এলএনজি আমদানি বন্ধ করে নবায়নযোগ্য শক্তির পথে এগিয়ে চলার আহবানে সাতক্ষীরায় এক ব্যতিক্রমী প্রচারাভিযানের আয়োজন করা হয়। স্বদেশ সাতক্ষীরা, ক্লিন এবং বিডব্লিউজিইডি এর যৌথ উদ্যোগে শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১০টায় শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে এই প্রচারাভিযানের আয়োজন করা হয় ।
প্রচারাভিযানে অংশগ্রহণকারীরা দাবি জানিয়ে বলেন, এলএনজি আমদানির ওপর নির্ভরতা কমিয়ে নবায়নযোগ্য শক্তির উন্নয়নে বিনিয়োগ করতে হবে।
সরকার যে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে এলএনজি আমদানি করছে, তা দেশের জনগণের জন্য আর্থিক চাপ তৈরি করছে এবং পরিবেশকে আরও ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে। এলএনজি কোনো দীর্ঘমেয়াদী সমাধান নয়, বরং এটি একটি ব্যয়বহুল ও বিপজ্জনক নির্ভরতা সৃষ্টি করছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে এলএনজি পোড়ানোর ফলে বিপুল পরিমাণ কার্বন-ডাই-অক্সাইড এবং মিথেন গ্যাস নির্গত হয়, যা বৈশ্বিক উষ্ণায়ন এবং জলবায়ু সংকটকে ত্বরান্বিত করে। এছাড়া, বিশ্ববাজারে এলএনজির দাম ক্রমাগত ওঠানামা করছে, যার ফলে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে।
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের জন্য নবায়নযোগ্য শক্তি বিশেষ করে সৌর ও বায়ু শক্তি একটি বাস্তবসম্মত ও দীর্ঘমেয়াদি সমাধান হতে পারে। সাতক্ষীরার মতো জেলা গুলোতে সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ে তুললে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব হবে এবং আমদানি নির্ভরতা অনেকাংশে কমে যাবে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, আমরা চাই, সরকার অবিলম্বে নবায়নযোগ্য শক্তির ওপর বিনিয়োগ বাড়িয়ে এলএনজি আমদানি বন্ধ করুক। এটি শুধু পরিবেশ রক্ষা করবে না, বরং দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাও নিশ্চিত করবে।
স্বদেশ সাতক্ষীরার মুখপাত্র মাধব চন্দ্র দত্ত বলেন, আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ, সাশ্রয়ী এবং পরিবেশবান্ধব শক্তির বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই। এই আন্দোলন শুধু সাতক্ষীরায় সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং এটি সারাদেশে সম্প্রসারিত হবে।
তিনি আরও বলেন, এখন সময় এসেছে নবায়নযোগ্য শক্তির পথে এগিয়ে যাওয়ার। টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে সরকারকে এলএনজি আমদানি বন্ধ করে নবায়নযোগ্য শক্তিতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।
এই প্রচারাভিযান শুধু সাতক্ষীরাবাসীর নয়, বরং সমগ্র বাংলাদেশের মানুষকে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে মুক্তি এবং নবায়নযোগ্য শক্তির দিকে ধাবিত হওয়ার জন্য অনুপ্রাণিত করবে। সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এলএনজি আমদানির বিরুদ্ধে এবং নবায়নযোগ্য শক্তির পক্ষে এই আন্দোলন আরও জোরদার করা হবে।
প্রচারাভিযানে অংশ নেন পরিবেশবাদী, গবেষক, শিক্ষার্থী, সমাজকর্মী এবং সাধারণ জনগণ।
খুলনা গেজেট/এনএম