আষাঢ়ের প্রথম দিন। দুপর ২ টা। টিপটিপ বৃষ্টি। পলিথিনে মোড়ানো ভাঙাচোরা কুঁড়েঘর। ঘরের মধ্যে মলিন মুখে বসে আছেন উন্নতি। ওই ঘরেই জড়োসড়ো হয়ে বাস করেন তিন সদস্যর পরিবার। বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের কুরমনি গ্রামে পলিথিনের কুঁড়েঘর এভাবেই পার করেছেন চৌদ্দ বছর। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে এখন বিষণ্ন সে।
কথা হলে উন্নতি বিশ্বাস (৫১) বলেন, ‘স্বামী হারান বিশ্বাস ও ছেলে প্রকাশ বিশ্বাসকে নিয়ে আমার সংসার। সুখে শান্তিতেই বসবাস করছিলাম। হঠাৎ ২০০৭ সালে সর্বনাশা ঘূর্ণিঝড় সিডরে আমাদের বসত ঘরটি ভেঙে যায়। কোন রকম ঘরটি জোড়াতালি দিয়ে বসবাস শুরু করি। এরই মধ্যে আমার স্বামী মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েন। তার চিকিৎসা ও ছোটাছুটিতে আর ঘর ঠিক করা হয়নি। কোন সরকারি সাহায্যও মেলেনি। তাই বয়সের ভারে আমাদের শরীর যেমন ন্যুয়ে পড়ছে। তেমনি ঘরটিও দিনদিন মাটির সাথে শুয়ে পড়ছে। তাই পলিথিন দিয়ে কোন রকম বসবাস করছি। প্রধান মন্ত্রীর সরকারি ঘরের জন্য একবার ইউনিয়ন পরিষদে নাম ঠিকানা দিয়েছিলাম। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোন কিছুই পাইনি। জানিনা পাব কিনা!’
এ ব্যাপারে চিতলমারী সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়াম্যান মোঃ নিজাম উদ্দিন শেখ জানান, নতুন ঘরের তালিকায় উন্নতি বিশ্বাসের নাম আছে কিনা, তালিকা না দেখে বলা যাচ্ছে না। তালিকা তো অনেক আগে হয়েছে।
তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ লিটন আলী জানান, সরকারি এই ঘরের তালিকা গুলো দুই বছর আগে হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বের সাথে খোঁজ নিয়ে দেখা হবে। যদি তালিকায় উন্নতি বিশ্বাসের নাম না থাকে, তাহলেও তাকে সরকারি ভাবে সাহায্যে করা হবে।
খুলনা গেজেট/ এস আই