ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সমর্থিত প্রার্থী পারভেজ এলাহীকে পাঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ পড়িয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। বুধবার প্রথম প্রহরে তাকে ইসলামাবাদে শপথ পড়ানো হয়।
জিও নিউজের খবরে বলা হয়, শপথ গ্রহণের জন্য এলাহীকে নিয়ে আসতে বিশেষ প্লেন পাঠিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি।
এর আগে মঙ্গলবার রাতে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট তাকে পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ঘোষণা করেন। এর ফলে পাকিস্তানের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের ছেলে হামজা শাহবাজ তার পদ হারান।
প্রধান বিচারপতি ওমর আতা বান্দিয়াল, বিচারপতি ইজাজুল আহসান ও বিচারপতি মুনিব আখতারের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ পাঞ্জাবের গভর্নর বালিঘ উর রেহমানকে পাঞ্জাব প্রদেশের নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে পারভেজ এলাহীকে রাত সাড়ে ১১টায় শপথ পড়ানোর নির্দেশ দেন।
ওই আদেশেই বলা হয়, যদি তিনি শপথ পড়াতে অস্বীকার করেন তবে প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভী পারভেজ এলাহীকে শপথ পড়াবেন। অবশেষে পাঞ্জাবের গভর্নর শপথ না পড়ানোয় প্রেসিডেন্ট শপথ পড়ান।
এদিকে পারভেজ এলাহীকে পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে স্থান দেওয়ায় সুপ্রিম কোর্টের রায়ের কঠোর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন পাকিস্তান মুসলিম লীগের (পিএমএল-এন) ভাইস প্রেসিডেন্ট মরিয়ম নওয়াজ।
তিনি এ রায়কে অবৈধ আখ্যায়িত করে ‘বিচারিক অভ্যুত্থান’ বলে উল্লেখ করেছেন। মরিয়ম নওয়াজ পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের কন্যা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের ভাতিজি।
অন্যদিকে রায়ের পর পিটিআই’র সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মাহমুদ কোরেশি বলেছেন, আজ সংবিধানের শাসন গ্রহণ করা হয়েছে এবং পাকিস্তানি জনগণের ম্যান্ডেটকে সম্মান করা হয়েছে।
পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের পার্লামেন্টে বেশির ভাগ আইনপ্রণেতা মুখ্যমন্ত্রী পদে দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সমর্থিত প্রার্থীকে ভোট দিলেও ডেপুটি স্পিকারের বিতর্কিত এক সিদ্ধান্তে ফল উল্টে যায়। গত শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী পদের ভোটে পিটিআই সমর্থিত চৌধুরী পারভেজ ইলাহী ৩৭১ সদস্যের পার্লামেন্টের ১৮৬ জনের সমর্থন নিশ্চিত করেছিলেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী হামজা শাহবাজ পান ১৭৯ ভোট। হামজা পাকিস্তানের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের ছেলে।
পিটিআই প্রার্থী করেছিল পাকিস্তান মুসলিম লীগ কায়েদে আজমের (পিএমএল-কিউ) এলাহীকে। তবে দলটির প্রধান সুজাত হোসেন তার দলের পার্লামেন্ট সদস্যদের হামজাকে ভোট দিতে বলেছিলেন। সেই সিদ্ধান্ত অমান্য করে পিএমএল-কিউর পার্লামেন্টারি দলের ১০ সদস্য এলাহীকে ভোট দেন। সে কারণে পাঞ্জাব পার্লামেন্টের ডেপুটি স্পিকার দোস্ত মাজারি এই ১০ জনের ভোট বাতিল করে দিয়ে পাকিস্তান মুসলিম লীগ নওয়াজের (পিএমএল-এন) প্রার্থী হামজাকে জয়ী ঘোষণা করেন।
মঙ্গলবার আদালত সে সিদ্ধান্ত বাতিল করেন।