খুলনা, বাংলাদেশ | ২৮ আশ্বিন, ১৪৩১ | ১৩ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  দেশে ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৪ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৬৬০
  জুলাই গণহত্যার বিচারে চলতি সপ্তাহে ট্রাইব্যুনালে বিচারক নিয়োগ, শেখ হাসিনাসহ পলাতক আসামিদের বিরূদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা চাওয়া হবে, তাদের ফেরাতে ইন্টারপোলের সহায়তাও নেয়া হবে : চিফ প্রসিকিউটর
খুলনা-সাতক্ষীরার ৭০ ভাগ যাত্রী কমেছে

পদ্মা সেতু : যশোরে যাত্রী সংকটে বিমানের ৬ ফ্লাইট বন্ধ

জাহিদ আহমেদ লিটন, যশোর

যশোরে ভয়াবহ যাত্রী সংকটে পড়েছে বেসরকারি বিমান সংস্থাগুলো। এ পরিস্থিতি তারা কোনভাবেই সামাল দিতে পারছেন না। সড়ক পথে পদ্মা সেতুর সুবিধায় ইতিমধ্যে যশোর-ঢাকা রুটে চলাচলরত ৬টি ফ্লাইট বন্ধ করে দিয়েছে দুটি এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ। এছাড়া একটি এয়ারলাইন্স বরিশাল রুটে তাদের বিমান চলাচল বন্ধ করেছে। ভাড়া কমিয়েও এ পরিস্থিতির উত্তরণ করতে পারছেন না তারা। বর্তমানে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে তিনটি এয়ারলাইন্সের সাতটি বিমান যশোর রুটে চলাচল করছে বলে সূত্রটি জানিয়েছে।

সূত্র জানায়, যশোর-ঢাকা রুটে চলতি বছরের শুরু থেকে গত জুন মাস পর্যন্ত তিনটি এয়ারলাইন্সের ১৩টি ফ্লাইট চলাচল করতো। এগুলো হলো, বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, ইউএস বাংলা ও নোভো এয়ারলাইন্স। এসময়ে যশোর বিমানবন্দর ঢাকামুখি ও ফেরত যাত্রীদের পদচারণায় মুখরিত ছিল। পরিস্থিতি এমন ছিল যে, বিমানবন্দরের পরিবেশ হয়ে উঠেছিল বাসস্ট্যান্ডের ন্যায়। তারপরও বিমানের টিকিট ঠিকমত পাওয়া যেতো না। দ্বিগুন দাম দিয়ে মানুষকে ঢাকাগামী বিমানের টিকিট সংগ্রহ করে চলাচল করতে হতো।

গত ২৫ জুন দেশের সর্ববৃহৎ পদ্মা সেতু চালু হবার পর সে পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়েছে। খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলার ৭০ ভাগ মানুষ আকাশ পথে ঢাকায় যাতায়াত বর্জন করেছে। তারা সড়ক পথে পদ্মা সেতু হয়ে সাড়ে তিন ঘন্টায় ঢাকায় পৌছে যাবার কারণে বিমানমুখি হচ্ছেন না। যশোর ও ঝিনাইদহের ৩০ ভাগ মানুষও ঢাকায় যাতায়াতে সড়ক পথ ব্যবহার করছেন। ফেরিঘাটে জ্যাম না থাকা ও পদ্মা সেতু দিয়ে চলার মজা নেবার কারণে তারা বিমানে উঠছেন না। এ কারণে ভয়াবহ যাত্রী সংকটে পড়েছে যশোর থেকে চলাচলরত এয়ারলাইন্সগুলো।

সূত্র জানায়, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আগে যশোর থেকে ১৩টি ফ্লাইট চলাচল করলেও গত দু’মাসে এ পরিস্থিতি সম্পূর্ণ উল্টে গেছে। বর্তমানে দুটি এয়ারলাইন্সের ৬টি ফ্লাইট চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এরমধ্যে ইউএস বাংলার ৬টি ফ্লাইটের মধ্যে চলাচল করছে তিনটি ও নোভো এয়ারলাইন্সের ৫টির মধ্যে চলাচল করছে দুটি।

এছাড়া বাংলাদেশ বিমানের দুটি ফ্লাইট চলাচল অব্যাহত রয়েছে। এ হিসেবে বর্তমানে প্রতিদিন তিনটি এয়ারলাইন্সে ৭টি ফ্লাইট যশোর-ঢাকা রুটে চলাচল করছে। ৬টি ফ্লাইট কমিয়ে দিলেও তারা পর্যাপ্ত যাত্রী পাচ্ছে না। প্রতিদিনই বেশিরভাগ ফ্লাইটে অর্ধেক বা তারও কম ২০/২২ জন যাত্রী নিয়ে যশোর থেকে ঢাকার পথে উড়াল দিচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রটি জানিয়েছে।

এছাড়া ঢাকা-বরিশাল রুটে এয়ারলাইন্সগুলোর আরো ভয়াবহ অবস্থা বিরাজ করছে। ওই রুটে নোভো এয়ারলাইন্সের একটি মাত্র ফ্লাইট চলাচল করলেও যাত্রী সংকটে পড়ে সেটি গত জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময়ে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ইউএস বাংলার দুটি ফ্লাইট নির্ধারিত থাকলেও বর্তমানে বরিশাল রুটে চলাচল করছে একটি মাত্র ফ্লাইট। বরিশালের যাত্রীরা এখন আর বিমানে না উঠে সড়ক পথে ঢাকায় যাতায়াত করছেন বলে বিমান সংশ্লিষ্ট সূত্রটি জানিয়েছে।

এদিকে, ভাড়া কমিয়ে নানা রকম অফার দিয়ে যশোর-ঢাকা রুটে যাত্রী ধরে রাখার চেষ্টা করলে এয়ারলাইন্সগুলো। সোমবার নোভো এয়ারলাইন্স ঢাকা রুটের ভাড়া কমিয়ে যাত্রী প্রতি তিন হাজার ১৯৯ টাকা নির্ধারণ করে। যা আগে ছিল চার হাজার ৫শ’ টাকা। একইভাবে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স আগস্ট মাসে নতুন ভাড়া নির্ধারণ করে তিন হাজার ৭শ’ টাকা। যা আগে ছিল চার হাজার ৫শ’ টাকা। এছাড়া বাংলাদেশ বিমানের ভাড়া গত জুলাই মাসে নির্ধারণ ছিল তিন হাজার ২শ’ টাকা। বর্তমানে এ ভাড়াতেই তাদের দুটি ফ্লাইট যশোর রুটে চলাচল করছে।

এ ব্যাপারে নোভো এয়ারলাইন্সের হেড অব মার্কেটিং এন্ড সেলস বাহাউল ইসলাম বলেন, যশোর-ঢাকা রুটে তাদের এয়ারলাইন্সে আগে ৫টি ফ্লাইট ছিল, কিন্তু বর্তমানে দুটি চলাচল করছে। পদ্মা সেতুর প্রভাবের কারণে তাদের যাত্রী সংখ্যা কমেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

বিষয়টি নিয়ে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের মিডিয়া কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম বলেন, পদ্মা সেতু চালু হবার পর যশোরঞ্চলের মানুষ সড়ক পথেই বেশি ঢাকায় যাতায়াত করছে। এ কারণে তাদের ৬টি ফ্লাইট কমিয়ে তিনটি করা হয়েছে। আগের তুলনায় তাদের যাত্রী সংখ্যা ব্যাপকহারে কমেছে।

বাংলাদেশ বিমান যশোরের কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বলেন, পদ্মা সেতুর প্রভাব তাদের এয়ারলাইন্সে খুব একটা পড়েনি। তাদের দুটি ফ্লাইটই আগের মতই চলাচল করছে। সকাল সাড়ে ৯টায় ও সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় তাদের ফ্লাইট দুটি যশোর থেকে ছেড়ে যাচ্ছে। যাত্রী কিছুটা কম হলেও এটা অফ সিজন হওয়ায় কিছুটা সমস্যা হচ্ছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

খুলনা গেজেট/ এইচ




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!