চিত্রনায়িকা পরীমনির মামলার গতি-প্রকৃতির নজর রাখছেন বিলেত প্রবাসী প্রবীণ সাংবাদিক ও লেখক আব্দুল গাফফার চৌধুরী। ন্যায়বিচার চেয়ে তিনি ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী বরাবর চিঠি পাঠিয়েছেন। আইনি সহায়তার জন্য ব্যারিস্টারদের সঙ্গে কথা বলেছেন। এরইমধ্যে তিনজন ব্যারিস্টার অপারগতা প্রকাশ করেছেন। ক’দিন আগে একজন রাজি হয়েছেন। শেষ পর্যন্ত যদি একজনও রাজি না হন, তাহলে লন্ডন থেকে ব্যারিস্টার পাঠানো হবে। মহান একুশের গানের রচয়িতা আব্দুল গাফফার চৌধুরী নিজেই গণমাধ্যমকে এই তথ্য জানিয়েছেন।
লন্ডনের আইপি টিভি দর্পন-কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে আব্দুল গাফফার চৌধুরী আরও বলেছেন, বাংলাদেশে মানবতা ও নাগরিক অধিকারের ওপর হস্তক্ষেপ হচ্ছে।
বিশেষ করে, বর্তমান সরকারের আমলে বারবার হস্তক্ষেপ হচ্ছে। তার কথায়, এখানে আইনের শাসন নেই। দেশটি মগের মুলুকে পরিণত হয়েছে। গাফফার চৌধুরী বলেন, পরীমনির সঙ্গে তার পরিচয় নেই। সরাসরি দেখেননি। ছবিতে দেখেছেন শুধু। কিন্তু হঠাৎ একদিন অনলাইনে দেখলাম চিৎকার করছে আমাকে বাঁচাও বাঁচাও বলে। তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের কোনো অভিযোগ নেই। মাদকাসক্তের অভিযোগ আছে। কিন্তু তাকে গ্রেপ্তারের জন্য যেভাবে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছাড়া র্যাব আসে তা ছিল রীতিমতো ভীতিকর। কোন আদেশে আসলো? তা জানার চেষ্টা করলাম। অনুসন্ধান করতে গিয়ে দেখি, সে আক্রোশের শিকার।
একদিকে অর্থশক্তি। অন্যদিকে রাষ্ট্রশক্তি। লন্ডনে আমার বন্ধু কয়েকজন পুলিশ অফিসারের সঙ্গে কথা বললাম। তারা আমাকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বললেন, ওকে ধ্বংস করার জন্য এগুলো করছে। একজন নায়িকার বাড়িতে মদ পাওয়া যাবে না, এটাই বা কি করে আশা করি! তার বাসায় এলএসডি পাওয়া গেছে। আমার ধারণা, এটা সাজানো হয়েছে। যাইহোক, তার পক্ষে কিছু লোক দাঁড়িয়েছে। আমিও দাঁড়িয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি লিখেছি। খবরের কাগজে লিখেছি। ১৭ জন বিশিষ্ট নাগরিক বিবৃতি দিয়েছেন। কোনো সাড়া মেলেনি। গাফফার চৌধুরীর আশা ছিল, যে দলকে তিনি পঞ্চাশ বছর ধরে সমর্থন করেন, প্রধানমন্ত্রীকে নিজের মেয়ের মতো জানেন, তারা আমাকে কিছু বলবেন। অন্তত এটা বলতে পারতেন- আমি কিছু করতে পারবো না। তখন ছিল অন্য কথা। দুর্ভাগ্য, তিনি আমাকে সম্পূর্ণ অবজ্ঞা করেছেন। আমার কথা হচ্ছে, পরীমনি দোষী হলে নিয়মমাফিক তার বিচার হবে। আমি বিচারের বিরুদ্ধে নই। কিন্তু তাকে ধরার সাথে সাথে বলা হচ্ছে, রাতের রানী। এভাবে চরিত্রহনন সম্পূর্ণ বেআইনি। অন্য কোনো দেশে হলে সংশ্লিষ্ট বাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হতো।
প্রবীণ এই সাংবাদিক সাক্ষাৎকারের এক পর্যায়ে বলেন, তার একবার কথা হয়েছে। তিনি এতোটাই ভয় পেয়েছেন যে, এখন আর ফোন ধরেন না। চয়নিকাকে যেভাবে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়, তা অসভ্যতা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য লজ্জাকর। কি আর বলবো! পরীমনি মেয়েটি অসম্ভব সুন্দরী। গরিবের ঘর থেকে এসেছে। এটাও একটা অপরাধ। বলা হচ্ছে, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। আজও জানা গেল না সুনির্দিষ্ট অভিযোগটা কি? মদের বার নেই গুলশান,বনানীতে এমন বাড়ি কি আছে?
(সাক্ষাৎকারটির পূর্ণ বিবরণ নয়, ঈষৎ সংক্ষেপিত )
খুলনা গেজেট/ টি আই