খুলনা পাইকগাছার যুবক শুভ’র সড়ক দূর্ঘটনায় মৃত্যুর প্রায় ৩ মাস পর ঘাতক ট্রাক চালক আনিচুর রহমানকে জেল হাজতে পাঠিয়েছে আদালত। একই সাথে কবর থেকে শুভ’র দ্বি-খন্ডিত লাশ উত্তোলনপূর্বক সুরতহাল প্রতিবেদন প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ১৯ জানুয়ারি ২১’ রাত সাড়ে ৮ টার দিকে পাইকগাছার গজালিয়া গ্রামের গোলাম রব্বানীর ছেলে ইব্রাহীম খলিল শুভ পৌরসভার চারাবট তলা নামক স্থানে মালবাহী ট্রাক চাপায় গুরুতর আহত হয়। শুভ ঐসময় রাস্তার পাশে নিজ মোটর সাইকেলের উপর বসে ছিল। আকষ্মিক মালবাহী ট্রাক খুলনা মেট্রো ট-১১-১৮৮৩ সামনে থেকে তাকে আঘাত করে চাপা দিলে ঐ দূর্ঘটনা ঘটে। এসময় স্থানীয়দের সহযোগীতায় থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে রাতেই তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। পুলিশ ঘাতক ট্রাক ও মোটর সাইকেলটি জব্দ করে থানায় নেয়।
চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার একটি পা কেটে ফেলা হয়। হাসপাতালে দীর্ঘ ১১ মাস চিকিৎসা শেষে গত ৭ নভেম্বর ২১’ তার মৃত্যু হয়। এর আগে তার কেটে ফেলা পা’টি কবরস্থ করা হয়।
এদিকে ঘটনাটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড দাবি করে শুভ’র পিতা গোলাম রব্বানী বাদী হয়ে গত ২৪ নভেম্বর ২১’ নিহত শুভ’র পিতা গোলাম রব্বানী বাদী হয়ে ট্রাক চালক আনিচুর রহমান ও তার স্ত্রী শিরিনা আক্তারকে আসামি করে পাইকগাছা বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। আদালত ২ ডিসেম্বর ব্যাপক শুনানী শেষে মামলটি আমলে নিয়ে এজাহার গ্রহণের জন্য পাইকগাছা থানায় প্রেরণ করেন। মামলায় ১ নং আসামি ট্রাক চালক আনিছুর রহমান জেল হাজতে রয়েছে।
এর আগে মামলায় ট্রাক চালক আনিছ ও তার স্ত্রী শিরিনা আক্তার আগাম জামিনের জন্য গত ১৮/১/২২ মহামান্য হাইকোর্ট যান। উচ্চআদালত ১ নং আসামিকে ৩ সপ্তাহের ডাইরেকশন ও ২ নং আসামিকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন দেন। এরপর ১নং আসামি ডাইরেকশন শেষে আদালতে হাজির দিলে বিজ্ঞ আদালত তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। একই সাথে বাদী পক্ষের আইনজীবী শুভ’র লাশ উত্তোলনের জন্য আদালতে আবেদন করলে বিজ্ঞ আদালত লাশ উত্তোলন পূর্বক সুরতহাল প্রতিবেদন প্রদানের আদেশ প্রদান করেন।
জানা যায়, নারী ঘটিত কারণে শুভ’র সাথে সংশ্লিষ্ট ট্রাক চালক পাইকগাছা পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের আব্দুল জব্বার সানার ছেলে আনিচুর রহমানের দীর্ঘ দিন ধরে মতদ্বন্দ্বসহ গোলযোগ চলে আসছিল। ঘটনার আগে সেসব বিষয়ে একাধিক বার শালিস করেও কোন সমাধানে আসেনি। মূলত উক্ত ঘটনার জের ধরেই পরিকল্পিতভাবে দূর্ঘটনাটি ঘটানো হতে পারে বলে শুভ’র পিতা ও এলাকাবাসীর মধ্যে গুঞ্জন রয়েছে।
পাইকগাছা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জিয়াউর রহমান জিয়া জানান, এখনো আদালতের আদেশ পাননি। আদেশের কপি পেলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
খুলনা গেজেট/ এস আই