গেজেট ডেস্ক
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পল্লবী থানার ভেতরে বিস্ফোরণের ঘটনায় দায়ের করা দুই মামলায় তিন আসামিকে ১৪ দিন করে রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। ৩০ জুলাই বৃহস্পতিবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মঈনুল ইসলাম এই আদেশ দেন।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পল্লবী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফারুকুজ্জামান মলিক তিন আসামিকে হাজির করে দুই মামলায় ১০ দিন করে ২০ দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক প্রত্যেক আসামিকে দুই মামলায় সাতদিন করে মোট ১৪ দিন রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার পুলিশ বাদী হয়ে মামলা দুটি দায়ের করেন। এসআই ফারুকুজ্জামান মলিক বলেন, এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে দুটি মামলা দায়ের করেছে। একটি অস্ত্র আইনে, আরেকটি বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে। থানায় বিস্ফোরণের আগে আমরা তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছিলাম। তিনজনকে ওই দুটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
গত বুধবার ভোরের পর পল্লবী থানা ভবনে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণে চার পুলিশসহ পাঁচজন আহত হয়। তবে এই ঘটনায় জঙ্গি সম্পৃক্ততা নেই বলে জানিয়েছে পুলিশ।
যদিও এই ঘটনার দায় স্বীকার করেছে জঙ্গি সংগঠন ইসলামি স্টেট (আইএস)। তবে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট বলছে, এ ঘটনায় আইএস মিথ্যা দায় স্বীকার করেছে। গণমাধ্যমের প্রচার পেতেই আইএস এ কাজটি করছে বলে ধারণা।
এদিকে পল্লবী থানায় বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। এটা ‘স্থানীয় আধিপত্য বিস্তার সংশ্লিষ্ট একটি ক্রিমিনাল অ্যাক্টিভিটিস (অপরাধ কর্মকাণ্ড)।’ বৃহস্পতিবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি’র) পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল বাতেন এসব কথা বলেন। থানায় বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে বুধবারই তিনজনকে আটক করে পুলিশ। তাদের বিষয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
আবদুল বাতেন বলেন, এ ঘটনায় পল্লবী থানায় দু’টি মামলা হয়েছে। যারা গ্রেপ্তার হয়েছে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদ ও তদন্তে আমরা যা পাচ্ছি এটা ‘স্থানীয় আধিপত্য বিস্তার সংশ্লিষ্ট একটি ক্রিমিনাল অ্যাক্টিভিটিস (অপরাধ কর্মকাণ্ড)’। জঙ্গির কোনো সংশ্লিষ্টতা আমরা এখনো পাইনি। তারা কেন কাকে কীভাবে হত্যা করার জন্য পরিকল্পনা করেছিল সে বিষয়গুলো আমরা খতিয়ে দেখছি। এর বেশি কিছু পেলে আমরা পরবর্তীতে জানাবো।
‘পল্লবী থেকে গ্রেপ্তার তিন জনের একজন শহীদুল, তাকে ৩ দিন আগে একটি মাইক্রোতে তুলে নেয়া হয়েছিল বলে দাবি করছে তার পরিবার। এ বিষয়ে থানায় জিডি আছে। তারপরও তাকে কীভাবে আগের রাতে গ্রেপ্তার করা হলো?’ সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আব্দুল বাতেন বলেন, আপনার বক্তব্য আমরা তদন্ত করে দেখবো। আমরা এ ধরনোর কোনো তথ্য পাইনি। আমরা তাদের হাতেনাতে গ্রেপ্তার করেছি। যে বস্তুটি উদ্ধার করেছি (বোমা) সেটা আপনারা দেখেছেন। এর বাইরে যদি কোনো বিষয় থাকে সেটা আমরা তদন্ত করে দেখবো।
আরেক প্রশ্নের উত্তরে আব্দুল বাতেন বলেন, এখন যদি আপনি সব প্রশ্নের উত্তর চান তাহলে দেয়া যাবে না। আবার অনেক কিছু আছে যা তদন্তের স্বার্থে আপনাকে বলাও যাবে না। আপনাকে বিস্তারিত সবকিছু খুলে বলার মতো আমার কাছে তথ্য নাই।
খুলনা গেজেট / এনআইআর