মানব ও অর্থপাচারের দায়ে কুয়েতের আদালতে দন্ডপ্রাপ্ত লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের পদ বাতিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিট সরাসরি খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। মঙ্গলবার বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কামরুল হোসেন মোল্লার হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রোকন উদ্দিন মাহমুদ ও আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান খান। অপরদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী।
এর আগে সোমবার লক্ষ্মীপুর-২ সংসদীয় আসন শূন্য ঘোষণা ও উপনির্বাচনের তফসিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিটের শুনানি শেষ হয়। শুনানি শেষে আজ মঙ্গলবার আদেশের জন্য দিন ধার্য করেছিলেন হাইকোর্ট।
এর আগে গত মার্চ মাসে এই আসন শূন্য ঘোষণা ও উপনির্বাচন তফসিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে শহিদ ইসলামের বোন নুরুন্নাহার বেগম এবং ওই আসনের বাসিন্দা শহিদ ইসলামের মনোনয়নপত্রে প্রস্তাবকারী শাহাদাত হোসেন গত মার্চে ওই রিট করেন। আইন মন্ত্রণালয়ের সংসদ বিষয়ক সচিব, জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সচিব ও নির্বাচন কমিশনকে রিটে বিবাদী করা হয়।
গত ২২ ফেব্রুয়ারি শহিদ ইসলাম পাপুলর আসন শূন্য ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে জাতীয় সংসদ সচিবালয়। নির্বাচন কমিশন ওই আসনে উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে ৪ মার্চ। ঘোষিত তফসিল অনুসারে ১১ এপ্রিল ওই নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল।
তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে তা পিছিয়ে আগামী ২১ জুন নির্ধারণ করা হয়। গেজেটে বলা হয়, কুয়েতের ফৌজদারি আদালতে ঘোষিত রায়ে নৈতিক স্খলনজনিত ফৌজদারি অপরাধে ৪ বছর সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত হয়েছেন শহিদ ইসলাম। এ কারণে বাংলাদেশের সংবিধানের ৬৬(২)(ঘ) অনুচ্ছেদের বিধান অনুযায়ী সাংসদ থাকার যোগ্য নন তিনি। সে কারণে সংবিধানের ৬৭(১)(ঘ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রায় ঘোষণার তারিখ (গত ২৮ জানুয়ারি) থেকে তার আসন শূন্য হয়েছে।
উল্লেখ্য, ঘুষ লেনদেনের মামলায় লক্ষ্মীপুর-২ আসনের স্বতন্ত্র সাংসদ শহিদ ইসলামকে গত ২৮ জানুয়ারি সাজা দেন কুয়েতের ফৌজদারি আদালত। বিচারক রায়ে এই সাংসদকে ৪ বছরের সশ্রম কারাদন্ডের পাশাপাশি ১৯ লাখ কুয়েতি দিনার বা ৫৩ কোটি ১৯ লাখ ৬২ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন। বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনো সাংসদের বিদেশের মাটিতে ফৌজদারি অপরাধে দন্ডিত হওয়ার ঘটনা এটিই প্রথম। গত বছরের ৬ জুন রাতে কুয়েতের বাসা থেকে আটক করা হয় শহিদকে। আটকের সাড়ে ৭ মাস আর বিচার প্রক্রিয়া শুরুর সাড়ে ৩ মাসের মাথায় দন্ডিত হন তিনি।
খুলনা গেজেট/এনএম