দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের মানুষের উন্নয়নে প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদার করার তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, “আমরা সবসময়ই মনে করি যে এই অঞ্চলের মানুষের উন্নয়নের জন্য প্রথমেই প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে আরো বেশি সহযোগিতামূলক সম্পর্ক প্রয়োজন কারণ আমাদের বৈদেশিক নীতি ‘সকলের সাথে বন্ধুত্ব এবং কারও প্রতি বিদ্বেষ নয়’।’’
ভারতের বিদায়ী হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলী দাশ রোববার গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিবেশী দেশগুলো তাদের সুবিধার্থে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম, সিলেট ও সৈয়দপুর বিমানবন্দর ব্যবহার করতে পারে। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ও ভারতের হাইকমিশনার দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন বলে জানিয়েছেন ইহসানুল করিম। কোভিড-১৯ পরিস্থিতি এবং রোহিঙ্গা সংকটও আলোচনায় উঠে আসে বলে জানান তিনি।
এই প্রসঙ্গে রীভা গাঙ্গুলী বলেন, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করছে। মহামারি রোধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকারের নেওয়া পদক্ষেপেরও প্রশংসা করেন তিনি। কোভিড-১৯ মহামারির মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নেরও প্রশংসা করেন হাইকমিশনার।
শেখ হাসিনা বলেন, এই সংকট চলাকালীন সব শ্রেণি-পেশার মানুষ একসঙ্গে কাজ করছে। ‘মুজিব বর্ষ’ উপলক্ষে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে আমরা অনেক অনুষ্ঠান উদযাপন করতে পারিনি।’ সরকারের নিয়মিত বৃক্ষরোপণ কার্যক্রমের পাশাপাশি মুজিব বর্ষের সময় আওয়ামী লীগ সারা দেশে এক কোটি গাছ লাগানোর কর্মসূচি নিয়েছে বলে জানান তিনি।
হাইকমিশনার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির একটি চিঠি প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন, যেখানে তিনি (মোদি) ৭৪তম জন্মদিন উপলক্ষে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এ সময় হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলীও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জন্মদিন উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানান।
প্রেস সচিব বলেন, জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানানোয় মোদি ও রীভা গাঙ্গুলীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
একাত্তরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদানের কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, ভারতের জনগণ এবং এর সব রাজনৈতিক দল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অভূতপূর্ব সমর্থন জানিয়েছিল এবং একইভাবে তারা বাংলাদেশের সঙ্গে ঐতিহাসিক স্থলসীমা চুক্তিকে সমর্থন করেছিল।
আগামী মঙ্গলবার দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ভার্চুয়ালি আলোচনা করতে পারেন বলে প্রধানমন্ত্রীকে জানান ভারতীয় হাইকমিশনার।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস এবং ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় উপ-হাইকমিশনার বিশ্বদীপ দে উপস্থিত ছিলেন।
বিদায়ী হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলী দাশ আগামী ১ অক্টোবর ঢাকা ছাড়বেন। দিল্লিতে ফিরে তিনি দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পূর্ব বিভাগের সচিব হিসেবে যোগ দেবেন। অপরদিকে বাংলাদেশে নিযুক্ত নতুন ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী আগামী ৫ অক্টোবর ঢাকায় এসে কাজে যোগদান করবেন।
খুলনা গেজেট/এনএম