গোপালগঞ্জ সদরের কুঠিবাড়ী সুকতাইল এলাকায় বড়ভাই সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শেখ আবেদ আলী ও ফরহাদ শেখের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে প্রবাসফেরত মুরাদ হোসেনের। জবর দখল ও ভূয়া কাগজপত্র করে নিয়েছে ১০বিঘা জমি, সোয়া কোটি টাকার গাড়ী এবং যৌথভাবে নির্মিত বিল্ডিং। নানান অপকৌশলে হয়রানিমুলক মামলা ফাঁসিয়ে দিয়েও ক্ষ্যান্ত নয়; এখন জীবনে শেষ করে দিতে মরিয়া ওরা। নিরুপায় হয়ে গোপালগঞ্জ থেকে খুলনায় এসে জীবনের নিরাপত্তায় প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, স্থানীয় সংসদ সদস্য শেখ সেলিমসহ প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসফেরত শেখ মুরাদ হোসেন। রবিবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে লিখিত বক্তব্যে এসব তথ্য জানিয়েছেন তিনি।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, সৌদিআরবে ১৬বছর প্রবাসকালে ব্যবসা করে সরল বিশ্বাসে আমার বড় ভাই সুকতাইল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আবেদ আলী ও ছোট ভাই শেখ ফরহাদের হাতে কোটি কোটি টাকা তুলে দিয়েছি। দেশে ফিরে সেই সব অর্থের কোন হিসাব পায়নি। ফেরত দেইনি একটি পয়সাও। বরং আমার অনুপস্থিতিতে আমারই পাঠানো অর্থে অন্তত ১০বিঘা জমি তাদের নামে ক্রয় করেছে। সোয়া এক কোটি মূল্যের আমার (ঢাকা মেট্রো ঘ ১৫-০১১২) প্যারোডো গাড়ীর বিপরীতে জাল স্বাক্ষরে ঢাকার এলিফ্যান্ড রোড শাখার পূবালী ব্যাংক থেকে ৪০ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছে বড় ভাই শেখ আবেদ আলী। গ্রামের বাড়ীর বিল্ডিং নির্মাণে ১৩ লাখ টাকা নিয়েও চুক্তি মোতাবেক নিচতলার ফ্লাট দলিল করে না দিয়ে আত্মসাত করেছে। আমি দেশে ফিরে এসব বিষয়ে জানতে চাইলে, আমাকে একেরপর এক হত্যার ষড়যন্ত্র করে, যা এখনো অব্যাহত রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, গত বছর তাকে জোরপূর্বক খুলনায় এনে অজ্ঞাত স্থানে প্রায় চার মাস আটকে রেখেছিল ওরা। এসময়ে গোপালগঞ্জ সদরে আমার ক্রয়কৃত জমিতে দেয়া প্রাচীর ভেঙে গুড়িয়ে দেয়। সরকারি খাস সম্পত্তি ও স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনদের জমি জবর দখল করে কার্বন ফ্যাক্টরি ও গরুর খামার গড়ে তুলেছেন পর সম্পদলোভী শেখ আবেদ আলী। তারই পোষ্য সন্ত্রাসী শেখ ফেলা, সাবান মোল্যা, কামরুল দাড়িয়া, নজরুল শেখসহ কয়েকজন হিন্দুদের বাড়ীতে অত্যাচার করে; কুটকৌশলে আমার নাম প্রচার করে।
সর্বশেষ, গত ১ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টার দিকে মৎস্য ঘেরে রাস্তার কাজ করছিল মুরাদ শেখ। এসময়ে ঠুনকো অযুহাতে বড় ভাই আবেদ আলী ও ছোট ভাই ফরহাদসহ তাদের ভাড়াটিয়া লোকজনে অবৈধ শর্টগান ও পিস্তলসহ কয়েকটি আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে অতর্কিত হামলা চালায়। তিনজনে আমার হাত-পা চেপে ধরে আমার মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে আবেদ আলী। একপর্যায়ে মৃত ভেবে ফেলে রেখে গেলে স্থানীয়রা আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। আমি অজ্ঞান ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার মধ্যে আমার ঘেরের বাংলোতে ব্যাপক লুটপাট করে নগদ লক্ষাধিক টাকা, স্বর্ণের চেইন ও মুল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে ঘরে তালা দিয়ে দেয়। আমার কর্মচারী রিয়াজের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে ভবিষ্যতে ঘেরের দিকে আসলে জীবনে শেষ করে দেবার হুমকি দেয়। এসব দৃশ্য সিসিটিভি ক্যামেরায় ভিডিও ধারণ রয়েছে। আমি চিকিৎসাধীন অবস্থায় আমার বিরুদ্ধে গোপালগঞ্জ সদর থানায় উল্টো মামলা করেছে বড় ভাই আবেদ আলী।
প্রবাসফেরত মুরাদ শেখ আরও বলেন, এখানেই ক্ষ্যান্ত নয়, আমি খুলনায় থাকাবস্থায় আমার ঘেরে বড় ভাই আবেদ আলী পুলিশ নিয়ে অস্ত্র উদ্ধারের নাটক সাজায়। আমি বাড়ী ফিরে গেলে সবকিছু ঠিক করে দিচ্ছি বলে ভুলভাল বুঝিয়ে আমার কাছ থেকে তিন লাখ টাকা দেয় আবেদ আলী। তিন মাস পর সেই অস্ত্র দিয়েই আমাকে হয়রানিমুলক মিথ্যায় মামলা জড়িয়ে পুলিশে ধরিয়ে দেয় সে। স্থানীয় প্রভাবশালী হওয়ায় স্থানীয় পুলিশকে অর্থের বিনিময়ে ব্যবহার করে আবেদ আলী। এভাবে একেরপর এক ষড়যন্ত্রেও মনোবাসনা মেটেনি সম্পদলোভী আবেদ আলীর। এখন আমাকে প্রাণে মেরে ফেলতে হন্যে হয়ে খুঁজছে। এখন জীবনের নিরাপত্তা চান তিনি।
খুলনা গেজেট/এআইএন