অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের (Cyclone Yaas) জেরে বাংলার বহু গ্রামে জল ঢুকে গিয়েছে বলে নবান্নে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বুধবার সকালে মমতা বলেন, ‘উপকূলবর্তী এলাকায় গ্রামগুলিতে জল ঢুকছে। পূর্ব মেদিনীপুরে ৫১টি নদীবাঁধ ভেঙেছে। গোসাবার গ্রামগুলি প্লাবিত। ২০ হাজার বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দিঘা, শংকরপুর এলাকা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নন্দীগ্রামে গ্রামের পর গ্রাম ডুবে গিয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরে ৩.৮ লাখ মানুষকে নিরাপদে সরানো হয়েছে। ১৫ লাখ মানুষকে নিরাপদে সরানো হয়েছে’। বিদ্যুৎ ও জল পরিষেবা ব্যাহত হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন মমতা।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও জানান, ‘উপকূলবর্তী এলাকায় ১৩০ কিমি বেগে ঝড় হতে পারে। কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, বর্ধমানে ঘণ্টায় ৭৫ কিমি বেগে ঝড় হবে। ল্যান্ডফলের প্রক্রিয়া ৩-৪ ঘণ্টা ধরে চলবে’। ঝড়ের জেরে দিঘায় তুমুল জলোচ্ছ্বাস। কুলতলি, পাখিরালায়, সুন্দরবন, ফ্রেজারগঞ্জে বাঁধ ভেঙেছে বলে খবর।
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘গোটা বাংলা দুর্যোগ কবলিত। ভরা কোটালের জন্য বাংলায় বেশি সমস্যা হচ্ছে। যতক্ষণ না পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে, ততক্ষণ কেউ প্লাবিত গ্রামে ফিরবেন না’। অন্যদিকে, ঝড়ের জেরে কলকাতায় বন্ধ করা হয়েছে উড়ালপুল। বন্ধ রয়েছে কলকাতা বিমানবন্দর। বাংলার ১০ জেলায় ১৭ কোম্পানি সেনা নামানো হয়েছে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস-এর স্থলভাগে আছড়ে পড়েছে। কিন্তু তার অনেক আগে থেকেই তার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে দিঘায়। বুধবার সকালেই জলমগ্ন দিঘার একাধিক এলাকা। জল ঢুকতে শুরু করেছে মূল রাস্তায়। আতঙ্কে বাড়ি ছাড়ছেন অনেক বাসিন্দা।
মঙ্গলবার রাত থেকেই দিঘায় শুরু হয়েছিল বৃষ্টি। সমুদ্রে ঢেউয়ের উচ্চতাও বাড়ছিল। সময় যত এগিয়েছে তত বৃষ্টির তীব্রতা বেড়েছে। সেই সঙ্গে দিঘা ও নিউ দিঘায় গার্ডরেল ছাপিয়ে জল ঢুকতে শুরু করে। তার ফলে বুধবার সকালেই জলমগ্ন মূল শহর। এমনকি জলমগ্ন দিঘা থানাও। দিঘার বাজার এলাকা ৫ থেকে ৬ ফুট জলের তলায় চলে গিয়েছে।
অনেক আগে থেকেই দিঘায় উপকূল ভর্তি এলাকার বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়ে গিয়েছে প্রশাসন। কিন্তু শহরের বাসিন্দারা বাড়িতেই ছিলেন। যদিও দিঘায় ভিতরে জল ঢুকতে শুরু করায় অনেকেই আতঙ্কে বাড়ি ছেড়ে একটি শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন। জল ঢুকেছে সৈকত শহরের অনেক হোটেলেও। পরিস্থিতি মোকাবিলায় নামানো হয়েছে সেনা। জল ঢুকেছে মন্দার মণি, শঙ্কর পুর, তাজপুর এলাকায়। প্রচুর গ্রাম জলের তলায়। বেশিরভাগ বাসিন্দারাই গ্রাম ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছেন ত্রাণ শিবিরে।
খুলনা গেজেট/এনএম