পাকিস্তানের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন ক্ষমতাসীন জোট সরকারের বৃহত্তম শরিক পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএলএন) জ্যেষ্ঠ নেতা ইসাক দার। সোমবার রাজধানী ইসলামাবাদে প্রেসিডেন্টের বাসভবনে শপথ নিয়েছেন তিনিসহ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার ১৯ জন সদস্য।
৭৩ বছর বয়সী ইসাক দার এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের অর্থমন্ত্রী ছিলেন। পিএমএলএনের সাবেক চেয়ারম্যান নওয়াজ শরীফের নিকট আত্মীয় তিনি। মূলত ইসাকের নেতৃত্বেই দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর ২০২৩ সালে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে যে জরুরি ঋণ পেয়েছিল অর্থনৈতিক সংকটে টালমাটাল পাকিস্তান, যা এখনও কাটেনি।
অর্থসংকট মোকাবিলা করতে গিয়ে ব্যাপক সমালোচনারও জন্ম দিয়েছেন ইসাক দার। নিজের রাজনৈতিক জীবনে মোট চারবার পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রীর পদে থাকা ইসাক দার গত মেয়াদে যেসব পদক্ষেপ নিয়েছিলেন, সেগুলো জনগণের ভোগান্তি লাঘবের পরিবর্তে বাড়িয়ে দিয়েছিল।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান পার্লামেন্টের বিরোধী সদস্যদের অনাস্থা ভোটে ২০২২ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৩ সালের আগস্ট— মোট ১৭ মাস শেহবাজ শরিফের নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের অর্থমন্ত্রী ছিলেন ইসাক। তার আমলেই প্রথমবার পাকিস্তানের ব্যাংক সুদের হার ২২ শতংশ থেকে বাড়িয়ে ৩৮ শতাংশ করা হয়। এছাড়া এ সময় জ্বালানি তেলের ওপর থেকে ভর্তুকিও প্রত্যাহার করা হয়েছিল। ফলে সাধারণ জনগণের ওপর সে সময় চাপ বেড়েছিল ব্যাপক হারে।
দার অবশ্য তার সাফাইও দিয়েছেন বিভিন্ন সময়ে। তিনি বলেছেন, আইএমএফের নির্দেশনা অনুযায়ী এসব পদক্ষেপ নিতে হয়েছিল সরকারকে। যদি না নেওয়া হতো, তাহলে ঋণপ্রবাহও বন্ধ হয়ে যেতো। দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক সংকটের জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান নেতৃত্বাধীন সরকারের খামখেয়ালি নীতিকেও দায়ী করেছেন তিনি।
নতুন যে দপ্তরের দায়িত্বে ইসাক দার এসেছেন, পাকিস্তানের বর্তমান বাস্তবতায় সেটিও খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ অর্থনৈতিক সংকটে টালমাটাল পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সামনে এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ দু’টি— ক) ‘অকৃত্রিম বন্ধু’ চীন এবং মধ্যপ্রাচ্যের উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর সঙ্গে মিত্রতা ও অংশীদারিত্ব বজায় রাখা এবং খ) দুই বৈরী প্রতিবেশী ভারত এবং আফগানিস্তানের সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক রক্ষা করা। সূত্র : রয়টার্স।
খুলনা গেজেট/এনএম