গাজীপুরের কাশিমপুরে পরকীয়া সম্পর্কের জেরে প্রেমিককে সঙ্গে নিয়ে স্বামীকে হত্যার অভিযোগ ওঠেছে স্ত্রীর বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় নিহতের স্ত্রীসহ প্রেমিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। হত্যার পর নিহতের মরদেহ আলাদা দুটি স্থানে ছয় টুকরো করে ফেলে দেয় অভিযুক্তরা। হত্যাকাণ্ডের প্রমাণ লোপাট করতেই তারা এমনটি করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এ ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃতরা হলো নিহত সুমন মোল্লার স্ত্রী আরিফা বেগম ও ফরিদপুর জেলার নরকোনা গ্রামের আদিত্যের ছেলে তন্ময়। তারা উভয়ে একটি টেক্সটাইল কারখানায় কাজ করেন। নিহত সুমন মোল্লা বাগেরহাট জেলার গোলাবরননী বাজার গ্রামের জাফর মোল্লার ছেলে। তিনি স্ত্রীসহ কাশিমপুরের সারদাগঞ্জ হাজী মার্কেট এলাকায় স্থানীয় শফিউল্লাহর বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করতেন।
রোববার গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কার্যালয় এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য তুলে ধরেন জিএমপি’র উপ-পুলিশ কমিশনার জাকির হাসান।
তিনি জানান, গত ২১ এপ্রিল কাশিমপুরের সারদাগঞ্জ হাজী মার্কেট পুকুর পাড় এলাকায় সেপটিক ট্যাঙ্কি থেকে হাত-পা ও মাথাবিহীন যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় কাশিমপুর থানার উপ-পরিদর্শক মোজাম্মেল হোসেন বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তের এক পর্যায়ে ২৯ মে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে পুলিশ এই ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে নিহতের স্ত্রী আরিফা বেগম ও তার পরকীয়া প্রেমিক তন্ময়কে গ্রেপ্তার করে। পরে তাদের দেয়া তথ্যমতে পাশের চক্রবর্তী তেঁতুইবাড়ি এলাকার ময়লার স্তূপ থেকে নিহতের খণ্ডিত হাত-পা ও মাথাসহ ৫ টুকরা উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা হত্যার দায় স্বীকার করেছে।
জাকির হাসান আরো জানান, জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পারে ভিকটিমের স্ত্রী আরিফা বেগমের সঙ্গে তন্ময়ের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এ সম্পর্কের জেরে ভিকটিম সুমন তার স্ত্রী ও তন্ময়কে মারপিট করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে অভিযুক্তরা সুমন মোল্লাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা মোতাবেক ১৯ এপ্রিল রাতে আরিফা তার স্বামী সুমন মোল্লাকে দুধের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাওয়ায়। পরে প্রেমিক তন্ময়কে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে বালিশ চাপা দিয়ে সুমনকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরের দিন মরদেহ করাত ও চাপাতি দিয়ে ৬ টুকরো করে আলাদা করা হয়। একপর্যায়ে নিহতের হাত-পা ও মাথাবিহীন শরীর সেপটিক ট্যাঙ্কিতে ও অপর ৫ টুকরা ময়লার ভাগাড়ে ফেলে দেয় গ্রেপ্তারকৃতরা।
খুলনা গেজেট/এনএম