি হওয়ায় পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।
প্রতারণার শিকার ভুক্তোভোগি আজাহারুল ইসলাম জানান, পার্শ্ববর্তী সেনপুর গ্রামের চাচা রহিমের সঙ্গে পরিচয় সূত্রে ২০২১ সালের ২ ফেব্রুয়ারি তাদের বাড়িতে আসেন ফতেপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৎকালিন সহকারি শিক্ষক ইষ্টম কুমার দাস। একপর্যায়ে পরবর্তীতে কয়েকবার মোবাইল ফোনে কথা হয় ইষ্টম দাসের সঙ্গে। কথা বলার একপর্যায়ে তাদের মধ্যে সখ্যতা গড়ে ওঠে। দাতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী কাম নৈশ প্রহরী পদে চাকুরি পাইয়ে দেওয়ার ব্যাপারে নিশ্চয়তা দিয়ে তার কাছে ১০ লাখ টাকা দাবি করেন তিনি। তিন মাসের মধ্যে ওই পদে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার শর্তে ২০ মার্চ তাদের বাড়িতে এসে কয়েকজনের উপস্থিতিতে ১০ লাখ টাকা গ্রহণ করেন ইষ্টম দাস। তিন মাস হয়ে যাওয়ার পর চাকরি না হওয়ায় টাকা ফেরৎ চান তিনি (আজাহারুল)। একপর্যায়ে অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি নাগাদ ইষ্টম দাস তাকে সোনালী ব্যাংকের তালা শাখার ১০ লাখ টাকার একটি চেক দেন। হিসাব নম্বরে টাকা না থাকায় তিনি বাদি হয়ে ইষ্টম দাসের বিরুদ্ধে ২০২১ সালের ২৪ ডিসেম্বর সাতক্ষীরার আমলী আদালত -৩ এ একটি চেক ডিজঅনারের মামলা করেন।
পরবর্তীতে জামিন পেয়েও ২০২৩ সালের শেষের দিকে আদালতে না আসায় আদালত ইষ্টম দাসের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দেন। একপর্যায়ে চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি আদালতের কাঠগড়ায় অনুপস্থিত থাকাকালিন জেলা যুগ্ম জজ প্রথম আদালতের বিচারক বেলাল হোসেন তাকে ওই টাকা ফেরৎ দেওয়ার নির্দেশসহ দুই মাসের কারাদন্ডাদেশ দেন। এরপর থেকে ইষ্টম দাস গ্রেপ্তার এড়াতে বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপান করতেন।
তালা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মমিনুল ইসলাম জানান, আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা পেয়ে ইষ্টম দাসকে গ্রেপ্তারের জন্য কয়েকদিন ধরে চেষ্টা চলছিল। মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে তাকে তার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। বুধবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাকে জেল হাজকে পাঠানো হয়েছে।
খুলনা গেজেট/এএজে