রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী মহলের অবৈধ ব্যবসা-বাণিজ্য আর শিল্প দূষণে আক্রান্ত সুন্দরবন। বিষ প্রয়োগে মৎস্য নিধন, নির্বিচারে বৃক্ষ নিধন, পরিকল্পিত অগ্নিকান্ড ও বন্যপ্রাণী হত্যা এবং প্লাস্টিক দূষণ-শিল্প দূষণে বিপর্যস্ত সুন্দরবন। পশুর নদীতে কলকারখানার বর্জ্য ও জাহাজি বর্জ্য নিক্ষেপ, কয়লা এবং তেলবাহী জাহাজডুবির মাধ্যমেও সুন্দরবনের প্রাণবৈচিত্র হুমকিতে রয়েছে। বাংলাদেশের ফুসফুস বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন রক্ষায় সরকার ও আইনশৃংখলা বাহিনীকে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করতে হবে।
মঙ্গলবার (২১ মার্চ) বেলা ১১টায় আন্তর্জাতিক বন দিবস উপলক্ষে সুন্দরবনের ঢাংমারিতে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ, পশুর রিভার ওয়াটারকিপার এবং ঢাংমারি ডলফিন সংরক্ষণ দলের আয়োজনে বনজীবিদের অংশগ্রহণে মানববন্ধনে বক্তারা এসব কথা বলেন।
“করবো বন সংরক্ষণ, সুস্থ থাকবো সারাক্ষণ” শ্লোগানে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন চলাকালে সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এর কেন্দ্রিয় নেতা পশুর রিভার ওয়াটারকিপার মোঃ নূর আলম শেখ।
এসময় বক্তব্য রাখেন বাপা নেতা ঢাংমারি ডলফিন সংরক্ষণ দলের টিম লিডার ইস্রাফিল বয়াতি, বাপা নেতা শেখ রাসেল, বাপা নেতা হাছিব সরদার, বনজীবি ষ্টিফেন হালদার, বনজীবি বেল্লাল বেপারী, বনজীবি সাথী আদিত্য, মধুসূদন মন্ডল, বনজীবি লিপি বেগম, বনজীবি কল্পনা সরদার, বনজীবি তরুন মন্ডল, বনজীবি লিপি বেগম, বনজীবি তপন মন্ডল প্রমূখ।
মানবন্ধনে বক্তারা আরো বলেন, পুরো সুন্দরবন এবং সুন্দরবন সংলগ্ন নদ-নদী প্লাস্টিকে সয়লাব হয়ে গেছে। গবেষণায় সুন্দরবনের মাছে ক্ষতিকর মাইক্রো প্লাস্টিকের কণা পাওয়া গেছে। গত ২০ বছরে ২৪ বার অগ্নিকান্ডে ৭১ একর বনভূমি পুড়ে ছাই হয়েছে। বন বিভাগের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে রাজনৈতিক ভাবে প্রভাবশালী মহল মুনাফালোভী ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রয়োজনে এসব পরিকল্পিত অগ্নিকান্ড ঘটায়। সুন্দরবন রক্ষায় জনসচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি বন রক্ষায় দায়িত্বপ্রাপ্ত দপ্তরগুলি যদি দায়িত্ব পালনে সততা-নিষ্ঠা-দায়িত্বশীলতার পরিচয় না দেয় এবং তারা যদি প্রকৃতিপ্রেমিক না হয় তাহলেই অচিরেই সুন্দরবন ধ্বংস হয়ে যাবে। মানববন্ধনে বক্তারা সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকা থেকে বন বিনাশী প্রকল্প বাতিল করে পরিবেশবান্ধব টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানায়।
খুলনা গেজেট/এনএম