সাতক্ষীরা জজ কোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর এড. আব্দুল লতিফ এর সনদ জালিয়াতি, অনিয়ম ও দূর্ণীতির প্রতিবাদে আইনজীবী ও গ্রামবাসিরা পৃথক মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ ও কামারবায়সা গ্রামবাসির ব্যানারে সোমবার (২৩ নভেম্বর) সকাল ১০টায় জজ কোর্টের শহীদ মিনার পাদদেশে এই পৃথক কর্মসূচি পালিত হয়।
সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক এবং সাবেক অতিরিক্ত পিপি এড. আজহার হোসেনের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সাবেক পিপি এড. ওসমান গণি, এড. আবু রায়হান, এড. সাহেদুজ্জামান সাহেদ, সাবেক অতিরিক্ত জিপি এড. নওশের আলী, গ্রামবাসীর পক্ষে আব্দুল লতিফের ভাইপো মোজাম্মেল হক, আকবর আলী, নজরুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা রওশান আলী, মুক্তিযোদ্ধা রুস্তুম আলীর স্ত্রী রাজেয়া বেগম প্রমুখ।
আইনজীবী বক্তারা বলেন, বর্তমান জজ কোর্টের পিপি অ্যাড. আব্দুল লতিফ পিপিশিপ দেওয়ার নাম করে ১৫ জন আইনজীবীর কাছ থেকে মাথাপিছু ৭০ হাজার টাকা করে ঘুষ নিয়েছেন। পিপিশিপ দেওয়ার নাম করে অহেতুক কালক্ষেপণ করায় টাকা ফেরৎ চাইলে তাদেরকে হেঁকে বের করে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় আব্দুল্লাহ আল মামুন সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেছেন। টাকা ফেরৎ না পাওয়ায় অ্যাড. সায়েদুজ্জামান বাদি হয়ে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন। ওই মামলায় প্রতারিত অপর দু’ আইনজীবী সাক্ষী হয়েছেন। পৃথকভাবে ৮৪ হাজার ও দুই লাখ টাকা প্রতারণার অভিযোগে দক্ষিন কামারবায়সা গ্রামের নজরুল ইসলাম ও আকবর আলী বাদি হয়ে লতিফের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। এছাড়া আকবর আলী জেলা আইনজীবী সমিতি বরাবর অভিযোগ করেছেন।
বক্তারা আরো বলেন, এড. আব্দুল লতিফ বিডিআর এ চাকুরি করা কালিন যে স্নাতক সনদ সংগ্রহ করেছেন তা যথাযথ নয়। ওই সনদ যাঁচাই এর জন্য কয়েকজন আইনজীবী আইন মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেছেন। ২০০২ সালে কলারোয়ায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রি শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলা মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এড. জিল্লুর রহমান আসামীপক্ষে অবস্থান নেওয়ার তৎকালিন পিপি এড. ওসমান গণি তাকে বহিষ্কার করেন। কিন্তু বর্তমান পিপি তাকে পিপিশিপ দিয়ে পুরষ্কৃত করেছেন। ঘুষ দূর্ণীতির বিনিময়ে তিনি স্বাধীনতা বিরোধী আইনজীবীদের পিপিশিপ দিয়েছেন। এসব নিয়ে আইনজীবীরা প্রতিবাদ ও প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিলে তাদেরকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
বক্তারা বলেন, জেলা যুবলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক হাসানুজ্জামান ডাবলুর স্ত্রী বিপাশাকে ফুসলিয়ে নিয়ে এক ব্যাংক কর্মকর্তার বাড়িতে ভাড়ার ঘটনার প্রতিবাদ করায় ডাবলুকে কুপিয়ে জখম করেছে লতিফ ও তার লোকজন। এ ঘটনায় ডাবলু বাদি হয়ে শুক্রবার থানায় এজাহার দিয়েছেন। জমি নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে লতিফের নির্দেশে তার ছেলে রাসেল এর নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা রবিবার দুপুরে তার বড় ভাই আহাদ, ভাবী সেলিনা, ভাইপো তোফাজেজ্ল, মজনু ও মোজাম্মেলকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করেছে। তারা বর্তমানে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এসব কারনে আব্দুল লতিফ অবিলম্বে পিপিশিপ থেকে পদত্যাগ না করলে বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাকে বহিষ্কার না করলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরাজয় হবে। বক্তারা পিপি এড. আব্দুল লতিফকে বহিষ্কার করে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
তবে এ ব্যাপারে জজ কোর্টের পিপি নিজেকে নির্দোষ দাবী করে বলেন, তার ভাল কাজে ঈর্ষান্বিত হয়ে ওসমান গণি ও সাহেদুজ্জামানসহ একটি মহল তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে।
খুলনা গেজেট/এনএম