পাইকগাছায় হতে যাচ্ছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেকেন্ড ক্যাম্পাস। সেখানে কৃষি ডিপ্লোমাধারীদের জন্য বিএসসি চালু এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক গবেষণা কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে কর্তৃপক্ষের।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পাইকগাছা কৃষি কলেজকে সম্প্রতি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে দেওয়া হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ আয়োজিত পাইকগাছা কৃষি কলেজের প্রশাসনিক সংযুক্তি ও একাডেমিক অধিভুক্তি সংক্রান্ত এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সে সিদ্ধান্তের আলোকে গত ১৫ জানুয়ারি ক্যাম্পাসটি সরেজমিনে পরিদর্শন করেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ রেজাউল করিম এর নেতৃত্বাধীন একটি বিশেষজ্ঞ দল।
পরিদর্শনকালে উপাচার্যকে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট নির্বাহী প্রকৌশলী নির্মাণকাজের সার্বিক অগ্রগতি অবহিত করেন। এ সময় উপাচার্য কলেজটির নির্মাণাধীন একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবন, হোস্টেল, কোয়ার্টার ঘুরে দেখেন এবং গুণগতমান ঠিক রেখে দ্রুততম সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন।
পাইকগাছায় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারি এবং ঐ অঞ্চলের মানুষের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহের সৃষ্টি হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২২ ফেব্রুয়ারি উক্ত ক্যাম্পাসে আয়োজন করা হয় কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের বার্ষিক পিকনিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। উক্ত অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সপরিবারে যোগদান করায় তা বাড়তি মাত্রা পায়।
এ সময় উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ রেজাউল করিম খুলনা গেজেটকে বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় হবে এ অঞ্চলের শিক্ষার হাব। এরই অংশ হিসেবে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ইনস্টিটিউটে রূপান্তর করা হবে পাইকগাছা কৃষি কলেজকে। এই প্রক্রিয়ায় কাজে লাগানো হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যমান ডিসিপ্লিনগুলোর বিশেষ দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা। এছাড়া এগ্রিকালচারাল, ভেটেরিনারি ও এনিমেল সায়েন্স ইত্যাদি বিষয়ে একাডেমিক ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা এবং ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট্রি ও টেকসই বন ব্যবস্থাপনা, সামুদ্রিক উপকূলে মাৎস্য ও সংশ্লিষ্ট বিষয়ে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনায় ফিল্ড ল্যাবরেটরি হিসাবে ব্যবহৃত হবে।
তিনি বলেন, দেশে প্রতি বছর ১৫ হাজার শিক্ষার্থী কৃষি ডিপ্লোমা সম্পন্ন করেন। তাদের জন্য সরকারিভাবে বিএসসি কোর্স এবং অন্যান্য সার্টিফিকেট কোর্স চালুর মাধ্যমে এটিকে বহুমুখী শিক্ষা কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হবে। এজন্য ইন্টারনেট সংযোগ ও জনবল নিয়োগসহ প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করা হবে।
তিনি আরও বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অবকাঠামোর কাজ শেষ করে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা এটি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে হস্তান্তর করলে আগামী সেশন থেকেই কোর্স চালুর পরিকল্পনা রয়েছে।
পাইকগাছা উপজেলার শিববাটী ব্রিজ ও আলমতলার মধ্যবর্তী স্থানে ২৫ একর জমির ওপর নির্মিত হচ্ছে পাইকগাছা কৃষি কলেজ। বর্তমানে এ প্রকল্পের অগ্রগতি প্রায় ৮০ শতাংশ। কলেজটির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিতকল্পে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাবনা চাওয়া হয়। পাইকগাছা কৃষি কলেজের ডিপিপি অপরিবর্তিত রেখে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রেরিত প্রস্তাবনার আলোকে গত ২২ ডিসেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগে অনুষ্ঠিত সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্তির সিদ্ধান্ত হয়।
খুলনা গেজেট/এমএম