খুলনায় পেঁয়াজের সাথে পাল্লা দিয়ে আদা, রসুন ও জিরার দামও ঊর্ধ্বমুখি। সপ্তাহ খানেকের ব্যবধানে বেড়েছে কাঁচা মরিচের দামও। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধিতে হাসফাস করছে নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষ।
নগরীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বর্তমানে পেঁয়াজ ৮০ টাকা, রসুন মানভেদে ১৩০-১৪০ টাকা ও জিরা ৭৫০-৮০০ টাকা ও আদা ২৮০-৩০০ টাকায় বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। সপ্তাহ খানেকের ব্যবধানে কাঁচা মরিচ মানভেদে ১২০-২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সোনাডাঙ্গাস্থ পাইকারী কাঁচা বাজারের ব্যবসায়ী মুন্সি আ: হাই বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে বাজারে কাঁচা মরিচের সংকট রয়েছে। প্রতিদিন এ বাজারে ১০ ট্রাক মরিচের প্রয়োজন হলেও বর্তমানে আসছে ৬ ট্রাক। সংকটের কারণে মূলত এ পণ্যটির দাম বেড়েছে।
একই বাজারের অপর ব্যবসায়ী বলেন, বৃষ্টির কারণে অনেক কাঁচা মরিচ নষ্ট হয়ে গেছে। তাছাড়া ব্যবসায়ীরা এক বাজারে পণ্যের দাম বৃদ্ধির কথা জানতে পেরে সেই বাজারে সেই পণ্যের আমদানি করে বেশি। তিনি অভিযোগের সুরে আরও বলেন, এ পণ্যটির সংকট বাজারে নেই, যে দাম এত বেশী হবে। তিনি পাইকারী দরে এ পণ্যটি ৬৫-৭০ টাকায় বিক্রি করছেন।
পেঁয়াজ ব্যবসায়ী মালেক বলেন, প্রতিকেজি পেঁয়াজ তিনি ৭২ টাকায় বিক্রি করছেন। পেঁয়াজ আমদানি হলে এ পণ্যটির দাম কমে যাবে।
তিনি আরও বলেন, রোজার ঈদের পর থেকে রসুনের দাম ধাপে ধাপে বেড়েছে। দেশে যে পরিমাণ রসুন উৎপাদন হয় তা দিয়ে চাহিদা মেটানো সম্ভব নয়। রসুনের দাম বৃদ্ধির জন্য তিনি ডলারের সংকটকে দায়ি করেছেন। তিনি বলেন, ভারত ও চীন থেকে রসুন আমাদানি করা হচ্ছে। সেখানে এ পণ্যটির দাম বেশী হওয়ায় আমাদের দেশের বাজারে এ পণ্যটির দাম বেশী।
একই বাজারে আদার ব্যবসায়ী ইমরান বলেন, ঈদের পর থেকে এ পণ্যটির দাম ধাপে ধাপে বেড়েছে। বর্তমানে তিনি ইন্ডিয়ান আদা ৩০০ ও মায়ানমারের আদা ২৮০ টাকায় বিক্রি করছেন। তিনি বলেন, দেশে আদার উৎপাদন বেশী হয়না। আদা বাইরে থেকে আমদানি করতে হয়। সেখানে এ পণ্যটির দাম বেশী।
খুলনার বড় বাজারের ব্যবসায়ী তানভীর বলেন, জিরা আমদানি নির্ভর পণ্য হওয়ায় ডলারের উপর নির্ভর করতে হয় এ পণ্যটির আমাদানির জন্য। তিনি বলেন, বর্তমানে ইন্ডিয়া ও আফগান জিরা যথাক্রমে ৭৫০-৮০০ টাকায় বিক্রি করছেন। বহিবিশ্বে ডলারের দাম উত্থান পতনের জন্য এ পণ্যটির দাম বেড়ে চলেছে। বর্তমানে জিরার দাম এ মূল্যে স্থিতিশীল রয়েছে।
নগরীর টুটপাড়া বাজরের খুচরা ব্যবসায়ী মোহাম্মদ মোশাররফ বলেন, প্রতিটি জিনিসের দাম বাড়ছে। আমাদের কিছুই করার নাই। ভারত থেকে পেঁয়াজ না আসলে দাম এমনই থাকবে মনে হচ্ছে। কারণ, আমরা বেশি দামে কিনে কম দামে তো বিক্রি করতে পারি না। পাল্লা প্রতি যে হারে দাম বৃদ্ধি করা হয় খোলা বাজারেও কেজি প্রতি তেমন মূল্য বাড়ে।
“বাজারে কিছুই কেনার পরিস্থিতি নাই। যা কিছু কিনতে যাই আগুন জ্বলা দাম। এক হাজার টাকা নিয়ে গেলেও বাজার হয় না। চাল, ডাল, তেল, পেঁয়াজ বা মরিচ কিছুই কেনার মতো পরিস্থিতি নেই। বাজারে আসলেই টাকা হাওয়ার মতো উড়ে যাচ্ছে। সবকিছুর দাম বাড়লেও আয় তো বাড়েনি।” নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ঊর্ধ্বগতিতে এভাবেই নাভিশ্বাস ছাড়ছিলেন বেসরকারি কর্মকর্তা সালাউদ্দিন ঝন্টু। সোমবার বড় বাজারে সদয় কিনতে এসে এভাবে নিজের অসহাত্ব প্রকাশ করেন তিনি।
খুলনা গেজেট/এনএম