পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ দাবি করেছেন, গোয়েন্দা প্রতিবেদন নিশ্চিত করেছে যে, ভারত পাকিস্তানের বড় শহরগুলোতে সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা করছে। সামা টিভিকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি এ দাবি করেন। সেই সঙ্গে তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘ভারত যদি আগ্রাসনের পথে হাঁটে, তাহলে পাকিস্তান প্রতিক্রিয়া জানাতে ২০০ ভাগ প্রস্তুত’।
তিনি জানান, পাকিস্তান যুদ্ধ চায় না এবং পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের কোনো পরিকল্পনাও নেই। তবে পারমাণবিক সক্ষমতাই পাকিস্তানের সার্বভৌমত্বের গ্যারান্টি।
খাজা আসিফ এ সময় অভিযোগ তুলে বলেন, ভারত নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন বালুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) এবং তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তানকে (টিটিপি) বোমা ও সহায়তা দিচ্ছে। যার মাধ্যমে তারা পাকিস্তানের চারটি প্রদেশেই অস্থিরতা সৃষ্টি করতে চায়।
তিনি বলেন, ‘ভারত খাইবার পাখতুনখাওয়া ও বালুচিস্তানে রক্তপাতের পেছনে রয়েছে। এসব গোষ্ঠী ভারতের প্রক্সি হিসেবে কাজ করছে’।
ভারত-শাসিত কাশ্মীরের পাহেলগাম হামলা প্রসঙ্গে আসিফ বলেন, ভারতের হাতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ নেই, কিন্তু ভারতীয় গণমাধ্যম এটিকে ‘বলিউড স্টাইল’ নাটকীয়তায় উপস্থাপন করছে।
তিনি আরও স্মরণ করিয়ে দেন, পুলওয়ামা হামলার সময়েও ভারতের ভেতর থেকেই ‘ফলস ফ্ল্যাগ অপারেশনের’ সন্দেহ ওঠে।
‘পেহেলগামে মুসলিমরাও নিহত হয়েছে। কিন্তু ভারতীয় মিডিয়া যেভাবে ঘটনার নাট্যরূপ দিচ্ছে, তাতে মনে হয় সংবাদ কক্ষের চেয়ে বলিউডের প্রভাব বেশি’, মন্তব্য করেন তিনি।
ভারতের সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিত করার প্রচেষ্টাকে ‘বিপজ্জনক দৃষ্টান্ত’ হিসেবে অভিহিত করে তিনি বলেন, পাকিস্তান এই ইস্যুতে আন্তর্জাতিক আদালতে যাবে। দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকলে তা আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তা হুমকির মুখে ফেলবে বলে সতর্ক করেন তিনি।
আফগানিস্তান থেকে সন্ত্রাস পাকিস্তানে ছড়িয়ে পড়ছে বলেও অভিযোগ করেন আসিফ। একই সঙ্গে তিনি অন্তর্বর্তী আফগান সরকারকে তাদের ভূখণ্ড ক্রস-বর্ডার সন্ত্রাসে ব্যবহার করতে না দেওয়ার আহ্বান জানান।
সাক্ষাৎকারের শেষে তিনি ২০১৯ সালের ভারতীয় পাইলট অভিনন্দন বর্ধনের ঘটনাকে স্মরণ করে বলেন,
‘আমাদের আকাশসীমা লঙ্ঘনের ফল কী হয়, তা সবাই দেখেছে। আমরা অভিনন্দনকে চা খাইয়ে ফেরত পাঠিয়েছিলাম — বার্তাটা পরিষ্কার ছিল’।