সাতক্ষীরার কলারোয়ায় শেখ হাসিনার গাড়ী বহরে হামলা মামলায় তিনজন সাংবাদিকের সোমবার স্বাক্ষ্য প্রদানের দিন ধার্য রয়েছে। এনটিভি ও যুগান্তরের সাতক্ষীরা প্রতিনিধি সুভাষ চৌধুরি, আরটিভির রামকৃষ্ণ চক্রবর্তী ও দৈনিক সাতনদী পত্রিকার সম্পাদক হাবিবুর রহমান স্বাক্ষ্য প্রদান করবেন বলে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
সাতক্ষীরা চীপ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হুমায়ুন কবিরের আদালতে তাদের জবানবন্দি গ্রহণ করা হবে। এদিকে আলোচিত এই মামলা পরিচালনার জন্য ঢাকা থেকে অতিরিক্ত এ্যাটর্ণি জেনারেল এসএম মুনীরসহ ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল দুইদিন আগেই সাতক্ষীরায় এসেছেন। তবে সুপ্রীম কোর্টের এ্যাপিলেট ডিভিশনের চেম্বার জজ আদালতে লিভ টু আপীল শুনানীর পর তা খারিজ করে দেয়ায় আজ থেকে সাক্ষীদের জেরা করার কথা রয়েছে আসামী পক্ষের আইনজীবীদের। এরআগে এ মামলায় ১৫ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৬ জনের জেরা করেনি আসামী পক্ষের আইনজীবিরা।
সাতক্ষীরা দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর এড. আব্দুল লতিফ জানান, মামলাটির ১৬ থেকে ১৮ তম স্বাক্ষীদেরকে রাষ্ট্রপক্ষ আদালতে উপস্থাপন করার প্রস্তুতি নিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট তৎকালিন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ধর্ষণের শিকার এক নারীকে দেখতে আসেন। তিনি ঢাকায় ফেরার পথে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কলারোয়া বিএনপি অফিসের সামনে তার গাড়ি বহরে হামলা করেন বিএনপির নেতৃবৃন্দ। এ ঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোসলেম উদ্দীন বাদী হয়ে উপজেলা যুবদলের সভাপতি আশরাফ হোসেনসহ ২৭ জনের নাম উল্লেখ পূর্বক অজ্ঞাত ৭০/৭৫ জনের নামে থানায় ব্যর্থ হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন। পরে উচ্চ আদালতের নির্দেশে এক যুগ পর ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর কলারোয়া থানায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়। এরপর ২০১৫ সালের ১৭ মে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাতক্ষীরা-১ আসনের সাবেক এমপি হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে ৩০ জনকে স্বাক্ষী করে সম্পূরক অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা শেখ সফিকুর ইসলাম।
এদিকে সাতক্ষীরা চীপ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৯ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহণের পর ২০১৭ সালের ২১ সেপ্টেম্বর আসামীপক্ষের আবেদনে মামলার কার্যক্রম স্থগিতের আদেশ দেন উচ্চ আদালত। এরপর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে উচ্চতর আদালত চলতি বছরের ২২ অক্টোবর মামলাটির স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে নথি পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে মামলাটি নিষ্পত্তি করতে সাতক্ষীরা চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতকে নির্দেশ দেন। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী সাতক্ষীরার বিচারিক আদালতে মামলার কার্যক্রম অব্যহত আছে।
খুলনা গেজেট/এনএম