খুলনা, বাংলাদেশ | ২ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৭ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  দেশ টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক গ্রেপ্তার

পুলিশের হাতে জব্দ হওয়া ‘সাপের বিষে’ আটা ও সাগু দানা!

গেজেট ডেস্ক

গত বছর ২৫শে নভেম্বর পুলিশের তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি গাজীপুর থেকে প্রায় নয় কোটি টাকা মূল্যের সাপের বিষসহ দুইজনকে আটক করেছে বলে জানায়। গাজীপুর থেকে সাপের বিষ নামে যে পদার্থ সিআইডি জব্দ করে সেটা আদৌ সাপের বিষ কিনা তা পরীক্ষা করার জন্য আদালতের নির্দেশ হয়।

একই সাথে ঢাকার দক্ষিণখান থেকে জব্দ করা সাপের বিষের নমুনা পরীক্ষা করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজির অধ্যাপক মোঃ আবু রেজা।

অধ্যাপক বলেন, দু্টি স্থান থেকে সাপের বিষের ২০টা নমুনা পরীক্ষা করেছেন। এর একটিতেও সাপের বিষ নেই।

“আমরা কোবরা ভেনমের যে প্রোফাইল পাই, এটাতে তার কিছুই নেই। একদম বেজলাইনের কাছাকাছি। সব ধরণের এক্সপ্রেরিমেন্ট করে আমরা একটা রিপোর্ট দেয় যে এটা কোন ভাবেই সাপের বিষ হতে পারে না। আমরা বরং যেটা পেয়েছে সেটা হল আটা বা ময়দা, সার্ফ এক্সেল, সাগু দানা, কোমল পানীয় এমন নিত্য ব্যবহার্য জিনিস,” বলেন তিনি।

তিনি বলছেন, যে পরিমান সাপের বিষ পুলিশ জব্দ করেছে বলে দাবি করে সেটা সাপের কাছ থেকে সংগ্রহ করতে ১৫ থেকে ২০ বছর সময় লাগবে।

গাজীপুরে সাপের বিষের মামলার সিআইডির তদন্তকারী কর্মকতা প্রবীর কুমার ঘোষ বলছেন, যারা আটক আছে তাদের বিরুদ্ধে এখন প্রতারণার অভিযোগ আনা হবে।

তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কেন কোন পরীক্ষা ছাড়াই এটা সাপের বিষ জব্দ করেছেন এমন খবর গণমাধ্যমে প্রচার করে?

 

এমন প্রশ্নে প্রবীর কুমার ঘোষ বলছেন, তাদের যেভাবে জারগুলো উপস্থাপন করা হয়েছে সেটা দেখে সাধারণ মানুষের পক্ষে বোঝার উপায় নেই যে এটা সাপের বিষ না।

তিনি বলেন “আমাদের কাছে একটা ভিডিও আছে সেটা দেখলে তাৎক্ষনিকভাবে যে কেউ মনে করবে এটা সাপের বিষ। কারণ যে রকম ছবি, যে রকম লেখা, তারা আউটলুকটা এমনভাবে তৈরি করেছে, কোন সাধারণ মানুষের পক্ষে সেটা তৈরি করা অসম্ভব।”

বাংলাদেশে সাপের বিষের কোন বাণিজ্যিক চাহিদা বা কোন শিল্পে সরাসরি ব্যবহারের নজির খুব কম।

তাহলে কোটি কোটি টাকার বিনিময়ে সাপের বিষের নামে এসব পদার্থ কেন কেনাবেচা চলছে?

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং অপরাধ বিশ্লেষক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন বলেন, বিষয়টা পারস্পারিক সাংঘর্ষিক।

একদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কোন পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই সেটা গণমাধ্যমে সাপের বিষ হিসেবে প্রচার করছে। অন্য দিকে গবেষণায় দেখা যাচ্ছে এগুলো আদৌ সাপের বিষ না, বলেন তিনি।

তবে তিনি বলছেন, প্রতারণার নতুন একটা কৌশল হতে পারে এই সাপের বিষ।

“যেহেতু সাপের বিষ অনেক দুষ্প্রাপ্য এবং এর মূল্যও অনেক বেশি। সেটাকে কেন্দ্র করে দেশি এবং বিদেশি একটা চক্র প্রতারণার একটা ফাঁদ তৈরি করতে পারে। এই ব্যাপারে রাষ্ট্রীয় যে রেগুলেশন আছে, সেটা আরো বেশি কার্যকর করা দরকার।”

দু’হাজার বিশ সালে ঢাকার দক্ষিণখান থেকে কাঁচের জারে রক্ষিত অবস্থায় সাপের বিষসহ কয়েকজনকে র‍্যাব আটক করে। র‍্যাবের পক্ষ থেকে তখন দাবি করা হয় প্রায় নয় কেজি সাপের বিষ পাওয়া যায় আটককৃতদের কাছে।

খুলনা গেজেট/ এস আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!