সব যদি, কিন্তুর সমীকরণ মিলিয়ে কাতার বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে অবস্থান করছে আর্জেন্টিনা। অথচ তাদেরই কিনা গ্রুপ পর্ব থেকে বাদ পড়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। কিন্তু সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে এখন ফাইনালের স্বপ্ন দেখছে দলটি। সেমিফাইনাল পর্যন্ত আর্জেন্টিনার আসার পেছনে প্রতিটি ম্যাচেই সামনে থেকে অবদান রেখেছেন বিশ্বসেরা ফুটবলার লিওনেল মেসি। এখন পর্যন্ত পাঁচ ম্যাচের মধ্যে তিনটিতে হয়েছেন ম্যাচ সেরা।
কোয়ার্টার ফাইনালে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে দেয়া নাহুয়েল মলিনার গোলটি এসেছে তার ডিফেন্স চেরা পাস থেকেই। এরপর পেনাল্টি থেকে তিনি গোল করেন। পরে অবশ্য ডাচরা দুটি গোল শোধ করলে টাইব্রেকারে গড়ায় ম্যাচ। সেখানে ৪-৩ ব্যবধানে নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে আলবিসেলেস্তেরা।
সেমিফাইনাল নিশ্চিতের আগে অবশ্য মেসি আর্জেন্টিনার কিংবদন্তি ফুটবলার গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতার সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড স্পর্শ করেন। এতোদিন বিশ্বকাপের মঞ্চে আর্জেন্টাইন হিসেবে সর্বাধিক গোলের রেকর্ডটি নিজের করে রেখেছিলেন বাতিস্তুতা। ডাচদের বিপক্ষে পেনাল্টি থেকে গোল করে সে রেকর্ড স্পর্শ করেন মেসি।
গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতা ফুটবল বিশ্বে বাতিগোল নামেই পরিচিত। ঝাকড়া চুলের জন্য বেশ খ্যাতি ছিল তার। বিশ্বকাপের ইতিহাসে একমাত্র ফুটবলার যিনি দুই আসরে হ্যাটট্রিক করেছেন। একটা সময় ৭৭ ম্যাচ খেলে ৫৪ গোল করে শীর্ষ গোলদাতার তালিকায়ও ছিলেন বাতিস্তুতা। তিন বিশ্বকাপে অংশ নিয়ে ১০ গোল করে ছিলেন তিনি।
Querido Leo, ¡felicidades! 👏
Tuve el record durante 20 años y lo disfruté. Ahora es un gran honor y placer compartirlo contigo, ¡esperando de todo corazón que puedas superarlo ya en el próximo partido! 💙🇦🇷 pic.twitter.com/gnCvdMuCqi
— Gabriel Batistuta (@GBatistutaOK) December 10, 2022
নিজের রেকর্ড স্পর্শ করার পর মেসিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন বাতিগোল খ্যাত আর্জেন্টিনার সাবেক স্ট্রাইকার। সেই সঙ্গে তিনি চাইছেন পরের ম্যাচেই অর্থাৎ সেমিফাইনালেই যেন মেসি তাকে ছাড়িয়ে যান।
নিজের ভেরিফাইড টুইটার অ্যাকাউন্টে মেসির সঙ্গে পুরোনো একটি ছবি দিয়ে বাতিস্তুতা লিখেন, প্রিয় লিও, তোমাকে অভিনন্দন। ২০ বছর ধরে আমি এই রেকর্ড ধরে রেখেছি। আমি এটা উপভোগ করেছি। এখন তোমার সঙ্গে এই রেকর্ড শেয়ার করা আমার জন্য আনন্দ এবং সম্মানের। আমি মন থেকে চাই, পরবর্তী ম্যাচেই তুমি আমাকে ছাড়িয়ে যাও।
বাতিস্তুতা এরপর যোগ করেন, আমার হৃদয়ের অন্তস্থল থেকে চাইছি, তুমি আমাকে পরের ম্যাচেই ছাড়িয়ে যাবে!
১৯৯৪ বিশ্বকাপে বাতিস্তুতা প্রথম বিশ্বকাপ গোল পান। সেবার তিনি ৪ গোল করেন আর্জেন্টিনার হয়ে। ১৯৯৮ সালে ফ্রান্স বিশ্বকাপে করেন ৫ গোল। এরপর ক্যারিয়ারের শেষ বিশ্বকাপ ২০০২ সালে কোরিয়া-জাপানে একটি গোলই করতে পারেন বাতিস্তুতা।
অন্যদিকে লিওনেল মেসি ২০০৬ সালের বিশ্বকাপে নিজের প্রথম গোল পান। ওই আসরে এই একটি গোলই করেছিলেন তিনি। ২০১০ সালের বিশ্বকাপে গোলের খাতা খুলতে পারেননি। ২০১৪ সালের ব্রাজিল বিশ্বকাপে করেন ৪ গোল। দলকে নিয়ে যান বিশ্বকাপের ফাইনালে। সবশেষ ২০১৮ আসরে একটি গোল করেন আর্জেন্টাইন সুপারস্টার। সে আসরে দুটি গোল হতে পারত। যদি না মেসি আইসল্যান্ডের সঙ্গে পেনাল্টি মিস না করতেন। চলতি আসরে এখন পর্যন্ত ৪ গোল করেছেন মেসি।
এখন দেখার বিষয়, মেসি কি পারবেন ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে গোল করে নিজ দেশের জীবন্ত কিংবদন্তি বাতিস্তুতাকে ছাড়িয়ে যেতে।