বাংলাদেশে আর্থিক খাত থেকে ৩ হাজার কোটি টাকার বেশি লুটপাটে অভিযুক্ত সাবেক ব্যাংকার পি কে হালদারকে ভারতের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ফেরত চেয়েছে ঢাকা। তবে ঢাকায় দেশটির হাইকমিশনার ইঙ্গিত দিয়েছেন, এই প্রত্যর্পণ সহজ হচ্ছে না।
গত শনিবার পশ্চিমবঙ্গে ধরা পড়েছেন পি কে হালদার, যিনি এতদিন কানাডায় ছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছিল। তাকে গ্রেপ্তার করে এরই মধ্যে ১০ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে দেশটির একটি তদন্ত কর্তৃপক্ষ।
ভারত সরকার তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ এনেছে। জালিয়াতি করে ভারতীয় নাগরিকত্ব, জাতীয় পরিচয়পত্র, আধার কার্ড, রেশন কার্ড, প্যান কার্ড গ্রহণের ঘটনায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স, ফাস ফাইন্যান্স, পিপল লিজিং ও বিআইএফসিতে লুটপাটে নাম আসা পি কে হালদার ধরা পড়ার পর থেকেই বাংলাদেশে আলোচনা, কবে তিনি ফিরবেন, কবে তাকে বিচারের মুখোমুখি করা হবে, কবে ক্ষতিগ্রস্তরা তাদের টাকা ফেরত পাবেন।
বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশে ভারতের রাষ্ট্রদূত বিক্রম দোরাইস্বামীর সঙ্গে বৈঠক করেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। তিনি জানান, তারা পি কে হালদারকে আনুষ্ঠানিকভাবে ফেরত চেয়েছেন।
কবে তাকে আনা হচ্ছে- এমন প্রশ্নে সচিব বলেন, আইনি প্রক্রিয়া শেষে বিষয়টি পরিষ্কার হবে।
তবে দোরাইস্বামী যা বলেছেন, তাতে স্পষ্ট যে পি কে হালদারকে ফেরানোতে বিলম্ব হবে।
তিনি বলেন, এটি একটি আইনি বিষয়। আমাদের কাছে যা তথ্য আছে, তার ভিত্তিতে বাংলাদেশকে জানানো হবে। বুঝতে হবে, এটি কিন্তু বড়দিনের কার্ড বিনিময় নয়। আমি মনে করি, এ ধরনের বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়। সেটি আস্তে আস্তে হতে দিন। এ নিয়ে আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করছি।
পি কে হালদারকে ভারত থেকে ফেরত আনতে সময় লাগতে পারে। তাকে আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ফেরত পাঠানো হবে।
তবে এ বিষয়ে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করার কথাও বলেন দোরাইস্বামী। বলেন, তার (পি কে হালদার) বিষয়ে কথা হয়েছে। এটি দুই দেশের নিয়মিত সহযোগিতার একটি অংশ।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে পি কে হালদারকে ভারত গ্রেপ্তার করেছে বলেও দোরাইস্বামী তাকে জানিয়েছেন বলেও জানান পররাষ্ট্র সচিব।
পি কে হালদারের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার নানা তথ্য দিয়েছে জানিয়ে দোরাইস্বামী বলেন, দুই দেশের মধ্যে অপরাধমূলক তৎপরতা দমনের জন্য প্রয়োজনীয় সহযোগিতা রয়েছে। বাংলাদেশ সরকার ভারতের সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে তথ্য দিয়েছে। আমরা তা যাচাই করছি। এ ক্ষেত্রে আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে। বাংলাদেশ ও ভারতের সংঘবদ্ধ অপরাধ ও অপরাধীদের দমনের জন্য সহযোগিতা রয়েছে।