গত ২২ শে ডিসেম্বর নিয়মিত এক ব্রিফিংয়ে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা ‘ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের শাহীনবাগে যাওয়াকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে দেশটির হস্তক্ষেপের চেষ্টা’ বলে মন্তব্য করেছেন।
রুশ ভাষায় করা ওই ব্রিফিংয়ের ইংরেজি ট্রান্সক্রিপ্ট আজ (রবিবার) গণমাধ্যমকে সরবরাহ করেছে ঢাকাস্থ রুশ দূতাবাস যেখানে দেখা যায়ঃ বাংলাদেশের নাগরিকদের অধিকারের প্রতি যত্নবান হওয়ার অজুহাতে ক্রমাগতভাবে এ দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়াদিতে যুক্তরাষ্ট্র প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে এমন অভিযোগ করে রুশ মুখপাত্র বলেছেন, বাংলাদেশে বৃটিশ ও জার্মান কূটনৈতিক মিশনে তার (মার্কিন রাষ্ট্রদূতের) সহকর্মীরা (বৃটিশ হাইকমিশনার, জার্মানির রাষ্ট্রদূত) একই ধরনের কাজ করছেন।
খবরটি বাংলাদেশের গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত জার্মানির রাষ্ট্রদূত আখিম ট্র্যোস্টার। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে নিজের অফিসিয়াল একাউন্ট থেকে আখিম ট্র্যোস্টার, রুশ মুখপাত্রের বক্তব্য নিয়ে করা প্রথম আলো ইংরেজি ভার্সনের একটি রিপোর্টের লিংক শেয়ার করেছেন যেটির শিরোনাম “যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের শাহীনবাগ সফর বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ: রাশিয়া”।
তার সাথে ক্যাপশনে জার্মান রাষ্ট্রদূত ‘যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের শাহীনবাগ সফর’ এর দিকে সুস্পষ্ট ইঙ্গিত করে তার সাথে ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার হামলার তুলনা করে লিখেছেনঃ
“(পিটার হাসের শাহীনবাগে যাওয়া) একেবারেই, ক্ষমার অযোগ্য! একটি গণতান্ত্রিক সার্বভৌম রাষ্ট্রের উপর নৃশংস বেআইনি আক্রমণ, হাজার হাজার মানুষকে হত্যা এবং অপহরণ, অতি প্রয়োজনীয় বেসামরিক ইউক্রেনীয় অবকাঠামো ধ্বংস করা, পুরো বিশ্বকে কষ্ট দেওয়ার চেয়েও অনেক বেশি মারাত্মক।”
উল্লেখ্য, এর আগে গত মঙ্গলবার ঢাকাস্থ রাশিয়ান দূতাবাসের স্বপ্রণোদিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, মস্কো বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ কোনো বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার নীতি গ্রহণ করেছে। ওই বিবৃতিতে কারও নাম উল্লেখ না করলেও যুক্তরাষ্ট্র তথা পশ্চিমা বিশ্বের দিকে ইঙ্গিত করে বলা হয়েছিল, “গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক্ষার অজুহাতে যারা নিজেদেরকে ‘বিশ্বের শাসক’ বলে মনে করে তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার কাজ চলছে। এই ধরনের নীতি স্পষ্টতই বিশ্বব্যবস্থার স্থায়িত্বকে হ্রাস করে, বিশৃঙ্খলা ও বিপর্যয় ডেকে আনে।”
মার্কিন দূতাবাস তখন রাশিয়ান দূতাবাসের বিবৃতির জবাবে টুইটারে প্রশ্ন করেছিল, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যে অবস্থান সেটা কি ইউক্রেনের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য?