গত কয়েক দিন পাটুরিয়া ঘাট ছিল ফাঁকা। হঠাৎ ঈদের একদিন বাকি থাকতে রাজধানী ঢাকা ছাড়তে শুরু করেছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষজন। ফলে সোমবার বিকেল থেকে পাটুরিয়া ঘাটে যানবাহন ও যাত্রীর চাপ বেড়েছে বহুগুণ। তার মধ্যে গত দু’ দিন ধরে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা। যানবাহনগুলো ধীরগতিতে ফেরিতে ওঠানামা করায় ঘাটে যানবাহনের চাপ সকাল থেকেই বেড়েছে।
মঙ্গলবার সকাল থেকেই পাটুরিয়া ঘাটে ছোট-বড় যানবাহনের দীর্ঘ সারি কয়েক কিলোমিটার ছাড়িযে গেছে। এতে যাত্রী এবং যানবাহনের চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে ঘাট কর্তৃপক্ষ।
সরেজমিন পাটুরিয়া ঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, অতিরিক্ত যানবাহন এবং মানুষের মেলা বসেছে ফেরি ঘাটে। ১৬টি ফেরি দিয়ে যানবাহন ও যাত্রী পারাপার করা হলেও গাদাগাদি করে মানুষজন ফিরছে যে যার আপন আলয়। প্রিয়জনদের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে গিয়ে করোনা নামক প্রাণঘাতী ভাইরাস কেউ ভুলে গেছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যাত্রীরা। কোন ধরনের সামাজিক দূরত্ব কিংবা মাস্ক ছাড়াই তারা ছুটে চলছে যে যার গন্তব্যে। ফেরিঘাট এর পাশাপাশি লঞ্চঘাটের চিত্র আরো ভয়াবহ। প্রত্যেকটি লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে দৌলতদিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হতে দেখা গেছে। কথা হয় দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বেশ কয়েকজন যাত্রীর সঙ্গে।
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা গ্রামের রমজান আলী জানালেন, গাবতলী থেকে অনেক কষ্টে পাটুরিয়া ঘাটে এসে দুই ঘন্টা গাড়ির ভিতর বসে আছি। সাথে মহিলা ও শিশু বাচ্চারাও রয়েছে। কখন ফেরিতে উঠবো আর কখন বাড়ি ফিরবো জানি না।
কুষ্টিয়ার মুজিবনগরের ফারুক মিয়া জানালেন, তিন বছরের মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে সকাল থেকে পাটুরিয়া ঘাটে বসে আছি। সকাল ৭টা থেকে বসে আছি ফেরির কাছেই যেতে পারিনি। তার মধ্যে বাহিরে প্রচন্ড বৃষ্টি। গাড়ি থেকে নেমে একটু খাবার আনবো সে অবস্থাও নেই। শিশু মেয়েটির কান্না থামছে না।
খুলনার আজমীর হোসেন বলেন, পাটুরিয়া ঘাট থেকে এখনো দুই কিলোমিটার দূরে চারঘন্টা ধরে বাসের ভিতর বসে আছি। ফেরির দেখা পাচ্ছিনা। পরিবার নিয়ে খুব কষ্ট হচ্ছে। একবার ভেবেছিলাম ঢাকাতে ঈদ করব। কিন্তু ঘাট স্বাভাবিক থাকার কারণে গ্রামে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কিন্তু ঘাটের অবস্থা নাভিশ্বাস।
বিআইডব্লিউটিসি’র আরিচা অঞ্চলের ভারপ্রাপ্ত ডিজিএম জিল্লুর রহমান জানান, গেল কয়েক দিন পাটুরিয়া ঘাট ছিল একেবারেই স্বাভাবিক। যানবাহন ও যাত্রীর চাপ ছিল না বললেই চলে। হঠাৎ সোমবার বিকেল থেকে যানবহন এবং যাত্রীর চাপ বেড়ে যায় পাটুরিয়া ঘাটে। পাশাপাশি গত দুদিন ধরে বৃষ্টির কারণে ঘাটে দুর্ভোগ বেড়েছে। ১৬টি ফেরি দিয়ে যানবাহন এবং যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে।
খুলনা গেজেট/এনএম