সরকারি চাকরিজীবীদের পরিবারের সদস্যদের স্বয়ংক্রিয়ভাবে চাকরি পাওয়ার ব্যবস্থা বাতিল করেছে পাকিস্তান সরকার। মূলত চাকরিরত অবস্থায় মারা যাওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পরিবারের সদস্যদের কোনও ধরনের পরীক্ষা বা প্রতিযোগিতা ছাড়াই চাকরি পাওয়ার যে বিধান দেশটিতে এতোদিন ছিল সেটা বাতিল করা হয়েছে।
শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।
সংস্থাটি বলছে, চাকরিরত অবস্থায় মারা যাওয়া সরকারি কর্মচারীর পরিবারের সদস্যদের চাকরি দেওয়ার সুবিধা বাতিল করেছে সরকার। এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে আনুষ্ঠানিক নির্দেশনা দিয়েছে দেশটির সংস্থাপন বিভাগ।
সংস্থাপন বিভাগের জারি করা বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, ২০২৪ সালের ১৮ অক্টোবর দেওয়া সুপ্রিম কোর্টের রায় মেনে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পরিবারের সদস্যদের চাকরি পাওয়ার এই সুবিধাটি প্রত্যাহার করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত সুপ্রিম কোর্টের রায়ের তারিখ থেকে কার্যকর হবে।
তবে মৃত কর্মচারীদের পরিবারের সদস্যরা এখনও প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা প্যাকেজের অধীনে অন্যান্য সুবিধার জন্য যোগ্য হবেন। স্মারকলিপিতে স্পষ্ট করা হয়েছে, সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণ হারানো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের পরিবারের জন্য এই সিদ্ধান্ত প্রযোজ্য হবে না।
এছাড়া সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তের আগে সম্পন্ন করা নিয়োগগুলোও এই রায়ের কারণে প্রভাবিত হবে না। সরকারের এই সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে নতুন নীতিমালা কঠোরভাবে বাস্তবায়নের জন্য সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গত বছর, পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট দেশটির সরকারি কর্মচারীদের পরিবারের সদস্যদের জন্য সরকারি চাকরির কোটা প্রকল্পকে বৈষম্যমূলক এবং অসাংবিধানিক ঘোষণা করে বাতিল করার রায় দেয়। অতীতে এই প্রকল্পের অধীনে কোনও মৃত কর্মচারীর বিধবা স্ত্রী বা স্বামী বা চিকিৎসাগতভাবে অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীর সন্তানকে উন্মুক্ত প্রতিযোগিতা বা যোগ্যতা-ভিত্তিক নির্বাচনী পরীক্ষার প্রয়োজন ছাড়াই কোনও একটি সরকারি পদে নিয়োগ করা হতো।
রায়ে পাকিস্তানের শীর্ষ আদালত উল্লেখ করে, এই ধরনের প্রকল্পটি নিম্ন-গ্রেডের কর্মচারী এবং তাদের পরিবারের বিরুদ্ধে বিশেষভাবে বৈষম্যমূলক। আদেশে বলা হয়, “এই চাকরিগুলো বংশগত নয় বা করা যাবে না।”
আদালত আরও বলেছিল, যে কোনও নীতি বা আইন যদি সাংবিধানিক নীতির সাথে সাংঘর্ষিক হয় তা বিচারিক পর্যালোচনার বিষয় হবে। ফেডারেল এবং প্রাদেশিক কর্তৃপক্ষকে সাংবিধানিক কাঠামোর সাথে সামঞ্জস্য করে এই আইনগুলো প্রত্যাহার করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
খুলনা গেজেট/এনএম