প্রধান শিক্ষক নিখিল রঞ্জন হাজরা জানতেন কম্পিউটার শিক্ষক হ্যাপী রানী মজুমদারের সনদপত্র জাল। তাই বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটি তো দূরের কথা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনাই তিনি মানছেন না। সেজন্য জাল সনদধারী শিক্ষক হ্যাপী রাণীর বিরুদ্ধে তিনি কোন ব্যবস্থা নেননি। বিধায় ওই শিক্ষক বিদ্যালয়ে বহাল তবিয়াতে রয়েছেন।’ বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সাংবাদিকদের এমনটাই জানালেন বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলা ত্রিপল্লী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি প্রকৌশলী মোঃ রফিকুল ইসলাম তাপস।
তিনি আরও জানান, চলতি বছরের ১৮ মে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অভ্যান্তরীণ নিরীক্ষা শাখা বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৬৭৮ জন জাল সনদধারী শিক্ষক/কর্মচারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশক্রমে অনুরোধ করেন। সহকারী সচিব মোঃ সেলিম শিকদার স্বাক্ষরিত ওই পত্রে জাল সদনধারী শিক্ষক কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ৭টি নিদের্শনা দেওয়া হয়। তারমধ্যে জাল সনদধারীর বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান প্রধান কর্তৃক ফৌজদারী মামলা দায়েরের নির্দেশনা রয়েছে। সারাদেশের ৬৭৮ জনের এই তালিকায় জাল সনদধারী হিসেবে বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার ত্রিপল্লী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কম্পিউটার শিক্ষক হ্যাপী রাণী মজুমদারের নাম রয়েছে। তার কাছে সরকারি আদায়যোগ্য অর্থ রয়েছে ১৩ লাখ ১০ হাজার ৬১০ টাকা।
নাম না প্রকাশ করা শর্তে শিক্ষক ও অভিভাবক সদস্যরা জানান, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার পর বিদ্যালয় ব্যাবস্থাপনা কমিটির একাধিক বৈঠকের পরও প্রধান শিক্ষক নিখিল রঞ্জন হাজরাকে বললেও রহস্যজনক কারণে তিনি কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।
এ ব্যাপারে ত্রিপল্লী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের জাল সনদধারী শিক্ষক হ্যাপী রাণী মজুমদার বলেন, ‘আমি স্থানীয় ভাবে কম্পিউটারে প্রশিক্ষণ নিয়েছি। মন্ত্রাণালয়ের আদেশের বিরুদ্ধে আমরা মামলা করেছি, জবাবও দিয়েছি। এর বেশী আমি বলতে পারবো না। জানতে হলে প্রতিষ্ঠানে গিয়ে জানেন।
ত্রিপল্লী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিখিল রঞ্জন হাজরা বলেন, ‘শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা দেখেছি। সভাপতি বা কেউ বললেই ব্যাবস্থা নেব নাকি। শুধু মাত্র মাউশি আমাকে লিখিত ভাবে জানালে আমি ব্যবস্থা নেব। আমার মনে হয় না হ্যাপী রানীর চাকরী যাবে। তাই তার বেতন বন্ধ করাটা অন্যায় হয়েছে।’
তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অভ্যান্তরীণ নিরীক্ষা শাখার সহকারি সচিব মো: সেলিম শিকদার জানান, জাল সনদধারী শিক্ষক/কর্মচারীদের তালিকা প্রকাশ করে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সবাইকে এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে হবে। যদি কেউ ব্যাবস্থা গ্রহণ না করে পরবর্তী নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।
খুলনা গেজেট/এএজে