প্রায় এক যুগ অর্থাৎ এগারো বছর পরে সেপ্টেম্বর ক্রসফায়ার শূন্য একটি মাস পার করলো বাংলাদেশ। আগস্টেও প্রায় একই দৃশ্য, মাত্র একজন ক্রসফায়ার। অথচ চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই – এই সাত মাসে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয় ১৮৪ জন। সমাজ ও অপরাধ গবেষকরা বলছেন, এর মাধ্যমে স্পষ্ট হয়, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এড়িয়ে চাইলেই আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত সংস্থাগুলোর তথ্য বলছে, গত সেপ্টেম্বরে দেশের কোথাও ক্রসফায়ার বা বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটেনি। প্রায় এগারো বছর পাঁচ মাস পর এমন ঘটনার সাক্ষী হলো বাংলাদেশ।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, ২০০২ সালের শুরুতে অপারেশন ক্লিন হার্টের নামে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড শুরু হয়। এরপর ২০০৪ সালে থেকে র্যাব ও পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধের একের পর এক ঘটনা ঘটে। বিভিন্ন সংস্থার হিসেবে ২০০১ থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হন ৩ হাজার ৪৪ জন। এর মধ্যে ২০১৮ সালে মাদকবিরোধী অভিযান শুরু হলে বন্দুকযুদ্ধে নিহতের সংখ্যা বাড়ে।
গবেষকরা বলছেন, এই ঘটনায় প্রমাণ হয় সরকার চাইলেই এধরনের বিচার বহির্ভুত হত্যাকাণ্ড রুখে দেয়া সম্ভব। ক্রসফায়ার কোন সমাধান না। ক্রসফায়ারের নামে সবার বিরুদ্ধে একটা ক্ষোভ তৈরি হয়।
তবে এই দুই মাসের চিত্র দিয়ে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করতে নারাজ বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, এক মাসে বন্দুকযুদ্ধ না হওয়ায় স্পষ্ট যে আইন শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী চাইলেই ক্রসফায়ার ছাড়াই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
সাবেক আইনজীবী এ কে এম শহীদুল হক বলেন, ক্রসফায়ারের দরকার নেই, আন্তরিকতার সাথে কাজ করতে হবে। আদালতের উচিত কথায় কথায় জামিন না দেয়া।
চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের আগে বন্দুকযুদ্ধ বা ক্রসফায়ারের নামে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের সর্বশেষ দুই শিকার কক্সবাজারের মেজর সিনহা মোঃ রাশেদ খান ও ২ আগস্ট সিলেটের আবদুল মান্নান ওরফে মুন্না আহমদ।
খুলনা গেজেট/এআইএন