প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিস্তার পানির দাবি ছেড়ে দিয়ে এসেছেন বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। নাগরিক ঐক্যের উদ্যোগে ‘আজিজ, বেনজীর, মতিউরের অবিশ্বাস্য দুর্নীতি, প্রধানমন্ত্রীর দাসখত দেয়ার ভারত সফরের বিরুদ্ধে’ শিরোনামে মানববন্ধনটি আয়োজন করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর প্রসঙ্গে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, মোদির শপথ নেয়ার আগে গেছেন। ১৫ দিন পরেই আবার গেলেন। অনেকে বলেন, তিনি হাজিরা দিতে গেছেন। গেলেন কেন? কিছু পাওয়ার জন্য? আমাদের প্রধান দাবি ছিল- ভারত আমাদের পানি দেয় না। এগুলো নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে? আমাদের প্রধানমন্ত্রী তিস্তার পানির দাবি ছেড়ে দিয়ে এসেছেন। যে ট্রেন করিডোর দেয়া হয়েছে সেখানে যদি অস্ত্র যায়? সেনাবাহিনী যায়? আপনি তল্লাশি করতে পারবেন?
তিনি বলেন, সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল অব. আজিজ আহমেদ, পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, মিয়া সাহেবরা হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করলেও তাদের বিরুদ্ধে সরকার কোনো ব্যবস্থা নেয় নাই। গণমাধ্যমে লুটপাটের তথ্য প্রকাশের পর এখন তদন্তের নাটক করছে। একজন গরিব কৃষক ৩০ হাজার টাকা লোন নিয়ে পরিশোধ করতে না পারলে তাকে থানায় নিয়ে যায়। কিন্তু পুলিশ, সেনা প্রধানরা হাজার কোটি টাকা লুট করলো, তা কেউ দেখলো না?
মান্না বলেন, বেনজীর বিদেশে পালিয়ে গেছে, কবে কিভাবে কোন রাস্তা দিয়ে গেলো? জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য মতিউর রহমানও নাকি পালিয়েছেন। সরকার মতিউরের দুর্নীতি খুঁজে পেল না। একটা ছাগল খুঁজে বের করলো। ছাগলের কাছ থেকে সরকারের শিক্ষা নেয়া উচিত। এরা যখন অন্যায় করে তখন সরকার দেখে না? তিনি আরও বলেন, মতিউর যেদিন গেল সেদিনের আগে পর্যন্ত তার নামে কোনো মামলা, নিষেধাজ্ঞা নেই। যাওয়ার পরে বিদেশ যাওয়ার নিষেধাজ্ঞা দিল।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি বলেন, আমরা বিদেশে যাওয়ার সময় ইমিগ্রেশনে আটকে এসবি, ডিবি, এনএসআই, ডিজিএফআই সবার কাছে ফোন করে। আমার নামে মামলার চার্জশিট দিতে পারে নাই। কিন্তু আমার পাসপোর্ট দশ বছর আটকে রেখেছে। আজিজ, বেনজিরের পাসপোর্ট আটকে রাখা হলো না কেন? কারণ সরকার এদের রক্ষা করছে। তিনি বলেন, সড়কে নিরাপত্তা নাই, জিনিসের দাম কমাতে পারে না, আবার বড় বড় কথা বলে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা স্বাধীনতা এনেছিলাম। তো আমরা কি ঘুমিয়ে ছিলাম? আর ৭০ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের যারা এমপি হয়েছিল তাদের অধিকাংশই যুদ্ধ করেনি।
নাগরিক ঐক্যের সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব আনোয়ারের পরিচালনায় কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য রাখেন দলটির সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, দপ্তর সম্পাদক মহিদুজ্জামান, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ফেরদৌসী আক্তার প্রমুখ।
খুলনা গেজেট/কেডি