দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার পত্রিকা পাঠক ও সংবাদকর্মীদের জন্য সুখবর নিয়ে আসছে পদ্মা সেতু। ঘুম থেকে উঠে পাঠকদের আর অপেক্ষায় থাকতে হবে না পত্রিকার। ২৫ জুনের পরে পাঠকদের সকাল হওয়ার সাথে সাথে বাড়িতে পৌছে যাবে জাতীয় সব পত্রিকা। দীর্ঘদিনের বিড়ম্বনা থেকে রক্ষা পাবেন পাঠকরা। সন্ধ্যার পরে ঘটে যাওয়া কোন সংবাদের আপডেট পাঠাতেও কোনো বিড়ম্বনায় পড়তে হবে না গনমাধ্যমকর্মীদের। পাঠকরাও ঘুম ভাঙ্গার আগে হাতে পাবেন প্রিয় পত্রিকা। চায়ের কাপে চুমুকের সাথে পত্রিকা পরে খবরের তৃষ্ণা মেটাতে পারবেন পাঠকরা এমনই মনে করছেন বাগেরহাটবাসী।
সোহেল রানা নামের একজন পাঠক জানান, অনেক সময় সকাল গড়িয়ে দুপুর হলেও আমরা পত্রিকা পেতাম না। কিন্তু পদ্মা সেতু হয়ে গেলে চিরতরে সেদিন হারিয়ে যাবে। খুব দ্রুতই আমরা সব খবর জানতে পারব।
হকার মামুন বলেন, ঝড়-বৃষ্টি, জলোচ্ছ্বাস, কুয়াশা, স্রোত বিভিন্ন কারনে পত্রিকা আসতে অনেক দেরি হত। আমরা এজেন্টদের কাছে তীর্থের কাকের মত বসে থাকতাম কখন পত্রিকা আসে। পাঠকরা ফোনের পরে ফোন দিত। অবশেষে সেই চিরায়ত দিনের অবসান হচ্ছে। এখন আর অপেক্ষা করতে হবে না কোনো পাঠককে। ঘুম দিয়ে উঠেই তারা পড়তে পারবেন পত্রিকা।
বাগেরহাট সদর উপজেলার বৈটপুর এলাকার এনামুল আহমেদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকা অবস্থায়ই পত্রিকা পড়ার অভ্যাস। তাই চাকুরীর পরেও বাসায় পত্রিকা রাখি। কিন্তু কষ্টের বিষয় হচ্ছে, সকালের পত্রিকা আমরা পাই দুপুরে, কোন কোন দিন আবার বিকেলেও পত্রিকা দেয় হকার। কারণ জানতে চাইলে ফেরীর অজুহাত দেওয়া হয়। আশাকরি পদ্মাসেতু চালু হলে ঘুম থেকে উঠেই পত্রিকা দেখতে পাব।
বাগেরহাটের পত্রিকা পরিবেশক মোকাদ্দেস আলী জানান, ঢাকা থেকে প্রকাশিত প্রায় সকল পত্রিকা আমরা এনে হকারদের মাধ্যমে বিক্রি করে থাকি। শীতকালে কুয়াশা ও বিভিন্ন সময় দূর্যোগের কারনে পত্রিকা বিকেলে এসে পৌছাত। বিলম্বে আসায় সঠিক সময় পত্রিকা পাঠকদের কাছে পৌছানো সম্ভব হত না। সকালের পত্রিকা অনেক সময় বিকেল বা সন্ধায় দিতে হত। পদ্মা সেতু হলে এই বিড়ম্বনা থেকে আমরা মুক্তি পাব।
বাগেরহাটের সিনিয়র সাংবাদিক এ্যাড. শাহ আলম টুকু বলেন, একটা সময় ছিল পত্রিকা হাতে পেতাম একদিন পরে। বর্তমানে ফেরী বিড়ম্বনার কারণে প্রায়শই দুপুরের দিকে পাই পত্রিকা । দুপুরে পত্রিকা হাতে পাওয়ার কারণে অনেকে পত্রিকা কিনতে চায় না। পদ্মা সেতু চালু ফেরী বিড়ম্বনা থাকবে না, ঘুম থেকে ওঠার সাথে সাথে পাঠকের বাসায় পত্রিকা পৌছে যাবে। যার ফলে পত্রিকার পাঠকও বাড়বে বলে দাবি করেন তিনি।