খুলনা, বাংলাদেশ | ২৫ আশ্বিন, ১৪৩১ | ১০ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  রিসেট বাটন বলতে ৭১ এর গর্বিত ইতিহাস নয় দূর্নীতিগ্রস্থ রাজনীতি মুছে নতুন সূচনার কথা বলেছেন ড. ইউনূস : প্রেস উইং
  পিরোজপুরে প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খালে পড়ে শিশুসহ ৮ জন নিহত

পাইকগাছায় লবণ সহণশীল ব্রি-৬৭ জাতের ধান কর্তন ও মাঠ দিবস

পাইকগাছা প্রতিনিধি

খুলনার পাইকগাছা উপজেলায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে লবণ সহিষ্ণু ব্রি ধান-৬৭। উচ্চ ফলনশীল হওয়াতে উপজেলার সকল পর্যায়ের কৃষকদের কাছে এ জাতের ধান বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এর সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা বিভাগ’র উদ্যোগে উপকূলীয় বরিশাল ও খুলনা অঞ্চলে পানি সম্পদ ও মাটির লবণাক্ততা ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধিকরণ কর্মসূচির আওতায় মঙ্গলবার সকালে উপজেলার পুরাইকাটীতে ব্রি ধান-৬৭ জাতের প্রদর্শনীর উপর ফসল কর্তন ও কৃষক মাঠ দিবস আয়োজন করা হয়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খুলনা অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক ফজলুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মোঃ শাহজান কবীর।

বিশেষ অতিথি ছিলেন, মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও প্রধান ড. আমিনুল ইসলাম, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট আঞ্চলিক কার্যালয় সাতক্ষীরার মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. তাহমিদ হাসান আনছারি, সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা বিভাগ গাজীপুরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোঃ মনিরুজ্জামান, উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ার ইকবাল মন্টু।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন, উপজেলা কৃষি অফিষার মোঃ জাহাঙ্গীর আলম। মাঠ দিবস অনুষ্ঠানে কৃষি কর্মকর্তা ও বিজ্ঞানীরা বলেন, আগামীতে লবণাক্ততার কারণে দক্ষিণ উপকূলীয় অঞ্চলের কোন জায়গা পতিত থাকবে না। নতুন নতুন এলাকায় ব্রি ধান-৬৭ জাতের ধানের আবাদ বৃদ্ধি পাবে। ফলে দেশের সামগ্রীক উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তারা।

সহকারী কৃষি কর্মকর্তা তোফায়েল আহমেদ তুহিন এর পরিচালনায় আরো বক্তব্য রাখেন, গদাইপুর ইউপি চেয়ারম্যান শেখ জিয়াদুল ইসলাম জিয়া, পাইকগাছা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এম মোসলেম উদ্দিন আহমেদ, প্রভাষক মইনুল ইসলাম ,সহকরী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শাহাজান আলী, উপসহকরী কৃষি কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ, বিল্লাল হোসেন, মিন্টু রায়, ডল্টন রায়।

উপস্থিত ছিলেন অমিকা অধিকারী, মোঃ শাহাজান উদ্দীন মোড়ল, সাধক ঢালী, এস এম মফিজুর রহমান, এনামুল হক, ইয়াসিন আলী খান, ফকির তৈয়বুর রহমান মিঠু, দেবদাশ রায়, কৃষক শেখ আহসান আলী, আব্দুর সবুর মোড়ল, আব্দুস সামাদ, লালু বিশ্বাস।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী গত বছরের তুলনায় চলতি মৌসুমে অধিক পরিমাণ জমিতে ব্রি-৬৭ জাতের ধানের আবাদ হয়েছে। গত মৌসুমে উপজেলায় ৪ হাজার ৯শ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েচিল। এর মধ্যে ব্রি-২৮ জাতের ধানের আবাদ হয়েছিল ২ হাজার ৮৯৫ হেক্টর জমিতে। যেখানে ব্রি-৬৭ আবাদ হয়েছিল মাত্র ৮৭০ হেক্টর জমিতে। চলতি মৌসুমে ৫ হাজার ৬২৫ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে যার মধ্যে ব্রি-৬৭ জাতের ধানের আবাদ হয়েছে ১ হাজার ২৩৪ হেক্টর জমিতে। অর্থাউ গত বছরের তুলনায় ৩৬৪ হেক্টর জমিতে বেশি আবাদ হয়েছে।

ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর আগামী বোরো মৌসুমে উপজেলায় ৩৫-৪০% ব্রি-৬৭ জাতের ধানের আবাদ বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছেন ।

জানা যায়, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা বোরো মৌসুমে চাষের জন্য লবণ সহিষ্ণু কয়েকটি উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান উদ্ভাবন করেছেন। যার মধ্যে ব্রি-৬৭ জাতের ধান অন্যতম । লবণাক্ততার মাত্রাভেদ অনুযায়ী এ ধানের হেক্টর প্রতি উৎপাদন ৩.৮-৭.৪ মেট্রিকটন পর্যন্ত হয়ে থাকে। এর প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো এ জাতের দানের গাছ চারা অবস্থায় ৩ সপ্তাহ পর্যন্ত ১২-১৪ ডিএস মিটার লবণাক্ততা সহ্য করতে পারে। এ জাতের ধানের অংগজ বৃদ্ধি থেকে প্রজনন পর্যায় পর্যন্ত লবণাক্ততা সংবেদনশীল সকল ধাপে ৮ ডিএস মিটার লবণাক্ততা সহ্য করে ফলন দিতে সক্ষম। যা প্রচলিত উচ্চ ফলনশীল জাত ব্রি ধান-২৮ পারে না। এর জীবনকাল ১৪০ থেকে ১৫০ দিন। ব্রি ধান-২৮ এর থেকে ১.৫ মেট্রিকটন উৎপাদন বেশি। এ ধানের চাল মাঝারি চিকন, সাদা ও ভাত ঝরঝরে হয়ে থাকে।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!