জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট সংকট কাটিয়ে উঠতে কম সুদে ঋণ দেওয়া, ঋণ মওকুফ ও প্রযুক্তি ব্যবহারে সবার সুযোগ নিশ্চিতের জন্য বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ও ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোকে অভিযোজন ও প্রশমনের কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য উন্নত দেশগুলো প্রতি বছর ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, সেটি বাস্তবায়নেরও আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
‘হাই লেভেল প্যানেল-ক্লোজিং সেশন অব দ্য ইউএনএফসিসিসি রেইস টু জিরো ডায়ালগ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বৃহস্পতিবার রাতে ভিডিওবার্তায় দেওয়া এক বক্তব্যে এ আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। বার্তা সংস্থা ইউএনবি এ খবর জানিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কাল নয়, আজই পৃথিবীকে রক্ষা করার জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার সময়। প্যারিস চুক্তির কঠোর বাস্তবায়নই একমাত্র উপায় এবং ক্ষয়-ক্ষতির বিষয়টিকে মূল আলোচনায় আনতে হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন সবার জন্যই এক চূড়ান্ত বাস্তবতা হলেও, বাংলাদেশের মতো বেশি ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর কাছে এটি আরো স্পষ্ট।
জীবন ও মূল্যবান সম্পদ বাঁচাতে বিশ্ব নেতৃত্বকে অবশ্যই কার্বন নিঃসরণ কমানোর জন্য সাহসী সিদ্ধান্ত নিতে হবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা যদি আরো বৃদ্ধি পায়, তাহলে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ঝুঁকিতে থাকা অনেক দেশের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়তে পারে।’
করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যেই এ বছর বাংলাদেশ দুটি ঘূর্ণিঝড়ের পাশাপাশি কয়েক দফা বন্যার মুখোমুখি হয়েছে, যা মানুষের জীবন-জীবিকাকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এগুলো সবই বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে ঘটেছে।’
শেখ হাসিনা আরো বলেন, ‘বৈশ্বিক তাপমাত্রা এরই মধ্যে প্রাক-শিল্প যুগ থেকে প্রায় ১ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড বেড়েছে। প্যারিস জলবায়ু চুক্তি অনুযায়ী বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের ওপরে উঠতে দেওয়া যাবে না।’
‘যদিও বর্তমান পূর্বাভাস অনুযায়ী, এ শতকের শেষ দিকে তাপমাত্রা ৪.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও বেশি বৃদ্ধি পেতে পারে এবং এখনই পদক্ষেপ না নিলে পৃথিবী পুরোপুরি বসবাসের উপযোগী থাকবে না,’ যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘বাংলাদেশে এ বছর আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করছি। বঙ্গবন্ধু অনেক আগেই এ দেশের মানুষের জন্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি অনুধাবন করেছিলেন। এ হুমকি কাটিয়ে উঠতে এবং মানুষের অধিকার রক্ষায় অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন তিনি।’ ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করার জন্য বাংলাদেশে সরকারের গৃহীত নানা উদ্যোগের কথা এ সময় তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।