তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে শ্রমিকের পাওনা বুঝিয়ে না দেওয়ার অপরাধ সংঘটনের জন্য এবং তার প্রতিষ্ঠান ঘুষ দিয়ে সেটি ম্যানেজ করার অপচেষ্টাও করেছে।’
আজ সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় ড. ইউনূসসহ চার জনের ছয় মাসের কারাদণ্ড ও ৩০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন ঢাকার একটি শ্রম আদালত।
রায় ঘোষণার পর আপিলের শর্তে ড. ইউনূসকে জামিন দেন আদালত।
এ বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘পৃথিবীর বহু নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ফৌজদারি ও দেওয়ানী অপরাধে শাস্তিপ্রাপ্ত হয়েছেন, অনেকে অনেক দিন জেলও খেটেছেন। যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার পাওয়া একজন আরেকজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন, এমন ঘটনাও আছে।’
তিনি বলেন, ‘ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি যথাযথ সম্মান রেখেই বলতে চাই, তিনি বহু বছর ধরে শ্রমিকদের পাওনা বুঝিয়ে দেননি। এরপর যখন শ্রমিকরা আদালতে গেছে, তখন আদালতের বাইরে দুজন শ্রমিক নেতাকে তার প্রতিষ্ঠান থেকে তিন কোটি করে ছয় কোটি টাকা ঘুষ দিয়ে ম্যানেজ করার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু সাধারণ শ্রমিকরা তো আর টাকা পায়নি, দুজন নেতা টাকা পেলে তো আর হবে না। সে কারণে সাধারণ শ্রমিকরা মামলায় গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘শ্রমিকের অধিকার নিয়ে তো অনেক কথা হয়, শ্রমিক অধিকার নিশ্চিত করার জন্য আমাদের বন্ধু রাষ্ট্রগুলো অনেক কথা বলে। বন্ধু রাষ্ট্ররা গার্মেন্টস শ্রমিকের পাওনা আদায়ের কথা বলে। আশা করবো তারা এ ব্যাপারেও কথা বলবে। শ্রমিকের পাওনা বুঝিয়ে না দেওয়ার কারণেই অর্থাৎ একটি অপরাধ সংগঠিত হয়েছে বিধায় মামলা হয়েছে।’
নির্বাচন নিয়ে জাতিসংঘকে দেওয়া বিএনপির চিঠির বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি তো এখন দিক-বিদিক জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে। তারা ভেবেছিল দেশে নির্বাচন হবে না এবং নির্বাচন হলেও জনগণের অংশগ্রহণ থাকবে না। এখন তারা বুঝতে পেরেছে, জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণে একটি উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছে, যেখানে বিএনপির সমর্থকরাও যোগ দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে থেকেই পেট্রোলবোমা, সন্ত্রাস, অগ্নিসন্ত্রাস চালিয়ে মানুষ হত্যা করে; মা ও শিশুকে একসঙ্গে হত্যা করে; ট্রেনলাইন কেটে; ট্রেনের ওপর পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ করে; গাড়িতে, বাসে মানুষের ওপর পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ করে নির্বাচন ভণ্ডুল করতে চেয়েছে, কিন্তু পারেনি। না পেরে তারা এখন তাদের সেই পুরনো কায়দায় বিদেশিদের কাছে চিঠি লেখা শুরু করেছে।’
‘যাদের কাছে চিঠি লিখছে, তারাও এই নির্বাচনকে গ্রহণ করেছে, পর্যবেক্ষক পাঠিয়েছে এবং তারা বলছে যে, নির্বাচন যেন সহিংসতামুক্ত হয়। দেশের বিরুদ্ধে বহু চিঠি বিএনপি লিখেছে, এই চিঠিতে কোনো লাভ হবে না,’ যোগ করেন তিনি।
‘ভোট বন্ধ করার জন্য বিএনপি এখন প্রার্থীদের ওপর হামলার পরিকল্পনা করছে’ উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কোনো নির্বাচনী এলাকায় কোনো প্রার্থী মারা গেলে সেই আসনে নির্বাচনটা বন্ধ হয়ে যায়। সে কারণে তারা এই পরিকল্পনা করেছে। তবে সন্ত্রাসী দলের মতো এ সব ষড়যন্ত্র করে কোনো লাভ হবে না।’
খুলনা গেজেট/ টিএ