কুমিল্লার হোমনায় পরকীয়ার জেরে সৌদিপ্রবাসী মো. আবদুল জলিলকে হত্যার দায়ে স্ত্রী শাহনেওয়াজ বেগমসহ চারজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং একজনকে খালাস দিয়েছেন আদালত। বুধবার (২৭ মার্চ) কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ চতুর্থ আদালতের বিচারক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন এ রায় দেন। রায় ঘোষণাকালে খালাসপ্রাপ্ত আসামি মো. শাহজাহান আদালত কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চার আসামি পলাতক রয়েছেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামিরা হলেন- কুমিল্লার হোমনা উপজেলার কারারকান্দি গ্রামের মো. কুদ্দুস মিয়া (৩২), একই উপজেলার মঙ্গলকান্দি গ্রামের মাইক্রোবাস চালক আবদুল খালেক (২৮), একই উপজেলার কারারকান্দি গ্রামের মো. রাজিব (২৬) এবং নিহতের স্ত্রী মোসা. শাহনেওয়াজ বেগম। বেকসুর খালাস পাওয়া আসামি হলেন হোমনা উপজেলার গোয়ারী ভাঙ্গা গ্রামের হোমনা কাঁচাবাজার পাইপ ফিল্টার টিউবওয়েল ব্যবসায়ী মো. শাহজাহান (৪২)।
মামলার বিবরণে জানা যায়, আসামি মো. শাহজাহানের সাথে নিহতের স্ত্রী শাহনেওয়াজ বেগমের পরকীয়া প্রেম ছিল। এর জের ধরে আসামিরা সৌদিপ্রবাসী মো. আবদুল জলিলকে (৪৫) ঢাকায় চিকিৎসা করানোর কথা বলে নিয়ে যায়। ২০১৩ সালের ৯ জুন হতে ১০ জুন যেকোনো সময়ে হোমনা উপজেলার বাহেরখোলা গ্রামের কেরার মাজার সংলগ্ন স্থানে নিয়ে গলা কেটে হত্যা করে। বাদী তার বড়ভাই জলিলের লাশ শনাক্ত করেন।
এ ব্যাপারে নিহতের ছোটভাই হোমনা উপজেলার চেৎপুর গ্রামের মৃত সুলতান মিয়ার ছেলে মো. তাইজুল ইসলাম (৩৫) বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে হোমনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো. আব্দুল আল বাকি তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে আসামি কুদ্দুছ, আ. খালেক, রাজিব ও মূল পরিকল্পনাকারী নিহতের স্ত্রী শাহনেওয়াজকে গ্রেপ্তার করেন। ২০১৩ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আসামি রাজিব, শাহনেওয়াজ ও আ. খালেকের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি পর্যালোচনা করে আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে রায় দেন আদালত।
এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট মো. আবু ইউসুফ বলেন, আমরা আশা করছি উচ্চআদালত এ রায় বহাল রেখে দ্রুত রায় বাস্তবায়ন করবেন।
অপরদিকে আসামি পক্ষের কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট মো. আ হ ম তাইফুর আলম বলেন, রায়ের কপি হাতে পেলে উচ্চআদালতে আপিল করব।
খুলনা গেজেট/ এএজে