খুলনা, বাংলাদেশ | ৬ মাঘ, ১৪৩১ | ২০ জানুয়ারি, ২০২৫

Breaking News

  দৈনিক ভোরের কাগজের প্রধান কার্যালয় বন্ধ ঘোষণা
  সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে রাষ্ট্রপতির ক্ষমার ক্ষমতা চ্যালেঞ্জ করে রিট দায়ের
তৃণমূল জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী

পরিবেশ তৈরি করুন, মানুষ যেন ভোট দেয়

গেজেট ডেস্ক

অনাবাদি জমি চাষ, গাছ লাগানো, কমিউনিটি ক্লিনিকের খবরাখবর রাখা, মাদক ও সন্ত্রাসের দিকে বিশেষ নজর দেওয়াসহ তৃণমূল জনপ্রতিনিধিদের প্রতি একগুচ্ছ আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার গণভবনে জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস-২০২৩ উদযাপন অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনারা তৃণমূলের জনগণের ভোটে নির্বাচিত সেবক। আপনারা যথাযথ দায়িত্ব পালন করে মানুষের আস্থা অর্জন করে এগিয়ে যাবেন। মানুষ যেন আবার ভোট দেয়, সে পরিবেশ তৈরি করবেন। আমরাও এটা চাই, আজকে যে দীর্ঘদিনের উন্নয়নের ফসল, এটা যেন অব্যাহত থাকে। কেউ যেন পিছিয়ে দিতে না পারে। বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আমরা আরও উজ্জ্বল করে বিশ্বের বুকে মাথা উচু করে দাঁড়াব।’

শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ করার সঙ্গে সঙ্গে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার জন্য কাজ করছি। আমাদের যা সম্পদ আছে, তা নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে। সেইভাবে কাজ করছি। টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় আছি এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আছে বলেই এ কাজ করে যেতে পারছি। ৭৬৭ ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স করে দিয়েছি। ১১৯১টি সাইকোন সেন্টার নির্মাণ করেছি। গ্রাম পর্যায়ে অসংখ্য রাস্তাঘাট, স্কুল-কলেজ কালভার্ট করে দিয়েছি। এখনো গ্রামে অনেক রাস্তা কাঁচা আছে, সামনে ক্ষমতায় এলে সেগুলোও থাকবে না। সব পাকা করে দেব।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মসজিদ, মন্দির ও প্রেগোডা, যখন যেখানে যেটা দরকার করে দিয়েছি। সবাই এক কাতারে যু্দ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। একসঙ্গে থাকব।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘তৃণমূলের জন্য পল্লীসঞ্চয় ব্যাংক এবং প্রবাসীদের জন্য প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক করে দিয়েছি। তারা তো এ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে যেতে পারে। কিন্তু এখনো দালালের খপ্পরে পড়ে বিদেশে গিয়ে বিপদে পড়ে। এগুলো খেয়াল রাখবেন। পাশাপাশি মাদকের বিরুদ্ধে আপনাদের দাঁড়াতে হবে। কেউ যাতে মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের না জড়ায়, সেটা আপনাদের দেখতে হবে। কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছি। ৩০ ধরনের ওষুধ দিই। চিকিৎসা ও ওষুধ মানুষ পায় কিনা একটু দেখবেন। এতে নজর রাখবেন।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে। সব যায়গায় ফসল ফলাবেন। তাতে আপনারাই লাভবান হবেন। আমিও লাভবান হয়েছি। নিজেরা ফসল ফলাব, নিজেরা খাব। কারও কাছে হাত পাততে হবে না। আমি অনুরোধ করব, আপনারা নিজেদের জমি চাষ করেন, গাছ লাগান, বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হন।’

ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতন হওয়ার পরামরশ দিয়ে তিনি বলেন, ‘ডেঙ্গু প্রতিরোধে এবং মশার হাত থেকে বাঁচতে হলে মশারি ব্যবহার করতে হবে। ঘরবাড়ি পরিষ্কার রাখতে হবে। মশা মেরে শেষ করা যাবে না। নিজেরাও সচেতন হতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৮ জন কৃষককে গুলি করে হত্যা করেছে খালেদা জিয়া। আজ কৃষকের ঘরে সার পৌঁছে যায়। তাদের কৃষি উপকরণ কার্ড দিয়েছি। এটা দিয়ে কৃষি উপকরণ কিনতে পারে। ১০ টাকায় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে পারে। এর মাধ্যমে ভর্তুকির টাকা সরাসরি কৃষকের কাছে পৌঁছে যায়। জেলেদের ৪০ কেজি করে চাল দিই। বিদ্যুৎ ’৯৬ সালে ১৬০০ মেগাওয়াট ছিল। আমরা চার হাজার তিনশ করে যাই। পরে বিএনপির আমলে কমে গেছে সেটা। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর এখন ২৫ হাজার মেগাওয়ার্ট বিদ্যুৎ উৎপাদন করি। শতভাগ মানুষ বিদ্যুৎ পায়। শিক্ষার্থীদের বই, বৃত্তি, উপবৃত্তি দিচ্ছি। ডিজিটাল সেন্টার করে দিচ্ছি। ইনকিউবেটর, হাইটেক পার্ক করে দিয়েছি। আজকের বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশ। ৭৩ শতাংশ লোক ইন্টারনেট ব্যবহার করে। ঘরে ঘরে মোবাইল ফোন। সাধারণ মানুষের কল্যাণে কাজ করি। কোনো মানুষ দরিদ্র থাকবে না। নানান ভাবে তাদের এগিয়ে নেওয়ার কাজ করছি। প্রতিবন্ধী, বয়স্ক, স্বামী পরিত্যক্তাদের ভাতা দিচ্ছি। তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের স্বীকৃতি ও তাদের ভাতাও দিচ্ছি। ৫ কোটি মানুষের পারিবারিক কার্ড করে দিয়েছি। এটা দিয়ে স্বল্পমূল্যে প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে পারে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির জনক আদর্শ নিয়ে সংবিধানে বর্ণিত পন্থায় আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা, পৌর ও সিটি করপোরেশন আইন করে আমরা এগুলো নিয়ে যাচ্ছি। ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি, ঘরে বসে চাকরির আবেদনসহ যাবতীয় সেবার কাজ করতে পারে মানুষ। অনলাইনে কেনা-বেচাসহ সব কিছু হচ্ছে। আমরা তরুণ-তরুণীদের ফ্রিল্যান্সিং শিখাচ্ছি। সে এই ট্রেনিং নিয়ে বিদেশেও কাজ করার সুযোগ পাচ্ছে। বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশের মর্যাদা দিয়ে গেছেন জাতির পিতা। কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যায়ের মানুষকে ক্ষমতায়ন করে দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছেন। তখনই এল আঘাত। জাতির পিতাকে সপরিবারে শাহাদতবরণ করতে হয়। হারিয়েছিলাম বাবা-মা ভাইবোন। পেয়েছি বিশাল জনগোষ্ঠী। বাংলাদেশের মানুষই আমার আপনজন। তারাই আমার সব শক্তি।’

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, রাজশাহীর মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, নারায়ণগঞ্জের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী, খুলনার মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, সিলেটের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীসহ বিভিন্ন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্য, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা। স্বাগত বক্তব্য দেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মোহাম্মদ ইবরাহীম।

খুলনা গেজেট/ টিএ




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!