খুলনা, বাংলাদেশ | ১২ আষাঢ়, ১৪৩১ | ২৬ জুন, ২০২৪

Breaking News

  হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে ট্রাকচাপায় পুলিশ সদস্য নিহত
  লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত
  কেনিয়ায় কর বৃদ্ধির প্রতিবাদে গণবিক্ষোভ, গুলিতে নিহত ১০
যশোর আদালতে হত্যাকারীর স্বীকারোক্তি

পারিবারিক গোলযোগে পরিকল্পিতভাবে শিশু সানজিদাকে হত্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর

যশোরের পতেঙ্গালী গ্রামে সানজিদা জান্নাত বৃষ্টি নামে চার বছরের শিশু হত্যার ঘটনায় বেরিয়ে আসছে নানা চাঞ্চল্যকর কাহিনী। আটক যে আঞ্জুয়ারা ওই শিশুকে খুনে অভিযুক্ত, তিনি ও তার পরিবার শিশু এবং নারী পাচারের সাথে জড়িত বলে দাবি করেছেন গ্রামবাসী।

তারা বলেছেন, পারিবারিক গোলযোগের জের ধরে শিশু সানজিদাকে আপেল খাওয়ানোর প্রলোভন দেখিয়ে ঘরের মধ্যে নিয়ে যান আঞ্জুয়ারা। এরপর তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। রাতে পাশের দীঘিতে মরদেহ ফেলে দেয়ার পরিকল্পনা করে ঘরের চালের ড্রামে মরদেহ লুকিয়ে রাখেন আঞ্জুয়ারা। এ ঘটনার পর নিহত সানজিদার পরিবারে সদস্যদের সাথে পুলিশে খবরও দিতে যান এই পাষন্ড নারী। এলাকার লোকজন হত্যাকারী হিসেবে আঞ্জুয়ারার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন।

গ্রামবাসীর অভিযোগ, আটক আঞ্জুয়ারা চিহ্নিত নারী-শিশু পাচারকারী ও সুদে কারবারের সাথে জড়িত। তার স্বামী বেনাপোলের পুটখালী গ্রামের রেজাউল ওরফে রেজা এসব কাজের মূলহোতা। নারী ও শিশু পাচার করতে পতেঙ্গালী গ্রামে জমি কিনে বাড়ি করেন আঞ্জুয়ারা। এ বাড়িতে তিনি সেখানে তার শিশু সন্তান নিয়ে বসবাস করেন। মাঝে মাঝে স্বামী আসলেও অপরিচিত লোকদের ব্যাপক যাতায়াত ছিল। তার বাড়িতে রাতভর মাদকসেবন ও অনৈতিক কারবার চলে। এ বিষয়ে স্থানীয়রা একাধিকবার প্রতিবাদ করে। এদের মধ্যে অন্যতম ছিল সানজিদার পরিবার। এ নিয়ে তাদের সাথে শত্রæতা শুরু হয়। এছাড়া, সানজিদার এক চাচা আঞ্জুয়ারার কাছ থেকে সুদে টাকা নেন। ওই টাকা তিনগুণ দেয়া হলেও আরও টাকা দাবি করে আসছিলেন আঞ্জুয়ারা। এ নিয়ে দুটি পরিবারের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল। সম্প্রতি আঞ্জুয়ারার ছেলে শিশু সানজিদাকে ধাক্কা দেয়। বিষয়টি সানজিদার মা আঞ্জুয়ারার কাছে অভিযোগ করেন। এসময় গোলযোগের পর আঞ্জুয়ারা সানজিদার পরিবারকে প্রকাশ্যেই দেখে নেয়ার হুমকি দেন। তার কয়েকদিন পর সানজিদাকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন এলাকাবাসীসহ সানজিদার পরিবার। এছাড়া স্থানীয় মালেক ও তার স্ত্রীও এ হত্যার সাথে জড়িত বলে দাবি করেন তারা।

এদিকে, রোববার আটক আঞ্জুয়ারা বেগমকে আদালতে সোপর্দ করা হলে তিনি হত্যার সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মঞ্জুরুল ইসলাম তার জবানবন্দি রেকর্ড করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

ডিবি পুলিশের এসআই মফিজুল ইসলাম জানান, আঞ্জুয়ারাকে আটকের পর আদালতে সোপর্দ করা হলে তিনি শিশু সানজিদাকে হত্যা করার ঘটনা স্বীকার করেন। পারিবারিক গোলযোগের জের ধরে শিশুটিকে হত্যা করা হয় বলে তিনি জানান। এরসাথে জড়িত অন্যদের আটকের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি। এছাড়া, মালেক গাজী ও তার স্ত্রীর বিষয়ে তিনি বলেন, তাদেরকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। তাদেরকেও মামলায় আসামি করা হবে।

খুলনা গে‌জেট/ টি আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!