খুলনা, বাংলাদেশ | ৩০শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৪ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ২ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৩৩০
  জুলাই আন্দোলনে শহিদদের ‘জাতীয় বীর’ কেন ঘোষণা নয়, জানতে চেয়ে হাইকোর্টের রুল

পাইকগাছায় বিরামহীন বৃষ্টিতে প্লাবিত পুকুর, ঘের ও ফসলি জমি

পাইকগাছা প্রতিনিধি

ভারী বর্ষায় উপকূলীয় পাইকগাছার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে আর বেড়েছে জনদূর্ভোগ। উপজেলা কৃষি অফিস ও আদালত চত্বরসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বৃষ্টির পানিতে প্লাবিত হয়েছে।
গত কয়েক দিনের মধ্যে কয়েকবার একটানা ভারী বর্ষণে পাইকগাছার বিস্তীর্ণ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। এ বছর বর্ষকালের শুরু আষাঢ় মাসের প্রথম থেকে একটানা গুড়ি গুড়ি, হালকা ও ভারি বৃষ্টি লেগে আছে। এতে আমন ধানের বীজ তলা, সবজি ক্ষেত, মৎস্য লীজ ঘের, নার্সারী, পুকুর, বাগান, রাস্তা ও বসতবাড়ি তলিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
পাইকগাছার গদাইপুর, হরিঢালী, কপিলমুনি ও রাড়ুলী উঁচু এলাকা হলেও বাকী ৬টি ইউনিয়ন নিচু এলাকায় অবস্থিত। সামান্য বৃষ্টি হলে এ সকল এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। তবে গত দিনের ভারী বর্ষণে উঁচু এলাকাও পানিতে তলিয়ে গেছে। পৌর বাজারের স্বর্ণ পট্টি, মাছ বাজারসহ বিভিন্ন রাস্তা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। উপজেলার বেশিরভাগ গ্রামীন রাস্তাগুলি পানিতে তলিয়ে থাকে। বাড়ির উঠানে পানিতে তলিয়ে থাকায় সাধারণ মানুষ বিড়াম্বনায় পড়েছে। কয়েক দিনের বৃষ্টিতে শ্রমজীবী মানুষরা কাজে যেতে না পারায় কর্মহীন হয়ে পড়ে আর্থিক অনাটনের মধ্যে পড়েছে।
উপজেলার সদর ইউনিয়ন গদাইপুরের কয়েক’শ নার্সারী ক্ষেত পানিতে তলিয়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সবজি ক্ষেত ও আমন ধান ঝড়ো হাওয়ায় ঝরে পড়ে পানিতে তলিয়ে গেছে। কয়েক দিনের একটানা বৃষ্টিতে মানুষের জনদূর্ভোগ বেড়েই চলেছে।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে এলাকাবাসির একই অভিযোগ, পৌরসভা ও বিভিন্ন ইউনিয়ানের পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেন ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানি বের হতে পারছে না। তাছাড়া ব্যক্তি স্বার্থে কিছু মানুষ তার বাড়ির সামনের বা পাশের ড্রেন বন্ধ করে রাখায় পানি ঠিক মত বের না হতে পেরে বিভিন্ন এলাকা পানিতে তলিয়ে রয়েছে।  এতে করে জলবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে।
পাইকগাছা মেইন সড়কের ঘোলাবাটি, সলুয়া, নতুন বাজার ও জিরো পযেন্ট এলাকার ভাঙ্গা রাস্তা আরো ভেঙ্গে নষ্ট  হয়ে ছোট ছোট ডোবায় পরিণত হয়েছে। যানবাহন ঝুকি নিয়ে চলাচল করছে।
পাইকগাছা উপজেলা নার্সারি মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও নার্সারি ব্যবসায়ী কামাল হোসেন জানান, ভারী বৃষ্টিতে নার্সারীর বেড ডুবে লক্ষ লক্ষ মাতৃ চারা মরে গেছে। ফলে কোটি কোটি টাকার লোকসান হবে এ সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের। বৃষ্টি  না কমলে আমারা চারা উৎপাদন করতে পারবোনা।
পৌরসভার কৃষক মোহাম্মদ আলী জানান, সবজি ও ধানের বিজ তলা পানিতে তলিয়ে গেছে। বাড়ির উঠান পর্যন্ত বৃষ্টির পানি জমে আছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ একরামুল হোসেন জানান, কয়েক দিনের ভারী বর্ষণে এলাকা প্লাবিত হয়ে আমন ধানের বীজ তলা তলিয়ে গেছে ও সবজি ক্ষেতের ক্ষতি হয়েছে। আমাদের উপ-সহকারী কর্মকর্তারা ইউনিয়ানে কাজ করছেন। ভারি বৃষ্টির কারনে কৃষকরা ব্যপক ক্ষতিগ্রস্থ হবে।
উপজেলা সিনিয়র মৎস অফিসার সৈকত মল্লিক বলেন, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কয়েক হাজার পুকুর ও প্রায় পাঁচ হাজার ছোট বড় ঘের তলিয়ে গেছে।  যদি আবার এখন ভারী বৃষ্টি না হয় তাহলে অতি দ্রুত পানি সরে যাবে। এতে কোটি টাকার মাছ চলে যাবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহেরা নাজনীন বলেন, ভারী বর্ষণে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানি নিষ্কাশনের জন্য নদীর স্লুইস গেটগুলি উন্মুক্ত রাখাসহ বিভিন্ন পানি নিষ্কাশনের ড্রেনগুলি পরিস্কার করতে টিমগুলি কাজ করছে।
খুলনা গেজেট/এসএস




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!