বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য এখন হাস্যকর ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। উনার পরিহাস করার কোনো অধিকার নেই। দেশের মানুষ প্রতিনিয়ত, প্রতিমুহূর্তে হিমশিম খাচ্ছে, ভোগান্তির শিকার হচ্ছে, জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে, সেই সময়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বেহেশতে যাওয়ার কথা বলেছেন।’
বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আজ শনিবার দুপুরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
দেশে বিদ্যুৎ খাতে বিশেষ দায়মুক্তি আইন তৈরি করে দুর্নীতি ও লুটপাটের জন্য সংশ্লিষ্ট আমলা-প্রকৌশলীদের দায়মুক্তি দেওয়া হয়েছে এমন অভিযোগ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘সময় যদি কখনও আসে, আমরা এর বিচার করব।’
বিএনপি নির্বাচিত হয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় গেলে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সেক্টরের উন্নয়নে পদক্ষেপ নেবে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইনসহ এ সংক্রান্ত সব কালাকানুন বাতিল করা হবে। রেন্টাল, কুইক রেন্টাল কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি নবায়ন বন্ধ করা হবে, স্বচ্ছ প্রতিযোগিতামূলক আন্তর্জাতিক টেন্ডারের মাধ্যমে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ ও অন্যান্য কাজ সম্পাদন করা হবে। চাহিদা অনুযায়ী পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপনের জন্য মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেওয়া হবে। উৎপাদন ও চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও বিতরণ লাইন অতিদ্রুত স্থাপন করা হবে, বাপেক্স ও অন্যান্য সরকারি সংস্থার মাধ্যমে দেশীয় খনিজ ও গ্যাস উত্তোলনের জন্য যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে, একই সঙ্গে দেশীয় প্রকৌশলী ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ করে তুলতে উপযুক্ত উদ্যোগ নেওয়া হবে, বঙ্গোপসাগরে সম্ভাবনাময় গ্যাস, পেট্রোলিয়াম ও অন্যান্য খনিজ পদার্থ উত্তোলনে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সব দুর্নীতি-অনিয়মের সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে, দেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতকে টেকসই ও নিরাপদ করতে জীবাশ্ম জ্বালানি-নির্ভরতা কমিয়ে ক্রমান্বয়ে মোট উৎপাদনের ৫০ শতাংশ নবায়নযোগ্য শক্তি নির্ভর জ্বালানিনীতি গ্রহণ করা হবে, বিশেষ জোর দেওয়া হবে জলবিদ্যুৎ উৎপাদনে।’
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘বেস লোড পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপনের মাধ্যমে স্বল্প ব্যয়ে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ উৎপাদন নিশ্চিত করা হবে, বৃহৎ বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলোকে প্রয়োজনীয় মেরামত ও ওভারহোলিংয়ের মাধ্যমে উৎপাদন-উপযোগী করে গড়ে তোলা হবে। দেশনেত্রী খালেদা জিয়া কর্তৃক বিএনপির ভিশন-২০৩০-এ বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সেক্টর উন্নয়নে ঘোষিত পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়ন করা হবে।’
বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘বর্তমান কর্তৃত্ববাদী জবাবদিহিহীন সরকারের গুম-খুন অমানুষিক অত্যাচার-অনাচার, নিশিরাতের ভোট-ডাকাতি ও রাষ্ট্রীয় কোষাগার লোপাট, সর্বগ্রাসী দুর্নীতি এবং সাগর চুরি ও হরিলুটের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য জনগণের উচিত এখনই সোচ্চার হওয়া।’
খুলনা গেজেট / আ হ আ