খুলনা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ কাজী বরকতুল ইসলামের বিরুদ্ধে ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসের জাতীয় কর্মসূচি পালনে বাঁধা প্রদানের অভিযোগ উঠেছে।
এমন অভিযোগ করেছেন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের একাংশ। তাদের অভিযোগ অধ্যক্ষের নির্দেশে প্রতিষ্ঠানের কেয়ারটেকার রবিন ১৬ ডিসেম্বর সকালে প্রশাসনিক ভবনের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়।
পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী সকালে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মকর্তা,কর্মচারী, শিক্ষার্থীগণ সকালে র্যালী সহকারে পার্শ্ববর্তী খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) অভ্যন্তরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যে ফুলের শ্রদ্ধা নিবেদন করে সকাল সাড়ে ৭ টায় আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল পালনের জন্য প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে দেখেন প্রশাসনিক ভবনের প্রধান ফটক তালাবদ্ধ।
এমন অবস্থায় প্রশাসনিক ভবনের সামনেই তারা বিজয় দিবসের কর্মসূচি পালন করেন। এ ঘটনায় প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের একাংশের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
খবর পেয়ে আড়ংঘাটা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলেএসে শিক্ষকদের অনুরোধে পুলিশ কেয়ারটেকারকে তালা খুলে জাতীয় দিবসের কর্মসূচি পালনে সহযোগিতা করার অনুরোধ করেন। এ সময় প্রতিষ্ঠানের কেয়ারটেকার রবিন পাল পুলিশকে জানান প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ জাজী বরকতুল ইসলাম তাকে নির্দেশ দিয়েছেন বেলা ১২ টার আগে গেটের তালা না খোলার। ১২ টার পর আসলে তালা খোলা হবে।
এ ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র ইন্সট্রাক্টর ও খুলনা মহিলা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রিয়াজ শরীফ খুলনা গেজেটকে বলেন, পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী সকাল ৭ টায় প্রতিষ্ঠানে একত্রিত হই বেশিরভাগ কর্মকর্তা, কর্মচারী। এরপর কুয়েটে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে পুষ্প স্থাবক অর্পণ করে প্রতিষ্ঠানের ওয়েল্ডিং ট্রেডে আলোচনা এবং দোয়া অনুষ্ঠান করতে এসে আমরা জানতে পারি প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ কাজী বরকতুল ইসলাম কেয়ারটেকারকে নির্দেশ দিয়েছেন মেইন গেটে তালা মেরে দিতে এবং ভীতরে কোন অনুষ্ঠান না করতে।
এছাড়া তিনি আমাদেরকে ভীতরে ঢুকতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। যার ফলশ্রুতিতে আমরা আজকের দিনের ভাবগম্ভীর্য রক্ষার্থে কোনরকম অপ্রীতিকর না করে গেটের মুখে আমরা অনুষ্ঠান করেছি। সকলে আলোচনা এবং দোয়া করি।
এ ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ কাজী বরকতুল ইসলাম খুলনা গেজেটকে বলেন, মহান বিজয় দিবস ২০২৩ পালন উপলক্ষে খুলনা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের পক্ষ থেকে ১৬ ডিসেম্বর সূর্যোদয়ের সাথে সাথে গল্লামারি শহীদ স্মৃতিসৌধে পুস্পস্তবক অর্পন, বেলা ১২ টায় প্রতিষ্ঠানের ওয়েল্ডিং ট্রেডে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানের কর্মসূচি ঘোষণা করে অফিস আদেশ প্রদান করা হয় এবং উক্ত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে অংশগ্রহণের জন্য কেন্দ্রের সকল কর্মকর্তা কর্মচারীদের নির্দেশ প্রদান করা হয়। পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী সকাল ৬ টায় প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে গল্লামারি শহীদ স্মৃতিসৌধে পুষ্প স্থাপক অর্পণ করি। এরপর জেলা প্রশাসন আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগদান শেষে প্রতিষ্ঠানের পূর্ব নির্ধারিত প্রোগ্রাম বেলা ১২ টায় প্রতিষ্ঠানের ওয়েলডিং ট্রেডে আলোচনা এবং দোয়া অনুষ্ঠান করি।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিজয় দিবস ২০২৩ পালন উপলক্ষে আমার স্বাক্ষর সম্বলিত কর্মসূচি পালনের অফিস আদেশ প্রতিষ্ঠানের নোটিশ বোর্ডে লাগানোর সময় হযরত আলী বুলেট ছিঁড়ে ফেলেন। প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা প্রহরী মোঃ জুবায়ের শেখ আমাকে লিখিতভাবে বিষয়টি জানিয়েছে।
উল্লেখ্য গত ৭ ডিসেম্বর থেকে বিভিন্ন কারণে অধ্যক্ষের উপর নাখোশ উক্ত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা কর্মচারীদের একাংশ অধ্যক্ষ কাজী বরকতুল ইসলামের অপসারণের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন। সেই থেকে প্রতিষ্ঠানটিতে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে যা এখনো নিরসন হয়নি।
খুলনা গেজেট/ টিএ