খুলনা, বাংলাদেশ | ২৯ কার্তিক, ১৪৩১ | ১৪ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  চার উপদেষ্টার আশ্বাসে ভোর ৪টায় হাসপাতালে ফিরলেন আহতরা

পিকে হালদারের ৮৩ সহযোগীর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ

গেজেট ডেস্ক

৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা লুট করে বিদেশে পালিয়ে যাওয়া প্রশান্ত কুমার হালদারের (পিকে হালদার) ৮৩ সহযোগীর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা আছে বলে হাইকোর্টকে জানিয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।

বুধবার (২০ জানুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে বিএফআইইউ’র দাখিল করা প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানানো হয়েছে।

হাইকোর্টে দাখিল করা প্রতিবেদনে পিকে হালদার ও তার ৮৩ সহযোগী এবং ৪৩টি নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ দিয়ে একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের বিস্তারিত তথ্যও উঠে এসেছে। এসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব এরই মধ্যে ফ্রিজ অবস্থায় রয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

বিএফআইইউ তার গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, ২০১৫ সালে ন্যাচার এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড, বিআর ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড, নিউ টেক এন্টারপ্রাইজ লি. ও হাল ইন্টারন্যাশনাল লি. নামের প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লি. অধিগ্রহণের পরবর্তী ৩/৪ বছরে দুর্নীতি, জালিয়াতি ও বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে নামসর্বস্ব ও কাগুজে প্রতিষ্ঠানের ঋণের নামে লেয়ারিংয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ক্যাপিটাল মার্কেটে ২ হাজার ৪৬৭ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়।

প্রতিষ্ঠানটির বিতরণ করা মোট ঋণের পরিমাণ ৩ হাজার ৬৩৪ কোটি টাকা। আত্মসাৎ করা অর্থ বিতরণ করা ঋণের ৬৭ দশমিক ৯১ শতাংশ। এ বিষয়ে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে ৪৩টি ঋণগ্রহীতা প্রতিষ্ঠানের নামে বিতরণ করা ঋণের অর্থের গতিপথসহ প্রকৃত সুবিধাভোগীদের বিষয়ে উল্লেখ রয়েছে।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, সার্বিক পর্যালোচনায় ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের পরিচালনা পর্ষদ, শীর্ষ ব্যবস্থাপনা, অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা বিভাগ, চিফ ফাইন্যান্সিয়াল অফিসার, ক্রেডিট ডিভিশনের কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় পিকে হালদার ও তার সহযোগীরা ৮৩ ব্যক্তির ঋণের আড়ালে বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও জালিয়াতির মাধ্যমে আর্থিক প্রতিষ্ঠানটির দুই-তৃতীয়াংশের বেশি অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।

এই দুর্নীতি ও জালিয়াতি মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে সম্পৃক্ত অপরাধ। চারটি নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে পিকে হালদার ও তার সহযোগীদের আত্মসাৎ করা অর্থের পরিমাণ কয়েক হাজার কোটি টাকা। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড, ফাস ফাইন্যান্স, পিপলস লিজিং ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স। নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠান তৈরি করে নিজ আত্মীয়-স্বজন ও সহযোগীদের মাধ্যমে তিনি এই অর্থ আত্মসাৎ করে কানাডায় পালিয়ে যান।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের পলাতক আসামি পিকে হালদারের বিরুদ্ধে ৮ জানুয়ারি রেড নোটিশ জারি করে ইন্টারপোল। বাংলাদেশ পু‌লি‌শের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো (এনসিবি) অর্থাৎ ইন্টারপোলের ঢাকা শাখার অনুরোধে ইন্টারপোল এ রেড নোটিশ জারি করা হয়।

বাংলাদেশ পু‌লি‌শের ইন্টার‌পোল শাখা যথাযথ প্র‌ক্রিয়া অনুসরণ ক‌রে প্র‌য়োজনীয় ডকু‌মেন্টস ও সা‌পো‌র্টিং এলি‌মেন্টস সহকা‌রে ইন্টার‌পোল সদর দপ্তরে আবেদন‌টি পাঠায়। ইন্টার‌পো‌লের এক‌টি বি‌শেষ ক‌মি‌টি আবেদন ও এর সা‌থে সংযুক্ত ডকু‌মেন্টস ও কাগজপত্র পর্যা‌লোচনা ক‌রে আবেদন‌টি অনু‌মোদন ক‌রে।

ইন্টার‌পো‌লের কে‌ন্দ্রিয় ও‌য়েবসাই‌টে প্রকা‌শের পাশাপা‌শি সারা‌বি‌শ্বে বি‌ভিন্ন দে‌শে ইন্টার‌পো‌লের শাখায়ও পাঠানো হ‌য়ে‌ছে এ রেড নো‌টিশ। এটি আগামী পাঁচ বছ‌রের জন্য জারি থাক‌বে। ত‌বে প্র‌য়োজ‌নে আবেদ‌নের পরিপ্রে‌ক্ষি‌তে মেয়াদ নবায়ন যোগ্য বলে জানা যায়।

রেড নোটিশে পলাতক আসামি প্রশান্ত কুমার হালদারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন দায়ের করা দুর্নীতি দমন আইন, ২০০৪ এর ২১(১) ধারা এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!