সাতক্ষীরার তালা থানা পুলিশের এসআই মামুনের বিরুদ্ধে চেক প্রতারণার মামলায় ওয়ারেন্টের প্রকৃত আসামিকে গ্রেপ্তার না করে ভিন্ন নামের এক নিরীহ নারীকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করার অভিযোগ উঠেছে।
ভুক্তভোগী রুহী আকতার স্মৃতি নামের ওই নারী মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) রাতে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এসে সাংবাদিকদের কাছে এই অভিযোগ করে তিনি বলেন, পুলিশের দায়িত্বে অবহেলার কারণে বিনা অপরাধে তিন দিন তাকে কারাভোগ করতে হয়েছে।
তালা উপজেলার বারুহাটি গ্রামের আরিফুল ইসলাম মালীর স্ত্রী ভুক্ত ভোগী রুহী আকতার স্মৃতি জানান, গত ২৩ ডিসেম্বর বেলা ৩টার দিকে বাড়িতে ভাত খাওয়ার অবস্থায় তালা থানার এসআই মামুন চেক প্রতরণার একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করেন। এ সময় এসআই মামুনের কাছে তাকে গ্রেপ্তারের ওয়ারেন্টের কাগজ দেখতে চাইলে তিনি সংশ্লিষ্ট কাগজ না দেখিয়ে বারুহাটি গ্রামের পুলিশের দালাল শামিম খানের সহযোগিতায় তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করেন।
পুলিশের দায়িত্বে অবহেলার কারণে তিন বছরের একটি বাচ্চাকে রেখে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
ভুক্তভোগী স্মৃতির শশুর আব্দুল কাদের মালী জানান, বিনা অপরাধে গ্রেপ্তারকৃত রুহী আকতার স্মৃতির স্বামীর নাম আরিফুল ইসলাম মালী। তার বাবার নাম শহর অলী ও মায়ের নাম হালিমা বেগম। গ্রাম বারুইহাটি, তালা।
অপরদিকে, এ মামলার আসামী সুমী আক্তারের স্বামীর নাম আরিফুল ইসলাম বিশ্বাস, মায়ের নাম সালমা বেগম এবং ঠিকানা একই। কিন্তু এসআই মামুন তাদের প্রতিপক্ষের দ্বারা প্রলুব্ধ হয়ে দালাল শামিম খানের সহযোগিতায় স্মৃতিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। দায়িত্ব অবহেলার কারণে তিনি ওই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণে পুলিশের উর্দ্ধতন কর্তপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করেন।
রুহী আকতার স্মৃতির স্মজনরা মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) সাতক্ষীরা আমলী আদালত-৩ এ তার জামিন আবেদন করলে বিচারক শুনানী শেষে তার জামিন মঞ্জুর করেন। এরপর জামিন নিয়ে তাকে জেলখানা থেকে বের করার পর রাতে মামলার কাগজপত্র নিয়ে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে আসেন।
মামলার বাদি জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন তালা উপজেলা শাখার ম্যানেজার সৈয়দ ইমারন আলী (চলতি দায়ীত্বে) বলেন, আমি মাত্র এক মাস আগে এই শাখায় যোগদান করেছি। কাগজপত্র না দেখে বিস্তারিত কিছু বলতে পারছি না।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত তালা থানার এসআই মামুনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, স্থানীয়দের কাছ থেকে শুনে তার নাম সুমি জেনেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
ভুক্তভোগির প্রতিপক্ষ কর্তৃক প্রলুব্ধ হয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নে জবাবে তিনি তা অস্বীকার করেন।
তালা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সেলিম মোল্লা জানান, এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না।
খুলনা গেজেট/ টিএ