সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটায় একটি মামলার আসামী ধরতে গিয়ে পুলিশ এক নারীকে মারপিট করায় অপমানে ওই নারী বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে পাটকেলঘাটা থানার দাদপুর গ্রামে মৃত মোজাম শেখের বাড়িতে এঘটনা ঘটে। পুলিশ প্রহরায় ওই নারীকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে পুলিশ বলছে গ্রেপ্তার এড়াতে ওই নারী ঘরের দরজা দিয়ে বিষপান করলে জানালা ভেঙ্গে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। আত্মহননের চেষ্টাকারি ওই নারীর নাম ছন্দা খাতুন (২২)। তিনি সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানার দাদপুর গ্রামে মৃত মোজাম শেখের মেয়ে ও যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার ভাল্লুকঘর গ্রামের মোঃ আইয়ুব আলীর স্ত্রী।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছন্দা খাতুন জানান, কয়েকদিন আগে শিশু ছেলেকে নিয়ে তিনি শশুর বাড়ি কেশবপুর উপজেলার ভাল্লুকঘর গ্রাম থেকে পাটকেলঘাটার দাদপুর গ্রামে বাবার বাড়িতে বেড়াতে এসেছেন। বৃহস্পতিবার রাতে তিনি ঘরে বসে টিভি দেখার পাশাপাশি মোবাইলে কথা বলছিলেন। রাত সাড়ে ৭টার দিকে পাটকেলঘাটা থানার এসআই তালেব ও এসআই কৃষ্ণপদ সমাদ্দার তার বাবা’র বাড়িতে এসে ঘরে ঢুকে তার হাত থেকে মোবাইল কেড়ে নিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি চড় থাপ্পর মারেন। এসময় তিনি ঘর থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ তাকে ঘরের মধ্যে রেখে বাইরে থেকে দরজায় ছিটকিনি লাগিয়ে দেয়। এদৃশ্য দেখে আমার শিশু ছেলে কান্নাকাটি শুরু করে। এসময় আমার বৃদ্ধ মা দরজা খুলে আমাকে বের করার চেষ্টা করলে তাকেও ধাক্কা মেরে ঘরের মধ্যে ঢুকিয়ে দেয়া হয়। পরে বারান্দায় ভাত খাওয়া অবস্থা আমার দুই ভাইকে আটক করে পুলিশ। এঘটনার পর শ্বশুর বাড়িতে মুখ দেখাবো কি করে এই ভেবে লজ্জায় ও অপমানে আমি বিষ পান করি। বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশ ঘরের জানাল ভেঙ্গে আমাকে বের করে নিয়ে আসে। পরে পুলিশ প্রহরায় আমাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এদিকে পাটকেলঘাটা থানার এসআই কৃষ্ণপদ সমাদ্দার জানান, প্রতিবেশী নুর ইসলামের সাথে মারামারি করার ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়। দাদপুর গ্রামে মৃত মোজাম শেখের তিন ছেলে খলিলুর রহমান (৩৬), শেখ মনিরুজ্জামান (৩২) ও শাহিনুর রহমান (২৭), স্ত্রী রুমা বেগম (৫৮) ও মেয়ে ছন্দা খাতুন (২২) ওই মামলার এজাহার নামীয় অসামী। ছন্দা খাতুন অধিকাংশ সময়ে বাবার বাড়িতেই থাকে। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে আমরা আসামীদের গ্রেপ্তার করতে ওই বাড়িতে যাই। আসামী শেখ মনিরুজ্জামান ও শাহিনুর রহমানকে গ্রেপ্তার করার পর সে ঘরে থাকা বোনকে বলে তুই বিষ খা তাহলে পুলিশ আমাদেরকে ছেড়ে দিবে। ভাইদের কথা শুনে ছন্দা খাতুন ঘরের দরজা দিয়ে বিষ পান করলে আমরা ঘরের জানালা ভেঙ্গে তাকে উদ্ধার করি। পরে ওই রাতেই স্থানীয় লালু মেম্বর তাকে সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করায়। গ্রেপ্তার এড়ানোর জন্য তারা এই কৌশল অবলম্বন করে বলে তিনি জানান।